গত বেশ কয়েক বছর ধরে ঘন ঘন মৃদু, হালকা ও মাঝারি ভূ-কম্পন অনুভূত হচ্ছে বাংলাদেশেও। এগুলো কোন কোনটির উৎস বাংলাদেশের কাছে-কিনারে আবার অনেকগুলো বহু দূরে। এ ধরনের ঘন ঘন অথচ হালকা ভূ-কম্পনকে অদূর ভবিষ্যতে কোনো শক্তিশালী ভূমিকম্পের পদধ্বনী, আগাম সতর্ক সঙ্কেত হিসেবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন। উপর্যুপরি মৃদু, হালকা, মাঝারি মাত্রায় ভূ-কম্পনের কারণে এ অঞ্চলের ভূ-ফাটল লাইনগুলো নাজুক ও শিথিল হয়ে পড়ছে। এর ফলে তীব্র ভূমিকম্পের অবস্থা তৈরি করছে।
ভূমিকম্পের পূর্বাভাস বা প্রেডিকশন খুবই জটিল। আমরা কোনো নির্দিষ্ট ভূমিকম্পকে সরাসরি নির্ণয় করতে পারি না, কিন্তু মাইক্রোসিসমিসিটি গবেষণা, ফোকাল ম্যাকানিজম গবেষণার মাধ্যমে সম্ভাব্য পূর্বাভাস এবং ঝুঁকিপূর্ণ স্থান, হাইসিসমিসিটি, লোসিসমিসিটি নির্ণয় করতে পারি, যা জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ জীবন ও সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতি রোধে অত্যন্ত সহায়ক। ভূমিকম্পবিষয়ক দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য সরকারের একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা জরুরি প্রয়োজন।
সাধারণত ডাকটাল রক এলাকায় ভূ-কম্পন তুলনামূলক কম হয়ে থাকে এবং ব্রাইটাল রক ভূ-কম্পনের জন্য যথেষ্ট উপযোগী। যখন ভূ-অভ্যস্তরে ক্রাস্টাল ডিফরমেশন ঘটে, তখন সে স্থানে স্ট্রেস অ্যাকুমোলেশন হতে থাকে। যখন অ্যাকুমোলেশন বেশি মাত্রায় পৌঁছায়, তখনই আর্থকোয়েক বা ভূ-কম্পনের মাধ্যমে এনার্জি রিলিজ হয়ে থাকে। আর্থকোয়েক ফোকাল ম্যাকানিজম গবেষণা থেকে দেখা যায়, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দিকে কমপ্রিশন টেকটনিক স্ট্রেস লোডিং হচ্ছে, যা দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মধ্যাঞ্চলের চেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।
তাছাড়া ট্রান্স এশিয়াটিক জোন, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, নেপাল, ভারত, হাইসিসমিসিটি জোন। ভারত ও মায়ানমারের দিক থেকে চলে আসা ভূ-অন্তরিভাগ দুটোর সংযোগস্থলে সম্ভাব্য ফল্ট লাইনের প্রভাব এবং ওই লাইনের ভূ-গর্ভস্থ মাটির স্তর অধিকতর দুর্বল বলে রাঙামাটি পার্বত্য অঞ্চল দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মতো ঝুঁকিপূর্ণ।
তাছাড়া সিসমিসিটি গবেষণায় লক্ষ করা যায়, বাংলাদেশের ভূ-অভ্যন্তরীণ ক্রাস্টের গঠন কম স্তরায়িত এবং সময়ের সাপেক্ষে সিসমিসিটির পরিবর্তন লক্ষণীয়। এ কথা সত্য যে, ভূ-অভ্যন্তরে সিসমিক প্রিকারছারের পরিবর্তন বুঝতে পারা অত্যন্ত জটিল ও সূক্ষ্ম। তবে এসব গবেষণা ইঙ্গিত করে সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ ভূ-কম্পনের। ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগে বিশ্বের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের কাতারে রয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। ঘনবসতির এই শহরটির ঝুঁকি কমাতে এ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকল্প ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা বলা হলেও তার বেশিরভাগই আলোর মুখ দেখেনি। আর্থ অবজারভেটরি সেন্টারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ান এবং বার্মা, এই তিনটি প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশের অবস্থান। যা বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। প্রতিবারই বড় কোনো ভূমিকম্প হওয়ার পরই ব্যাপক তৎপরতা দেখা যায়, যা ধামাচাপা পড়ে থাকে বড় ধরনের আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানার আগ পর্যন্ত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আক্তার জানিয়েছেন, সাধারণত প্রতি ১০০ বছর পর বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়ে থাকে। সবশেষ ১৮২২ এবং ১৯১৮ সালে মধুপুর ফল্টে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল। সে হিসেবে আরেকটি বড় ভূমিকম্পের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ। সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে ঢাকা। সারাবিশ্বেই বড় বড় ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্প হয় বাংলাদেশেও। সম্প্রতি এ ধরনের ভূমিকম্পের সংখ্যাও বেড়ে গেছে।
ভূমিকম্প হলে তার পরপরই এনিয়ে নানা ধরনের কথাবার্তা হয়। কিন্তু প্রাকৃতিক এই ঘটনা সম্পর্কে আমরা কতটুকু জানি। সারা পৃথিবীতে বছরে লাখ লাখ ভূমিকম্প হয়। যুক্তরাষ্ট্রে ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জিওলজিক্যাল সার্ভে বলছে, প্রত্যেক বছর গড়ে ১৭টি বড় ধরনের ভূমিকম্প হয় রিখটার স্কেলে যার মাত্রা সাতের ওপরে। এবং আট মাত্রার ভূমিকম্প হয় একবার।
তবে ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বছরে লাখ লাখ ভূমিকম্প হয়। এর অনেকগুলো হয়তো বোঝাই যায় না। বোঝা যায় না কারণ খুব প্রত্যন্ত এলাকায় এসব হয় অথবা সেগুলোর মাত্রা থাকে খুবই কম। জাপানের উত্তর-পূর্বে ২০০৯ সালের ১১ই মার্চ একটি বড়ো ধরনের ভূমিকম্প আঘাত হানে, যার মাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৯। এর ফলে পরিবর্তন ঘটে পৃথিবীর ভরের বণ্টনে। এবং তার প্রভাবে পৃথিবী ঘুরতে থাকে সামান্য দ্রুত গতিতে আর তখন দিনের দৈর্ঘ্য কমে যায়।
সেদিন ১.৮ মাইক্রো সেকেন্ড ছোট ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো শহর প্রত্যেক বছর গড়ে দুই ইঞ্চি করে লস অ্যাঞ্জেলসের দিকে সরে যাচ্ছে। এই একই গতিতে বাড়ে আমাদের আঙ্গুলের নখ। শহরের এই অবস্থান পরিবর্তনের কারণ হচ্ছে সান অ্যানড্রেয়াস ফল্টের দুটো দিক ক্রমশ একটি অপরটিকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এই গতিতে চলতে থাকলে এই দুটো শহর কয়েক লাখ বছর পর একত্রিত হয়ে পড়বে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভূমিকম্পের আগে পুকুর, খাল-বিল, হ্রদ, জলাশয়ের স্থির পানি থেকে দুর্গন্ধ আসতে পারে। এমনকি সেই পানি সামান্য উষ্ণও হয়ে পড়তে পারে। প্লেট সরে যাওয়ার কারণে মাটির নিচ থেকে যে গ্যাস নির্গত হয় তার কারণে এটা হয়ে থাকে। এর ফলে ওই এলাকার বন্যপ্রাণীর আচরণেও পরিবর্তন ঘটতে পারে।
ওপেন ইউনিভার্সিটির প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগ বলছে, ২০০৯ সালে ইটালিতে এক ভূমিকম্পের সময় এক ধরনের ব্যাঙ সেখান থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিল এবং ফিরে এসেছিল ভূমিকম্পের পরে। বলা হয়, এই ব্যাঙ পানির রাসায়নিক পরিবর্তন খুব দ্রুত শনাক্ত করতে পারে। ভূমিকম্পের পরেও পুকুরে কিম্বা সুইমিং পুলের পানিতে আপনি কখনো কখনো ঢেউ দেখতে পারেন। একে বলা হয় শ্যাস। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভূমিকম্প হয়তো শেষ হয়ে গেছে কিন্তু তারপরেও কয়েক ঘণ্টা ধরে অভ্যন্তরীণ এই পানিতে তরঙ্গ অব্যাহত থাকতে পারে।
বিশ্বের অন্যতম সক্রিয় ভূ-কম্পন বলয়ের মধ্যে বাংলাদেশ ও এর আশপাশ অঞ্চল (বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব ভারত) রয়েছে উচ্চতর ঝুঁকিতে। বাংলাদেশ এবং সংলগ্ন ভারতীয়, ইউরোশীয় ও মায়ানমারের ভূ-পাটাতন কয়েক সেন্টিমিটার করে ধীরে ধীরে গতিশীল হচ্ছে। এর ফলে শক্তিশালী মাত্রায় ভূমিকম্পের ভূতাত্ত্বিক অবস্থা বা কার্যকারণ অনিবার্য হয়ে উঠেছে। ভূ-কম্পনমাত্রা অত্যধিক হলে এবং ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল যদি বাংলাদেশের ভেতরে অথবা কাছাকাছি এলাকায় হয়, সেক্ষেত্রে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিলাসহ জনবহুল এলাকায় জানমালের ব্যাপক ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। অতীতকালে সংঘটিত ভূমিকম্পের মতোই বাংলাদেশে প্রবাহিত নদ-নদী, শাখা নদী ও উপনদী, অববাহিকা ও সমুদ্র উপকূলভাগে গতিপথ ও ভূমিরূপ পরিবর্তনের আশঙ্কা রয়েছে।
অপরিকল্পিত ও ত্রুটিপূর্ণ নগরায়ন ভূমিকম্পের দুর্যোগে বিপদের প্রধান কারণ। এ অঞ্চলে মাঝারি থেকে শক্তিশালীর মধ্যবর্তী এবং শক্তিশালী মাত্রার ভূমিকম্প হলে অধিকাংশ ভবন টিকে থাকবে না। এতে চট্টগ্রাম শহরের ৭০ ভাগ ভবন ধূলিস্যাৎ হয়ে যেতে পারে, একথা চুয়েটের এক গবেষণায় বলা হয়েছে। ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা যথাসাধ্য লাঘব করা এবং সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় যুগোপযোগী সতর্কতা, প্রস্তুতির ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তুতি-সতর্কতা মোটেও যথেষ্ট নয়।
একটি ‘রানা প্লাজা’ ধসের ঘটনায় হিমশিম অবস্থায় পড়তে হয়েছে, ভূমিকম্পে হাজার হাজার রানা প্লাজা’র মতো ঘটনা যদি ঘটে তা সামাল দেয়ার উপায় কী? তাই তো বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে ভূমিকম্পে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে (ভালনারেবিলিটি এসেসমেন্ট) যথেচ্ছ ত্রুটিপূর্ণ অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত ভবনগুলো শনাক্ত করা এবং অনতিবিলম্বে কারিগরি নিয়মেই ‘শক্তি বৃদ্ধিকরণ’ করে টিকিয়ে রাখা যাবে। তাহলে ঝুঁকি অনেকটা মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
ভূমিকম্পে ধসে পড়া ভবনে আটকে থাকা জনগণকে উদ্ধার তৎপরতার বিষয়ে প্রশিক্ষিত জনবল গড়ে তোলা এবং উদ্ধার কাজে ব্যবহূত আধুনিক যন্ত্রপাতি-সরঞ্জাম সংগ্রহ ও সেসবের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, নিয়মিত মহড়া প্রয়োজন। ভবিষ্যতে বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে এতে আমাদের দেশে ত্রুটিপূর্ণ ও অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত দুর্বল ভবনগুলো ধসে পড়তে শুরু করবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির (সিডিএমপি) ডিজিটাল জরিপে দেশে ভূমিকম্পের ঝুঁকির ক্ষেত্রে উদ্বেগজনক চিত্র ফুটে উঠে। এতে জানা গেছে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কিংবা কাছাকাছি জায়গায় কোনো উৎপত্তিস্থল থেকে যদি রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রায় ভূমিকম্প সংঘটিত হয় তাহলে রাজধানী ঢাকা, বন্দরনগরী চট্টগ্রাম ও সিলেট নগরীর অন্তত ২ লাখ ৫০ হাজার ভবন কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বা ধসে পড়তে পারে। প্রাণহানির আশংকা রয়েছে এক লাখেরও বেশি মানুষের।
জরিপ তথ্য মতে, রাজধানী ঢাকায় ৩ লাখ ২৬ হাজার ভবনের মধ্যে পরীক্ষা করে দেখা গেছে ৭৮ হাজার ভবন অপরিকল্পিত। যেগুলো ভূমিকম্প-প্রতিরোধী কারিগরি ব্যবস্থাবিহীন, নির্মাণে গুরুতর ত্রুটিযুক্ত এবং এসব কারণে ভূমিকম্পে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত। চট্টগ্রাম মহানগরীর চালচিত্র আরো বেহাল। চট্টগ্রামে জরিপ চালিয়ে ১ লাখ ৮০ হাজার ভবনের মধ্যে ১ লাখ ৪২ হাজার ভবনই নানাবিধ ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পাওয়া গেছে।
সিলেট নগরীর ৫২ হাজার ভবনের মধ্যে ২৪ হাজার ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। তবে আরো ব্যাপক ও বিস্তৃত পরিসরে জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হলে ভূমিকম্পে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হবে দেশের বিশেষত বর্ধিষ্ণু ও জনবহুল শহর-নগর-শিল্পাঞ্চলে অনেক বাড়িঘর ভবন। ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ভূমিকম্পের আগাম প্রস্তুতি ও গণসচেতনতা-সতর্কতা জানমালের ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা কমিয়ে আনতে পারে।
ভূমিকম্প হওয়ার আগে এবং ভূ-কম্পন চলাকালীন স্বল্প সময়ের মধ্যেই উপস্থিত বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগানো, গণসচেতনতা, সতর্কতা ও পূর্ব-প্রস্তুতির প্রয়োজন সকল পর্যায়ে সঠিক সময়েই। আর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো চিহ্নিত করা দরকার। কিন্তু বাংলাদেশে এসব ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রাক-সতর্কতা ও প্রস্তুতির অভাব রয়েছে অত্যন্ত প্রকটভাবেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, সবচেয়ে বড় দুর্বলতার জায়গা হল বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ভবন নির্মাণ না করা এবং সেগুলো মনিটর করে কোনো ব্যবস্থা না নেয়া। এ ব্যাপারে পুরকৌশলবিদ মেহেদী আহমেদ আনসারি জানান, ঢাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে, তারসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভূমিকম্পে দুর্যোগের ঝুঁকি। এমনিতেই ঢাকার ঘিঞ্জি এলাকা থেকে শুরু করে অনেক অভিজাত এলাকার বহুতল ভবন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখেছেন বেশিরভাগই উচ্চমাত্রার ভূমিকম্প সহনশীল নয়।
কারণ এগুলো বিল্ডিং কোড লঙ্ঘন করেছে। এ ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো গুঁড়িয়ে ফেলা কিংবা ভূমিকম্প সহনশীল করে সংস্কার করা প্রয়োজন হলেও তার কোনো ক্ষেত্রেই অগ্রগতি হয়নি। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকম্পের প্রস্তুতি বলতে কয়েকটি কাজ হয়েছে। যেমন, সরকারি অর্থায়নে অন্তত একশ কোটি টাকা খরচ করে ফায়ার সার্ভিসের জন্য নানা উপকরণ কেনা। সেই সঙ্গে রাজউকের অধীনে আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্প চালু করা, যারা ভবনের ভূমিকম্প সহনশীলতার বিষয়টি নজরদারি করে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়। মনে রাখতে হবে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে পূর্ব প্রস্তুতিমূলক সচেতনতার বিকল্প নেই।
লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ