যুদ্ধ, মহামারি ও জলবায়ু পরিবর্তন- এই তিন প্রভাবে বর্তমান বিশ্ব অন্যতম প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। এর ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট এবং গুরুতর খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বিশ্বে দুর্ভিক্ষের সংকেত দিচ্ছে। যদিও মহামারি ও যুদ্ধ তুলনামূলকভাবে নতুন ঘটনা; জলবায়ু পরিবর্তন তো কয়েক দশক ধরে চলমান।
জলবায়ু পরিবর্তন আবহাওয়ার ঘটনা যেমন খরা, বন্যা, দাবদাহ, মাটির নিম্ন-উর্বরতা হেতু উৎপাদন হ্রাস, বৃষ্টির অস্বাভাবিক ধরন এবং ভারি সার ব্যবহার থেকে অ্যাসিড বৃষ্টি ইত্যাদির সঙ্গে সম্পর্কিত। এই দুষ্টচক্র সব ধরনের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং অপুষ্টি, পরিবেশের ক্ষতি, পানির অভাব এবং নতুন নতুন মানুষ, উদ্ভিদ ও প্রাণীর রোগের উদ্ভব ঘটায়। জলবায়ু পরিবর্তন সরাসরি মাটির উর্বরতা, বৃষ্টির ধরন, ফসলের ফলন এবং খাদ্য উৎপাদন, পুষ্টি উপাদান এবং পুষ্টির জৈব উপলভ্যতাকে প্রভাবিত করে পুরো খাদ্যব্যবস্থাকে বিরূপ করে। এসব পরিবর্তন বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহে ম্যাক্রো ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট হ্রাস করে। পরোক্ষ প্রভাব হিসেবে আরও সমস্যা যেমন কীটপতঙ্গ দ্বারা খাদ্যশৃঙ্খলের বিভিন্ন পর্যায়ে নষ্ট হওয়া এবং খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকি বাড়ায়। খাদ্যব্যবস্থার আওতায় উৎপাদন, সংগ্রহ, পরিবহন, প্রক্রিয়াকরণ, বণ্টন, বাণিজ্য ও বিপণন, নিয়ন্ত্রণ, খাদ্যের ব্যবহার এবং পুষ্টি ও স্বাস্থ্য, আর্থ-সামাজিক এবং পরিবেশের ফলাফল অন্তর্ভুক্ত। নব্যপ্রস্তর বিপ্লবে কৃষির আবির্ভাব প্রধানত উদ্ভিদভিত্তিক খাদ্যের দিকে মোড় নেয়। খাদ্যব্যবস্থা আরও বিকশিত হয়েছে নগরায়ন, খাদ্য সঞ্চয় ও পরিবহন ব্যবস্থা, বাণিজ্য রুট এবং ভোক্তা চাহিদার উন্নয়নের সঙ্গে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রক্রিয়াজাত, শক্তি ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ঘন খাবারের ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ এবং পরিবহনে বিপ্লব ঘটিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের ঘনত্ব বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্যের পুষ্টি উপাদান পরিবর্তন করে মানুষের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রাথমিক কারণ দীর্ঘদিন প্রত্যক্ষ আলোচনার বাইরে ছিল। গত বছর দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত কপ২৮ সম্মেলনে এ নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বেরিয়ে আসার অন্তর্বতীকালীন পর্ব নিয়ে অংশগ্রহণকারীরা এক ধরনের সমঝোতায় পৌঁছেছেন। কিন্তু এর সঙ্গে একটি অপ্রীতিকর প্রশ্নও সামনে এসেছে। এ অন্তর্বতীকালীন প্রক্রিয়ার অর্থায়ন কীভাবে হবে? জাতিসংঘের জলবায়ু বিভাগের প্রধান সাইমন স্টিল সম্প্রতি এক মন্তব্যে বলেন, এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার বৈশ্বিক লড়াইয়ে অনিবার্য ফ্যাক্টর হিসেবে দাঁড়িয়েছে অর্থায়ন। চলতি বছর আজারবাইজানে অনুষ্ঠেয় কপ২৯ ও ২০২৫ সালে ব্রাজিলে অনুষ্ঠেয় কপ৩০ সম্মেলনে এককভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে দাঁড়াবে জলবায়ু অর্থায়ন কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর আর্থিক সুবিধাপ্রাপ্তি প্রত্যাশামাফিক হচ্ছে না। সর্বশেষ কপ সম্মেলনে প্রস্তাবিত ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড’-এর আওতায় অর্থ সংগ্রহ প্রয়োজনের চেয়ে অনেক কম। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাক্কলন, ২০২৫ সালের মধ্যে শূন্য কার্বন নিঃসরণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ২০৩১ সাল থেকে এক দশমিক ৬৩ ট্রিলিয়ন ডলার বা এক দশমিক পাঁচ ট্রিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করতে হবে। উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ২০৩০ নাগাদ বার্ষিক দুই দশমিক চার ট্রিলিয়ন ডলার করে ব্যয় করে যেতে হবে। এককভাবে শুধু ব্রাজিলকেই ব্যয় করতে হবে ২০ হাজার কোটি ডলার, যদি তারা ২০৩০ সালের নিঃসরণ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে চায়। বিদ্যমান এ পরিস্থিতির আদতে সহজ কোনো সমাধান নেই। করোনা মহামারি পরবর্তী সময়ে শ্লথগতির প্রবৃদ্ধি ও কঠোর মুদ্রানীতির প্রেক্ষাপটে বিশ্বের ধনী দেশগুলোও কৃচ্ছ্রনীতির মধ্য দিয়ে এগোচ্ছে। সব দেশেই বড় অঙ্কের নগদ অর্থপ্রবাহ বাড়ানোর প্রয়োজন থাকলেও তা প্রত্যাশামাফিক করতে পারছে না। সরকারি অর্থায়ন নিশ্চিতে সাহসী নতুন পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।
এবং কার্বন নিঃসরণ বৃদ্ধিকারী কার্যক্রমে করারোপ করতে হবে। এতে নিঃসরণকারী ব্যক্তি ও শিল্পগোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনা যাবে। দীর্ঘমেয়াদি ব্যয় ও বিনিয়োগ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কোনো রাষ্ট্রের হাতে থাকা আদর্শ মাধ্যম হচ্ছে করারোপ। বৈশ্বিকভাবে যদি শূন্য দশমিক এক শতাংশ করারোপ করা হয় তাহলে বার্ষিক ৪১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার সংগ্রহ করা যাবে। প্রতি টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণে যদি পাঁচ ডলারও করারোপ করা হয় তাহলে বার্ষিক ২১ হাজার ডলার সংগ্রহ হবে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) দীর্ঘদিন ধরে কার্বন ডাই-অক্সাইড জীবাশ্ম জ্বালানি নির্গমনকারীদের ওপর করারোপের কথা বলে আসছে। তাদের মতে, এই ট্যাক্স হবে জলবায়ু রক্ষার্থে অর্থায়নের উৎস। একই সঙ্গে এর মাধ্যমে প্রণোদনাও নিশ্চিত করা হবে। দূষণকারীদের দেয়া এ অতিরিক্ত রাজস্ব উচ্চ আয়ের দেশকে, যারা মূলত ঐতিহাসিকভাবে দূষণের জন্য দায়ী, দূষণের কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর প্রতি নৈতিক দায়িত্ব পালনে সহায়তা করবে। উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ধনী দেশগুলোর প্রতিশ্রুত ১০ হাজার কোটি ডলার সহায়তার চেয়ে বেশি সহায়তা প্রদান করা উচিত। এ ছাড়া দূষণ কর ওই উন্নয়নশীল দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বৈষম্য দূর করতে সহায়তা করবে। এমনকি সেইসব অর্থনীতিতেও যেখানে ঐতিহাসিকভাবে মাথাপিছু নির্গমন কম; মোট জনসংখ্যার নির্গমন এবং সর্বোচ্চ নির্গমনকারীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যবধান রয়েছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, কার্বন বৈষম্য এক দেশ থেকে অন্য দেশের তুলনায় দেশের অভ্যন্তরেই বেশি। এ বৈষম্য আয় এবং সম্পদের অসমতা তৈরি করে। এখানে আশ্চর্যান্বিত হওয়ার কিছু নেই, বৈশ্বিকভাবে দরিদ্রতম ৬৬ শতাংশ দেশ যে কার্বন নিঃসরণ করে তা এক শতাংশ সম্পদশালী দেশের কার্বন নিঃসরণের সমান। সাধারণ নাগরিকদের ওপর এ অবিচার এখনো চলমান।
এটি কার্যকর জলবায়ু নীতির জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়ে তোলা এবং টিকিয়ে রাখার ক্ষমতাকে ক্রমবর্ধমানভাবে হুমকির মুখে ফেলেছে। দূষণকারীদের ওপর করারোপ করা হয়েছে যেন এটি পরিষ্কার করা যায়, নায্যতাপূর্ণ উত্তরণ কেবল ফাঁপা বুলি নয়। যদিও এ ধরনের রাজস্ব আহরণের তাত্ত্বিক ভিত্তি যতটা মজবুত, এটি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা বেশ কঠিন তা প্রমাণিত। পুঁজি, জনগণ, নির্গমন- সবটাই গতিশীল, অতি সহজে সীমানা অতিক্রম করতে পারে।
ফলে জাতীয় বা আঞ্চলিক কর ব্যবস্থার কার্যকারিতা হ্রাস পায়। যদিও করের বিষয়ে আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা কখনই সহজ নয়, তবুও একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি দেশগুলোকে তাদের নিজস্ব সম্পদের ওপর আরও বেশি সুবিধা দেবে। পাশাপাশি যা তাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তা রক্ষার অনুমতি দেবে। প্রতিটি দেশের স্বার্থে এ বহুপক্ষীয়তা প্রয়োজন। করের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দুর্বল হয়ে পড়ছে, যার উৎসাহব্যঞ্জক লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। কপ২৮-এ সব পক্ষ সম্মত হয়েছে, করসহ অর্থের নতুন এবং উদ্ভাবনী উৎসগুলোর চলমান বিষয়গুলোকে ত্বরান্বিত করতে আহ্বান জানিয়েছে। গত নভেম্বরে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ইন্টারন্যাশনাল ট্যাক্স করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করতে একটি প্রস্তাব পাস করেছে, যা বৈশ্বিক বিধি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি ন্যায্য পদ্ধতির পথকে প্রশস্ত করবে। ব্রাজিলের নেতৃত্বে জি২০ থেকে দাবি উঠেছে, বিশ্বের তিন হাজার বিলিয়নেয়ারের ওপর বৈশ্বিক ন্যূনতম করারোপের। তারা বিশ্বের বাকি জনসংখ্যার চেয়ে অনেক কম কার্যকর কর প্রদান করে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ট্যাক্স অবজারভেটরি প্রাক্কলন, তাদের সম্পদের ওপর বার্ষিক মাত্র দুই শতাংশ করারোপে প্রতি বছর ২৫ হাজার কোটি ডলার আহরণ করা যাবে। এ গতিবেগকে পুঁজি করে দেশগুলোর একটি গোষ্ঠী একটি আন্তর্জাতিক ট্যাক্স টাস্কফোর্স চালু করেছে।
ফ্রান্স, বার্বাডোস ও কেনিয়ার নেতারা যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন। সেখানে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষকে টেকসই উন্নয়ন ও জলবায়ু কার্যক্রমের অর্থায়নে বিশ্বব্যাপী জিডিপির কমপক্ষে শূন্য দশমিক এক শতাংশের সমতুল্য বাড়াতে পারে, এমন করনীতিগুলো অন্বেষণ করতে বলা হয়েছে। মূলকথা, সব দেশের জন্য একক সমাধান পারব না। বরং বিভিন্ন দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গির ওপর ভিত্তি করে অনেক সম্ভাবনাময় বিকল্পের রাজনৈতিক ও প্রযুক্তিগত বাধাগুলো মূল্যায়ন করতে হবে। জীবাশ্ম জ্বালানি উত্তোলন এবং আর্থিক লেনদেনের পাশাপাশি বিমান চলাচল ও জাহাজ চলাচলের ওপর করসহ অনেক বিকল্প রয়েছে। এ টাস্কফোর্স কীভাবে এ ধরনের করগুলো ন্যায়সঙ্গতভাবে প্রয়োগ করা যেতে পারে, সে সম্পর্কে আমাদের বোধগম্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। সম্ভবত নির্দিষ্ট নীতিগুলোর ওপর একটি চুক্তির পথ প্রশস্ত করবে। পরিবর্তন ত্বরান্বিত করার জন্য যৌক্তিক কর একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে। নতুন অভিজ্ঞতা অনুসন্ধানে অবদান রেখে ও দেশগুলোর মধ্যে আস্থা ও সহযোগিতা গড়ে তোলার মাধ্যমে নতুন টাস্কফোর্স প্রত্যেককে জলবায়ু সংকটের কেন্দ্রস্থলে অন্যায় মোকাবিলা করতে ও তা মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ মুক্ত করতে সহায়তা করতে পারে।
দরিদ্র মানুষ এবং দেশগুলোর ওপর বোঝা হ্রাস করা কেবল একটি নৈতিক বাধ্যবাধকতা নয়। এমন একটি পরিবর্তনের জন্য তাদের সমর্থন অর্জন করাও প্রয়োজন, যা তাদের ছাড়া ঘটতে পারে না। বাংলাদেশের ১১০ মিলিয়ন মানুষ নদী বা জলাশয়ের কাছাকাছি বাস করে। এখনো বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ লোক গ্রামাঞ্চলে বাস করে। দেশের কর্মক্ষম জনসংখ্যার ৫০ শতাংশ কৃষিনির্ভর জীবিকা নির্বাহ করে। এক দশমিক পাঁচ মিলিয়ন মানুষ অভ্যন্তরীণ নদী, জলাশয় ও সমুদ্র থেকে মাছ সংগ্রহ করার কাজে যুক্ত। মৎস্যসম্পদ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তিন দশমিক আট শতাংশ অর্থ যুক্ত করে এবং বাংলাদেশের মানুষের খাবারে প্রোটিনের একটি বড় উৎস।
বাংলাদেশের দুই শতাংশ মানুষ বননির্ভর কাজ করে এবং এই সম্পদ থেকে অর্থনীতিতে তিন শতাংশ যুক্ত হয়। প্রাকৃতিক এসব সম্পদ শুধু জীবিকা ও অর্থনীতিকেই না, জীববৈচিত্র্যকেও সমৃদ্ধ করে। বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য শুধু সৌন্দর্যে না, বৈচিত্র্যেও ভরপুর বলেই বিশ্বে বিরল ধরনের। জলবায়ু পরিবর্তনে মানুষ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তেমনি ক্ষতবিক্ষত হবে প্রকৃতি। তাই এ সমস্যা মোকাবিলা করতে হলে মানুষ ও প্রকৃতিকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। মানুষের ক্ষমতা নেই প্রকৃতিকে বাঁচানোর। মানুষ শুধু তার নিজের ব্যবহার সংশোধন করতে পারে।
পরিবেশের ক্ষয় হয়, এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে পারে। বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হয়েছে। আর দেড় দশকে বাংলাদেশ উন্নত দেশের কাতারে চলে যাবে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি লাভের স্বপ্ন যেন মানুষের লালসায় পরিণত না হয়ে মানুষ ও পরিবেশকে একে অপরের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দেয়।
পশ্চিমা দেশের কর্মের প্রভাবেই বাংলাদেশের চরম জলবায়ু অবস্থা, ভেবে অসহায়বোধ না করে নিজেদের করণীয় যা, তা করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের সব জাতিসত্তা ও গ্রামপর্যায়ের মানুষের থেকে এই জ্ঞান আহরণ করে জীববৈচিত্র্যকে আবার সমৃদ্ধ করতে হবে। তখনই প্রকৃতি নিজস্ব শক্তিতে তার প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়তে পারবে। পরিবেশকে রক্ষা করতে হলে পরিবেশগত ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে মানুষের জন্য ও পরিবেশের জন্য। প্রকৃতি ও মানুষের সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করতে প্রয়োজন সদিচ্ছা, সহযোগিতা, ব্যবস্থাপনা, উদারতা, সহমর্মিতা ও ভালোবাসা। দেশের জনগণকে যেই প্রকৃতি খাবার সংগ্রহ করে, বাসস্থান দেয়, জীবিকা, সংস্কৃতি ও অনুভূতি দেয় তার নিরাপত্তায় অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পরিবেশকে রক্ষা করতে হলে পুরো বিশ্বকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।
লেখক: গবেষক ও কলাম লেখক
নয়াশতাব্দী/ডিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ