শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১

ইসলামি দৃষ্টিকোণে ভূমিকম্প

প্রকাশনার সময়: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:৩৭ | আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:৪৪

ভূমিকম্প, আল্লাহ তায়ালার মহাশক্তির নিদর্শনসমূহের মধ্যে অন্যতম। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে প্রতিনিয়ত ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার সংবাদ পরিলক্ষিত হয়। কোথাও বেশি মাত্রায়, আবার কোথাও বা কম মাত্রায়। বিজ্ঞানীদের মতে, ‘ভূপৃষ্ঠের অভ্যন্তরে যখন একটি শিলা অন্য একটি শিলার উপরে উঠে আসে, তখন ভূমিকম্প হয়।’ তবে এই ভূমিকম্পের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সতর্কবার্তা প্রেরণ করেন। যেন তারা পাপকর্ম থেকে বিরত থাকে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি ভীতি প্রদর্শনের জন্যই (তাদের কাছে আজাবের) নিদর্শন প্রেরণ করি’। (সুরা বনি ইসরাইল: ৫৯)।

এমনকি কোনো জনপদে পাপাচারকার্য বৃদ্ধিতে আল্লাহর পক্ষ হতে মানবজাতির প্রতি সতর্কবার্তা কিংবা ইহকালীন শাস্তি প্রদান, যে কোনো মাধ্যমে আসতে পারে। যার অন্যতম উদাহরণ হচ্ছে ভূমিকম্প। তাইতো আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের উপর থেকে এবং তোমাদের পায়ের তলদেশ থেকে আজাব (শাস্তি) পাঠাতে সক্ষম।’ (সুরা আনআম: ৬৫)

শুধু তাই নয়, ভূমিকম্প সম্পর্কে সুরা যিলযাল নামে একটি সুরাও অবতীর্ণ হয়েছে। আর ‘যিলযাল’ শব্দের অর্থই হচ্ছে ভূমিকম্প। এমনকি, ভূমিকম্প কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার পূর্বকার নির্দেশনাবলির অন্যতম। অর্থাৎ কিয়ামতের পূর্বে পৃথিবীতে বেশি বেশি ভূমিকম্প সংঘটিত হবে। এ বিষয়ে একাধিক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। যেমন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কিয়ামাত সংঘটিত হবে না, যে পর্যন্ত না ইলম উঠিয়ে নেয়া হবে, অধিক পরিমাণে ভূমিকম্প হবে, সময় সংকুচিত হয়ে আসবে, ফিতনা প্রকাশ পাবে এবং হারাজ তথা খুন-খারাবি বৃদ্ধি পাবে। আর তোমাদের ধন-সম্পদ এত বৃদ্ধি পাবে যে, উপচে পড়বে। (সহিহ বুখারি: ১০৩৬)

তাই পৃথিবীতে ভূমিকম্প বেশি বেশি সংঘটিত হওয়ার মাধ্যমে আমাদের এই বার্তা প্রদান করা হচ্ছে যে, ‘কিয়ামত অতি সন্নিকটে।’ কেননা নবীজি (সা.) বলেন, ‘যখন গনিমতের মাল (যুদ্ধলব্ধ সম্পদ) ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত হবে, আমানতের সম্পদ লুট হয়ে যাবে,

জাকাতকে দেখা হবে জরিমানা হিসেবে, ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া বিদ্যা অর্জন করা হবে, একজন পুরুষ তার স্ত্রীর বাধ্যগত হয়ে মায়ের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করবে, বন্ধুকে কাছে টেনে নেবে আর পিতাকে দূরে সরিয়ে দেবে, মসজিদে উচ্চস্বরে শোরগোল (কথাবার্তা) হবে, যখন সবচেয়ে দুর্বল ও নিকৃষ্ট ব্যক্তি সমাজের শাসকরূপে আবির্ভূত হবে। সে সময় তোমরা অপেক্ষা করো অগ্নিবায়ু, ভূমিধস, ভূমিকম্প, চেহারা বিকৃতির (লিঙ্গ পরিবর্তন), পাথর বৃষ্টির এবং সুতো ছেঁড়া (তাসবিহ) দানার ন্যায় একটির পর একটি নিদর্শনের জন্য’। (জামে আত-তিরমিজি: ২২২১)

তাই চারপাশে সংঘটিত ভূমিকম্পের মাধ্যমে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত। যার মাঝে রয়েছে রবের সতর্কবার্তা। তাই সমাজ থেকে যাবতীয় পাপাচার, অবিচার, নির্যাতনসহ প্রভৃতি কর্ম থেকে বিরত থাকতে সকলকে সতর্ক করা আবশ্যক।

মোহাম্মাদ হাসিব উল্লাহ (তরুণ গবেষক ও লেখক)

নয়াশতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ