বন্যা, খরা, ভারি বৃষ্টিপাত— এরকম কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরই সবজির বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হওয়ার কথা। দেশে এরকম কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের খবর আমরা পাইনি। তারপরও সবজির বাজারে অস্থিরতা চলছে। কোনো কোনো সবজি দ্রুত পচনশীল হলেও পেঁপে সেই পর্যায়ে পড়ে না। অথচ খুচরা বাজারে এক দিনের ব্যবধানে পেঁপের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। এ একটি তথ্য থেকেই বোঝা যাচ্ছে, সবজির বাজারেও অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি চলছে। বস্তুত বাজারে প্রতিটি নিত্যপণ্যের ক্ষেত্রেই নানারকম কারসাজি চলছে।
গত কয়েক বছর ধরেই লক্ষ করা গেছে, রমজান শুরুর কয়েক মাস আগে থেকেই বাজারে নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। রমজানের প্রাক্কালে প্রতি বছরের মতো এবারো বাজারে পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করা গেছে। ইতোমধ্যে রাজধানীর খুচরা বাজারে বিভিন্ন পণ্য বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, অসাধু সিন্ডিকেট গত দুই মাসে ধাপে ধাপে এসব পণ্যের দাম বাড়িয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। সমপ্রতি ভোজ্যতেল নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজির বিষয়টি বিশেষভাবে আলোচনায় এলেও প্রায় সব পণ্য নিয়েই কারসাজি চলছে।
চালের উৎপাদন, বিপণন, মজুত ও আমদানি— সবকিছুতেই এবার রেকর্ড হয়েছে। ফলে অন্তত জুন পর্যন্ত চাহিদার তুলনায় চাল উদ্বৃত্ত থাকবে। চলতি অর্থবছরে চাহিদার বিপরীতে সরবরাহের লাইনে আছে উদ্বৃত্ত চাল। উল্লেখ্য, আগে কখনই এত বেশি চাল উদ্বৃত্ত হয়নি। প্রশ্ন হলো, উদ্বৃত্ত থাকা সত্ত্বেও চালের দাম ক্রমাগত বাড়ছে কেন? প্রতি বছর ভরা মৌসুমে চালের দাম কমলেও এবার কমেনি, বরং বেড়েছে। স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, বাজারে বড় ধরনের কারসাজি চলছে। এ অবস্থায় সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া না হলে ভোক্তাদের দুর্ভোগ কমবে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে স্বল্প ও সীমিত আয়ের মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে অনেক বাড়িওয়ালা কয়েক মাস পরপরই ভাড়া বাড়ানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এত রকম চাপ অব্যাহত থাকলে স্বল্প ও সীমিত আয়ের মানুষ বাঁচবে কী করে?
এসএম হক
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ