ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

লুকিয়ে অন্যের এসএমএস কি পড়া যাবে?

প্রকাশনার সময়: ৩০ ডিসেম্বর ২০২২, ১৮:৪৮

প্রযুক্তির এই উৎকর্ষের যুগে মানুষ অনেক সময় ডুবে থাকে নেট দুনিয়ায়। নেটকেন্দ্রিক চলে জীবনযাপন। মা-বাবার সঙ্গে যোগাযোগ থেকে শুরু করে স্ত্রী, সন্তান, বন্ধু-বান্ধব কিংবা অফিসের কাজও সারেন ইন্টারনেটের কল্যাণে। যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে সবার কাছে ম্যাসেঞ্জার, ওয়াটসাপ, ইমু, এসএমএস ও ইমেইলের কদর বেশি। এখানে মানুষের ব্যক্তিগত বার্তা থেকে শুরু করে নানাবিধ বার্তা আসে। এই বার্তাগুলো ব্যক্তির অনুমতি ছাড়া অন্যরা লুকিয়ে পড়তে পারবে কি না কিংবা চ্যাট করার সময় উঁকি দেওয়া যাবে কি না; অনেকের কাছে এ ব্যাপারে শরিয়তের বিধান স্পষ্ট নয়। চলুন, জেনে নিই লুকিয়ে অন্যের এসএমএস বা বার্তা পড়া যাবে কি না?

ঘরে উঁকি দেওয়া নিষেধ

অন্যের দরজা-জানালায় উঁকি দেওয়া কিংবা অনুমতি ছাড়া কারো ঘরের ভেতরে দেখা— অমার্জনীয় অপরাধ। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি কারও ঘরে বিনা অনুমতিতে উঁকি দেবে, তার জন্য ওই ব্যক্তির চোখ ফুঁড়ে দেওয়া বৈধ। (মুসলিম, হাদিস ২১৫৮)

অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, যদি কেউ তোমার ঘরে তোমার অনুমতি ছাড়া উঁকি দেয়— আর তুমি পাথর মেরে তার চোখ ফুটো করে দাও, তাতে তোমার কোনো গুনাহ হবে না। (বুখারি, হাদিস : ৬৮৮৮)

অনুমতি ছাড়া অন্যের জিনিস ব্যবহার

আপনি হয়তো অফিসে, বাসায়, ছাত্রাবাসে কিংবা পরিচিত মহলে মালিকের অনুমতি ছাড়া তার জিনিস ব্যবহার করছেন, একজনের বক্স থেকে অনুমতি ছাড়া টিস্যু নিয়ে নিচ্ছেন, আপনি হয়তো কারও গামছায় হাত মুছতে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করছেন না, রুমমেটের লোশন, তেল, শ্যাম্বু বা সাবান ব্যবহারে অনুমতি নিচ্ছেন না; এই কাজ আপনার জন্য অবৈধ। নবীজি (সা.) কারও অনুমতি ছাড়া তার জিনিস ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। নবী (সা.) বলেন, ‘কোনো লোক এমন কাপড়ে হাত মোছবে না, যা তাকে দেওয়া হয়নি।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮২৭)

কষ্ট দেওয়া হারাম

অন্যের জিনিস ব্যবহার করে তাকে কষ্ট দেওয়া হারাম। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলিমের সম্পদ আত্মসাৎ করার জন্য যে ব্যক্তি মিথ্যা কসম করবে, আল্লাহর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ ঘটবে, এমন অবস্থায় যে আল্লাহ তার ওপর রাগান্বিত থাকবেন। এ কথারই সত্যতায় আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করেন, নিশ্চয় যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছ মূল্যে বিক্রয় করে, এরা আখেরাতের নেয়ামতের কোনো অংশই পাবে না।’ (বুখারি : ৬৬৫৯)

ইসলামি শরিয়তের বিধান মতে, অনুমতি ছাড়া কারও জিনিস ব্যবহার থেকে শুরু করে কারও ঘরে উঁকি দেওয়া নিষেধ। তেমনি নিষেধ অন্যের এসএমএস লুকিয়ে পড়া। লুকিয়ে অন্যের এসএমএস পড়া হারাম। অন্যের এসএমএস লুকিয়ে পড়া মানে তার গোপনিয়তা নষ্ট করে। আর ইসলাম কারও প্রাইভেসি নষ্ট করতে নিরুৎসাহিত করেছে। বিনা কারণে কারও প্রাইভেসি নষ্ট করা গোনাহ।

নয়া শতাব্দী/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ