কোনো পেশায় পদোন্নতি কাজে গতি সঞ্চার করে। তবে তা অবশ্যই যোগ্যজনের হতে হবে। সরকারি কিংবা বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পদোন্নতি নিয়ে নানা কেচ্ছা কাহিনি জনসমক্ষে প্রকাশ হয়ে পড়ে এবং লোকে দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিষয়ে আস্থা খুঁজে পান না। এতে কাজের গতি কমে, প্রতিষ্ঠানের অর্জন ঝুঁকির কবলে পড়ে। কিন্তু বিষয়টি অনেক ক্ষেত্রেই অনেকের কাছে গুরুত্ব বহন করে না বলে প্রতীয়মান হয়। এরকমই একটি চিত্র দেখা যাচ্ছে, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) পদোন্নতি পরীক্ষা গ্রহণ বিষয়ক কর্মকাণ্ডে। তারা দফায় দফায় পদোন্নতির সাক্ষাৎকার পরীক্ষার সময় সূচির সার্কুলার জারি করেও নির্বাহী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতির পরীক্ষা নিচ্ছে না। কয়েক দফা সময়সূচি বাতিল করেও শেষ পর্যন্ত পরীক্ষাটি এখনও নেয়া হয়নি। ঝুলে আছে রহস্যের বেড়াজালে।
৭ সেপ্টেম্বর নয়া শতাব্দীতে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে প্রথম দফায় ১৬ মে, দ্বিতীয় দফায় ১৮ মে এবং তৃতীয় দফায় দ্বিতীয় দফার সময়সূচি বাতিল করে নতুন সময়সূচি ঘোষণা করে ২৫ জুলাই, এরপর ফের ২৯ আগস্ট পূর্ব নির্ধারিত সময়সূচি বাতিল করে আরও একটি সার্কুলার দেয় ডিপিডিসি। তবে সর্বশেষ সার্কুলারে পরবর্তী সময়সূচি ঘোষণা না করে পরীক্ষা আপাতত স্থগিত করা হলো বলে জানানো হয়েছে। এভাবে দফায় দফায় পদোন্নতির সাক্ষাৎকার নেয়ার সময়সূচির সার্কুলার জারি করেও রহস্যজনক কারণে তা নিচ্ছে না সংস্থাটি।
অথচ ডিপিডিসির নির্বাহী পরিচালক, প্রধান প্রকৌশলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এবং সহকারী প্রকৌশলীসহ সংস্থাটির দায়িত্বশীল পদের অধিকাংশই ভারপ্রাপ্ত বা অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চালানো হচ্ছে। অতিরিক্ত বা ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিয়ে কার্যক্রম চালানোর সুযোগে সংস্থাটিতে কর্মরত অনেকের কার্যক্রম নিয়ে রয়েছে নানা বিতর্ক। তবুও সংস্থায় কর্মরত বিশেষ একটি অসাধু চক্র আঁতাত করে কৌশলে পদোন্নতি প্রক্রিয়া এক প্রকার আটকে রেখেছিল। এরই মধ্যে প্রধান প্রকৌশলী পদে ডিপিডিসি গত ১৬ মে একটি সার্কুলার জারি করে পদোন্নতি প্রদান করে। একই দিনে অর্থাৎ ১৬ মে নির্বাহী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতির পরীক্ষা নিতে আরও একটি সার্কুলার জারি করে। এরপর আবার গত ২৪ জুলাই সংস্থাটি নির্বাহী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতির সাক্ষাৎকারের জন্য আবার সার্কুলার জারি করে। কিন্তু এরপরই রহস্যজনক কারণে ২৫ জুলাই অপর এক সার্কুলারের মাধ্যমে দ্বিতীয় দফায় দেয়া সার্কুলারের ঘোষিত সময়সূচি স্থগিত করে ফের নতুন সময়সূচি ঘোষণা করে। রহস্যজনকভাবে এ সার্কুলারটিও বাতিল করে ইন্টারভিউ আপাতত স্থগিত মর্মে ফের ২৯ আগস্ট অপর একটি সার্কুলার জারি করে। পদোন্নতির সাক্ষাৎকারের সময়সূচি এভাবে দফায় দফায় পরিবর্তনে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গুঞ্জন ভেসে বেড়াচ্ছে।
ডিপিডিসির দায়িত্বশীলরা তাদের কর্মকাণ্ডকে কেন বিতর্কিত করছেন তা আমাদের জানা নেই। তবে এভাবে চলতে থাকলে এক সময় প্রতিষ্ঠানের ভিতরেই অসন্তোষ সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা বাড়বে। অভিযোগ রয়েছে, ডিপিডিসির নির্বাহী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি দিতে সাক্ষাৎকারের জন্য এক সার্কুলার জারি করলেও নির্দিষ্ট কতিপয়কে পদোন্নতি দিতে দফায় দফায় সময়ক্ষেপণের এই কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। বর্ধিত করা এ সময়কালের মধ্যে নির্ধারিত ওইসব প্রার্থীদের নির্বাহী প্রকৌশলী পদে চাকরির বয়সসীমা পূর্ণ হবে এবং তাদের পদোন্নতি দিতেই এসব তালবাহানা করা হচ্ছে। এমনকি এ ব্যাপারে ইতোমধ্যেই বিশাল অংকের অর্থ লেনদেন বলে সূত্রের দাবি।
ডিপিডিসির পদোন্নতি নিয়ে যে নির্লজ্জ কর্মকাণ্ড এবং ধোঁয়াশা চলছে, তা সমর্থনযোগ্য নয়। কারা এটা করছে তা শনাক্ত করা এবং তাদের শাস্তির আওতায় আনা জরুরি বলে মনে করি।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ