বাঙালিদের নতুন বছরের সবচেয়ে বড় আমেজ পাওয়া যায় বাংলা নতুন বছরে। যদিও ইংরেজি নতুন বছরকেও বরণ করতে ভুলি না আমরা। কারণ, জীবনের প্রতিদিনের হিসেব রাখি তো আমরা ইংরেজি বছরকে মাথায় রেখেই। তাই নতুন আরেকটি বছরকে ঘিরে কত পরিকল্পনা, আশা ভরসার বিষয় জড়িয়ে থাকে। উৎসবপ্রিয় আমরা প্রতিটি উৎসবেই আনন্দ ভাগ করে থাকি প্রিয়জনদের সঙ্গে।
২০২১ শেষে চলে এলো নতুন আরেকটি বছর ২০২২। সফলতা-ব্যর্থতা, আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্না সব মিলিয়েই কাটে আমাদের প্রতিটা বছর। কিন্তু এই বছরটি যেন আমাদের প্রজন্মের সবচেয়ে বেদনাময় একটি বছর। করোনা মহামারিতে সারাবিশ্বে লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানি প্রায় অর্ধেক বছরই আমাদেরকে করে রেখেছে ঘরবন্দি। ২০২১ এর মাঝামাঝি সময় থেকে অবশ্য দেশে লকডাউন উঠে যাওয়ায় অনেকটা স্বাভাবিক জীবন যাপনে ফিরেছি আমরা।
এরই মধ্যে চলে এলো নতুন বছর ২০২২। সময় এবার নতুন বছরকে বরণ করে নেয়ার। করোনাকে বিদায় দিয়ে হয়ত এই ২০২২ হয়ে উঠবে আবার একটি স্বাভাবিক বছর। আমরা ফিরে পাবো স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। নতুন বছর মানেই নতুন উদ্দীপনা, নতুন প্রেরণা নিয়ে এগিয়ে চলা। পেছনে ফেলে আসা বছরের সকল গ্লানিকে দূরে ঠেলে নতুন উদ্যমে সাহস নিয়ে পথচলা। মনে রাখতে হবে পেছনে ফিরে তাকানো মানে এই নয় যে, পেছনে পড়ে থাকা।
এই পেছনে ফিরে তাকানোর মাধ্যমে আগামীতে সামনের দিকে চলার জন্য গতি পেতে সাহায্য করে। কম বেশি সবার কাছে দূরে থাকা, বিচ্ছিন্নতা, আতঙ্ক, মহামারির একটি বছর ছিল ২০২১। অনেকে জড়তা, ভয় ও শঙ্কাকে পাশে ঠেলে আবার জাগছে সব নতুন স্বাভাবিকতায়। এটা আমাদের স্বীকার করতে হবে যে, ২০২০ সাল থেকে বিশ্বের জন্য অনিবার্য হয়ে পড়েছিল ঝুঁকি শব্দটি। বৈশ্বিক ঝুঁকি আগেও ছিল। তবে করোনা নামের এক ভাইরাস যেন ঝুঁকি মোকাবিলা অপ্রতিরোধ্য করে তুলেছে। কত যে জটিলতায় আক্রান্ত বিশ্ব এখন।
কিন্তু কতদিন স্থায়ী হবে এই করোনা, তা নির্ণয় করা কঠিন। এর মধ্যে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির নেতৃত্বের পটবদল, তালেবানের ফিরে আসা, জলবায়ু পরিবর্তন, সাইবার হামলার মতো ঝুঁকি। আমাদের দেশে করোনার ভ্যাকসিন চলে এলেও ইতোমধ্যে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ চোখ রাঙাচ্ছে।
রয়েছে শ্রমবাজারের অস্থিরতা। অনেক শ্রমিকই স্থান পরিবর্তন করেছেন। প্রণোদনার সঠিক বণ্টনসহ নানা বিষয়ে সরকারের ওপর মানুষের আস্থা কমেছে, যেমন-জ্বালানির দাম বৃদ্ধি-এমন ঘটনাও দেখা গেছে। তবে ২০২০ সালের ন্যায় করোনার ফলে অর্থনীতির স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হয়নি ২০২১-এ। মানুষের চলাচল ব্যাহত হলেও কর্মীরা ছিল সক্রিয়। যদিও কাজের সুযোগ ও পরিধি অনেকটা সঙ্কুচিত হয়েছে।
অনেক মানুষকে বেকারত্বের যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অবস্থা সবচেয়ে করুণ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অনেকে ঝরে পড়েছে। ইতোমধ্যে সমাজে এর সুদূরপ্রসারী প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ২১ মানে অপ্রতিরোধ্য, দুর্বার, ভেঙে চুরে করে চুরমার। তারপরও করোনার ভয়াল থাবা থেকে রক্ষা পায়নি টগবগে ২০২১। তার মানে এই নয় যে, ২১ তার যৌবন হারিয়ে ফেলেছিল।
২০২১-এ আমারা পালন করেছি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। বিজয়ের ৫০ বছরে পালন করেছি আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী। আমাদের ডিজিপির হার তুলনামূলকভাবে ইতিবাচক দিকে ধাবিত হয়েছে। আবার অস্থিরতার ঘটনাও কম নয়। বাজারে দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধিতে ভোক্তার দুর্ভোগ, ধারাবাহিকভাবে বাস দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থীদের প্রাণ সংহার- যার ঘা এখনো শুকায়নি।
বছরশেষে সুগন্ধা নদীতে চলন্ত লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনাটিও মর্মান্তিক। সবটা মিলিয়ে রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ২০২১ বেশ ঘটনাবহুল ও তাৎপর্যমূলক একটি বছর ছিল আমাদের জাতীয় জীবনে। নানা ক্ষেত্রে অনেক চ্যালেঞ্জ এসেছিল, ঘটেছিল উত্থান-পতন।
তারপরও এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। আর এভাবে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলার ফলে বিশ্বের কাছে ঈর্ষণীয় হতে পেরেছি আমরা। ভালমন্দ, আনন্দ, বেদনার স্মৃতিগুলো আরো একবার রোমন্থন করা, একইভাবে জীবনের সব ধরনের নেতিবাচক বিষয়গুলোকে দূরে ঠেলে সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় নতুন করে পথ চলার প্রত্যয় ব্যক্ত করার সময় এখন বছরের দ্বারপ্রান্তে। আর মাত্র দু’চার দিন। তারপরই ২০২১ আমাদের জীবন থেকে শেষ। যার যার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, ভাবনায় বছরটি নানাভাবে মূল্যায়িত হতে পারে।
তবে সবার প্রত্যাশা, নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে যে যাত্রা শুরু করেছে, তা অব্যাহত থাকবে নতুন বছরেও। নানা বাধাবিপত্তি পেরিয়ে ২০২২ সালে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে তার গন্তব্যে। কয়েক দশকের মধ্যে গত বছর ছিল সর্বোচ্চ উষ্ণ বছর। চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা-সব দেশই মধ্য শতাব্দীর মধ্যে শূন্য কার্বন নিঃসরণ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সবচেয়ে বড় কথা, এখন যুক্তরাষ্ট্রও মাঠে রয়েছে।
দায়িত্ব নিয়ে বাইডেন ইতোমধ্যে প্যারিস চুক্তিতে যোগ দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্ত কেবল ট্রাম্পের জলবায়ু উপেক্ষার বিপরীত নয়, বিশ্ব সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন যুগের এক ধাপ। তবে সমস্যা হলো, শক্তি স্থানান্তরের বিষয়টি প্রতিযোগিতা ও সমন্বয়ের অভাব দ্বারা প্রভাবিত হবে। ট্রাম্পের প্রস্থানের পর মার্কিন-চীন সম্পর্কে আর এতটা দ্বন্দ্ব থাকবে না, বিশ্লেষকেরা অনেকটা এমনই মনে করেন। দুই পক্ষই শ্বাস নেয়ার কিছুটা সময় পাবে। তবে কতক্ষণ এই স্বস্তিদায়ক অবস্থা থাকবে, তা একটা প্রশ্ন বটে।
কারণ যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের এ নিয়ে যথেষ্ট মাথাব্যথা রয়েছে। তাই বলা যায়, এ বছর এই দুই মহারথীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা গত বছরের মতোই তীব্র থাকবে এবং বিপজ্জনক হবে। একতরফাভাবে কঠোর চীন নীতি অনুসরণকারী ট্রাম্প প্রশাসনের বিপরীতে গিয়ে বাইডেন একটি বহুপক্ষীয় মিত্রবাহিনী গড়ে তুলবেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান ও ভারত মার্কিন প্রচারের মূল লক্ষ্য হবে। মিত্রদের তালিকাভুক্ত করার জন্য মার্কিন প্রচেষ্টা, ভ্যাকসিন কূটনীতি এবং জলবায়ু প্রযুক্তি প্রতিযোগিতা দুই দেশের সম্পর্ককে আরো জটিল করবে।
বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে তুরস্ক এখন বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। ন্যাটোর দ্বিতীয় বৃহত্তম সদস্য দেশ হওয়া সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র দেশটির প্রতিরক্ষাব্যবস্থার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। নিষেধাজ্ঞার আওতা আরো বাড়তে পারে। রাশিয়ার কাছ থেকে এস ৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র-ব্যবস্থা কেনাকে যুক্তরাষ্ট্রের বিধিনিষেধ আরোপের মূল কারণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। তবে আসল বিষয় হলো, মুসলিম বলয়ে তুরস্কের স্বতন্ত্র অবস্থান পাশ্চাত্য স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছে না। আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা বাণিজ্যের বাজারে তুরস্কের উত্থানকেও ইউরোপ-আমেরিকা সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখছে, যা আঙ্কারার জন্য সর্বোচ্চ ঝুঁকি হিসেবে দেখা দিতে পারে। কারণ, মার্কিন অবরোধ প্রতিরক্ষা খাত থেকে বাণিজ্য পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ার আশঙ্কা আছে। দুর্বল ডিভাইস সুরক্ষা, কার্যকর কূটনীতির অনুপস্থিতি এবং সাইবার প্রতিক্রিয়ার ওপর অধিক জোরের অর্থ সাইবার স্পেসে অস্থিতিশীলতা। ২০২১ সালে স্থিতাবস্থা বজায় রাখা শক্ত হয়েছে।
করোনার কারণে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ এখন অনলাইনের ওপর নির্ভর হয়ে পড়েছে। এই ক্রিয়াকলাপের বেশির ভাগই হচ্ছে কম সুরক্ষিত বাসার কম্পিউটার বা নেট সংযোগ ব্যবহার করে, যা ঝুঁকিপূর্ণ। এই বছর ৫-জি নেটওয়ার্ক প্রসারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইন্টারনেট অব থিঙ্কস সেন্সর, ক্যামেরা এবং অন্যান্য ডিভাইসের বিস্তৃতিও ঘটবে। ইন্টারনেটে যুক্ত হওয়া নতুন ডিভাইস বাড়বে।
এই ডিভাইসগুলোকে হ্যাকিং থেকে রক্ষা করার জন্য আলাদা কিছু নেই, কেবল নিয়মিত আপডেট করে কাজটা করা হয়, যা পুরোপুরি ঝুঁকি মোকাবিলায় সক্ষম নয়। করোনার কারণে বিদায়ী বছরে বিশ্বব্যাপী জ্বালানির চাহিদার ব্যাপক পতন হয়, যা আলজেরিয়া থেকে শুরু করে ইরান পর্যন্ত দেশগুলোর অর্থনীতিকে দুর্বল করেছে। মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার শক্তি উৎপাদনকারী দেশগুলো ২০২০ সালে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়। এ বছর তাদের অবস্থা আরো খারাপ হতে পারে। কোভিড-১৯ আঘাত হানার আগেই সরকারগুলো অস্থিতিশীল ছিল।
এখন সেই চাপের সঙ্গে সঙ্গে সুষ্ঠু ভ্যাকসিন বিতরণের চ্যালেঞ্জ যুক্ত হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকানোর প্রচেষ্টায় ২০২১ সালটা আসলেই খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেন এত গুরুত্বপূর্ণ, তার একটা ব্যাখ্যা মেলে জাস্টিন রৌলাটের এক বিশেষ লেখায়। জাস্টিন রৌলাট মোটা দাগে পাঁচটি বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। ২০২০ সালে জলবায়ু পরিবর্তনের আলোচনা চাপা পড়ে গিয়েছিল করোনা মহামারিতে। এখন হাতে এসেছে টিকা। আশা করা হচ্ছে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। ফলে ২০২১ সালে জলবায়ু নিয়ে আলোচনা আবার গতি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক প্যারিস সম্মেলনের ধারাবাহিকতায় আসছে নভেম্বরে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে জড়ো হবেন বিশ্বনেতারা। প্যারিসে প্রথমবারের মতো বিশ্বের সব দেশই কার্যত জলবায়ু ইস্যুতে একমত হয়েছিল। ঘোষণা এসেছিল, সবাই একযোগে কাজ করবে। সমস্যাটা হচ্ছে, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
ঠিক হয়েছিল, শতাব্দীর শেষে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি শিল্পায়ন-পূর্ব সময়ের ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখবে সবাই। সম্ভব হলে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখা হবে। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় ১২ বছরের মধ্যেই উষ্ণতা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়াবে, শতাব্দীর শেষে তা উঠবে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে। আশার কথা, প্যারিস চুক্তির আওতায় দেশগুলো পাঁচ বছর অন্তর কার্বন নিঃসরণ কমানোর উচ্চাভিলাষ জানাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সে হিসাবে গ্লাসগো সম্মেলন হতে পারত ২০২০ সালের নভেম্বরে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে তা পিছিয়ে যায় ২০২১ সালের নভেম্বরে।
ইতোমধ্যে কিছুটা হলেও অগ্রগতি দেখেছে বিশ্ব। অপ্রত্যাশিতভাবে বড় ঘোষণাটা এসেছে চীনের কাছ থেকে। তবে এও সত্য, বিশ্বজুড়ে মানুষের বিশ্বাসে চিড় ধরিয়েছে করোনাভাইরাস। এখন মনে হচ্ছে, পৃথিবীটা এমনভাবে শেষ পরিণতির দিকে যেতে পারে, যার নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে নেই। আবার, করোনায় ভর করে এসেছে বিরাট অর্থনৈতিক ধাক্কা, যা ত্রিশের দশকের মহামন্দার পর সবচেয়ে ভয়ংকর।
এ ছাড়াও বিশ্বব্যাপী সুদহার ঘুরছে শূন্যের কাছাকাছি, এমনকি নেতিবাচক দিকেও। এই সুযোগ নিচ্ছে ইইউ এবং বাইডেনের নেতৃত্বাধীন নতুন মার্কিন প্রশাসন। তারা অর্থনীতি সচল রাখতে ও কার্বন নিঃসরণ কমাতে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এসব পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য জ্বালানির দাম কমাবে। তারা খুব বেশি কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলোর পণ্যে বাড়তি কর বসানোর ঘোষণাও দিয়েছে।
ফলে ওই দেশগুলো সোজা হতে বাধ্য হবে। যাইহোক সভ্যতার ইতিহাস বলে, অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাওয়ার এই স্পৃহাই মানুষকে নিয়ে এসেছে এতদূর। তাই নতুন বছরে নতুন স্বপ্ন বুকে নিয়ে এগিয়ে যাবে বিশ্বের অন্যান্য জাতির মতো বাঙালিরাও। হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনায় কেটে গেল একটি বছর। অনেক উত্থান-পতন পেরিয়ে অতীতের খাতায় জমা হলো ২০২১ সাল। বিগত সময়ে সকল দুঃখ, কষ্ট, হতাশা, গ্লানি ও বেদনা ভুলে বিশ্বের অন্য দেশের মতো বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন, পদ্মা সেতু চালু, সামাজিক, অর্থনৈতিকসহ নানা কারণে ২০২১ গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর।
উন্নয়নে নেয়া নানা উদ্যোগ পূর্ণ হবে, অগ্রগতির পথে সব জটিলতা দূর হবে-আজ এটাই সবার প্রত্যাশা। মহামারির ধাক্কা সামলে নিয়ে বাংলাদেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। ইংরেজি নতুন বছর ২০২২-এ দেশের মানুষ নতুন করে জীবন সাজানোর স্বপ্ন দেখবেন। ফেলে আসা দুঃখ-বেদনা ভুলে নতুন করে এগিয়ে যেতে চান সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাই আজ হূদয়ে হূদয়ে বেজে ওঠে একটাই প্রার্থনা- নতুন বছরটি যেন ভালো কাটে। স্বাগতম ২০২২ এবং বিদায় ২০২১।
লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ