দিন যত যাচ্ছে বাজার নিয়ন্ত্রণ ততই অস্বাভাবিক হচ্ছে। নানা অজুহাত দেখিয়ে দ্রব্যমূল্য মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে অনেকটাই বেড়েছে। কিছু অসাধু চক্রের হাতে জিম্মি ভোক্তাগণ। অথচ এখন শীত মৌসুম। যে মৌসুমে মিলছে বহু তরতাজা শাকসবজি। তবুও কাঁচামালের মূল্য অভাবনীয় ঊর্ধ্বগতি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন স্বল্প আয়ের সাধারণ মানুষগুলো।
সরকার কর্তৃক দ্রব্যমূল্য নির্ধারণ করে দেয়া সত্ত্বেও অসাধু ব্যবসায়ীচক্র দিনে দিনে আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের দাম বাড়াচ্ছে। সবকিছুই যেন লাগামহীন। যে যার মতো করে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে কাঁচামাল। অথচ দেড় মাস আগে সরকার আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। মাসে একবার বিভিন্ন বাজারে প্রশাসন কর্তৃক মনিটরিং হলেও বাকি দিনগুলো নিজেদের সুবিধামতো ক্রেতাদের কাছ থেকে ঊর্ধ্বমূল্যে দ্রব্য বিক্রি করছে। অধিক দামে বিক্রি করায় কিছু ব্যবসায়ীদের জরিমানা করলেও কিছুক্ষণ পর আবারও জরিমানা দেয়ার অজুহাতে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে নিচ্ছে। বর্তমানে প্রতিকেজি আলু ৫৫-৬০ টাকা এবং পেঁয়াজের দাম ১৩০-১৪০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল আলু ৪৫-৫০ টাকা এবং পেঁয়াজ ছিল ৯০-১০০ টাকা। যা বেঁধে দেয়া মূল্যের প্রায় দ্বিগুণ।
ব্যবসায়ীদের কাছে দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির কথা জানতে চাইলে তারা নানা অজুহাত তুলে ব্যাখ্যা করেন। সাম্প্রতিক হরতাল, অবরোধ, সংকট ও আড়তদারের উচ্চমূল্যে ক্রয়ের কথা ব্যক্ত করেন।
সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্য হলো- প্রতিকেজি আলু ৩৫ টাকা ও প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা। ইতোমধ্যেই জেলা প্রশাসক বিভিন্ন মাধ্যমে বাজারদ্রব্য সরকারের ঘোষিত মূল্য অনুযায়ী ক্রয়-বিক্রি করার জন্য গণমাধ্যমে প্রচার করছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ মাসে ১-২ বার বাজার মনিটরিং করছেন। কিন্তু কোনোভাবেই বাজারমূল্য স্বাভাবিক হচ্ছে না। বাধ্য হয়েই ভোক্তাগণ অধিক দামে জিনিস ক্রয় করছেন। সরকারের ও প্রশাসনের এমন বার্তা কোনভাবেই মানছেন না অসাধু চক্র। ক্রেতাদের অভিযোগ হলো- পণ্যের দাম বেড়ে গেলে তদারকি সংস্থাগুলো কোনোভাবেই পণ্যের দাম কমাতে পারে না। কয়েকদিন ধরে বাজার দাম বেড়ে গেছে কিন্তু তদারকি সংস্থার কাউকে বেশি একটা দেখা যাচ্ছে না।
কোনো একটি চক্রান্তকারী মহল বাজারদ্রব্য বৃদ্ধি করিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তাই প্রয়োজন প্রশাসনের তদারকি বাড়ানো এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা। ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি না হয়ে প্রয়োজন প্রতিবাদ করা। অধিক মূল্যে জিনিস ক্রয় না করে ব্যবসায়ীদের মাঝে নির্ধারিত মূল্যের কথা উপস্থাপন করা। প্রশাসনের মনিটরিং জোরদার ও জনসচেতনতা বাড়ালেই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
জি.বি.এম রুবেল আহম্মেদ
কলামিস্ট ও সংস্কৃতিকর্মী
মাদারগঞ্জ, জামালপুরনয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ