ঢাকা, রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬
ভষ্ম কৃষি মার্কেট

ব্যবসায়ীদের সচেতন হতে হবে

প্রকাশনার সময়: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:১৭

নিজ এবং পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তার জন্যই মানুষ চাকরি বা ব্যবসা করে। কিন্তু নিজ জানমালের নিরাপত্তার বিষয়ে অধিকাংশ ব্যবসায়ী উদাসীন। যে কারণে কোথাও কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বোঝা যায় তারা শুধু আর্থিক লাভালাভেই গুরুত্ব দিয়েছেন। অন্য কোনো কিছুতে নয়। এর প্রমাণ আরও একবার পাওয়া গেল রাজধানীর মোহাম্মদপুর নতুন বাজারে (কৃষি মার্কেট) আগুন লাগার ঘটনায়। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ওই মার্কেটে কোনো ফায়ার সেফটি ছিল না।

প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিংয়ের কোনো ব্যবস্থাই ছিল না। ফুটপাত ও সড়কে দোকান থাকায় ও মানুষের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়েছে। পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও ছিল না। সবসময় অভিযোগ ওঠে যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যথাসময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান না। কিন্তু কৃষি মার্কেটে আগুণ লাগার খবরে তারা মাত্র ৯ মিনিটে সেখানে পৌঁছান। অথচ মার্কেটের দোকানের সামনে ছোট দোকান এবং উৎসুক মানুষের ভিড় তাদের কাজে বিঘ্ন্ন ঘটায়। যদিও তারা বিজিবি, পুলিশ, র‍্যাব, সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সহযোগিতায় প্রায় ৫ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। তবে কথা হলো যখন কোনো মার্কেট গড়ে তোলা হয় তখন শুধু নির্মিত দোকান গুলোকেই ভাড়া বা বিক্রি করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ছোট্ট দোকান কোথা থেকে আসে? রাজধানীর ছোট বড় প্রায় সব মার্কেটে এই চিত্র দেখা যায়। এতে যারা কেনাকাটা করতে যান তারা যেমন চলাচলে স্বস্তি খুঁজে পান না। একইভাবে অগ্নিকাণ্ডের মতো ভয়াবহ ঘটনায় আগুন নিয়ন্ত্রণেও বেগ পেতে হয়। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে মার্কেটটিতে এর আগে বারবার নোটিশ দেয়া হয়েছে এবং বিভিন্নভাবে গণসংযোগ করা হয়েছে। তারা যেভাবে সচেতনতার প্রোগ্রাম করেছে সেভাবে মার্কেট কর্তৃপক্ষ সাড়া দেয়নি-এমন অভিযোগ করেছেন। ফায়ার সার্ভিস বলছে, এই মার্কেটটা কিছুটা বঙ্গবাজার টাইপের।

এখানে ভিতরে অনেক সাবওয়ে ছিল ছোট ছোট। কিন্তু ছোট ছোট এবং ভিতরে যতগুলো রাস্তা এবং বাইরের যে ছোট ছোট রাস্তা পুরোটাই বিভিন্ন মালামাল দিয়ে গাদাগাদি করে রাস্তাটা বন্ধ করা ছিল। এবং পুরো মার্কেটটাই গেট দিয়ে আটকানো ছিল। মার্কেটের নাইট গার্ডদের খুঁজে না পাওয়ায় ফায়ার ফাইটারদের প্রবেশ করতে বেগ পেতে হয়েছে। তালা ভেঙে এবং কলাপসিবল গেট ভেঙে তাদেরকে ভিতরে গিয়ে তারপর আগুন নির্বাপণের কাজ করতে হয়েছে। এ মার্কেটের বাইরেও বিভিন্নভাবে রাস্তাগুলো দখল করা ছিল। এর আগেও আমরা লক্ষ করেছি মার্কেট কর্তৃপক্ষ বা যারা ব্যবসা করেন তারা ফায়ার সার্ভিসের সতর্কবার্তা অগ্রাহ্য করেন।

এর কারণ কী তা আমাদের বোধগম্য নয়। অথচ এই বেপরোয়াভাবেই পরে তাদের জন্য কাল হয়ে যায়। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মার্কেটের সামনের অংশে থাকা ৯টি ও ভিতরে ৯টি দোকানসহ ১৮টি স্বর্ণের দোকান পুড়ে গেছে। সতর্ক থাকলে এই বিপদ ও বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে পারতেন। আরেকটি বিষয় লক্ষণীয় যে, যে কোনো দুর্ঘটনায় উৎসুক জনতা এসে ভিড় জমায়।

তারা পরিস্থিতি সামাল দিতে কোনো অবদান রাখতে না পারলেও তাদের কারণে যারা কাজ করেন তারা সমস্যায় পড়েন। শত অনুরোধেও এদের নড়ানো যায় না। এই অবোধ জনতার দায়িত্বজ্ঞান কবে হবে কে জানে? শুধু কৃষি মার্কেট নয় রাজধানীজুড়ে অধিকাংশ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা অসচেতন। যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সতর্কবার্তা পেয়েও তারা গুরুত্ব দেন না। এই মনোভাব থেকে তাদের সরে আসতে হবে। বুঝতে হবে তাদের মঙ্গলের জন্যই সতর্ক করা হয়।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ