ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

থোকায় থোকায় ঝুলছে কমলা, দর্শনার্থীদের ভিড়

প্রকাশনার সময়: ১২ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:১২

ঠাকুরগাঁওয়ে বাগানের গাছে গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে দার্জিলিং জাতের কমলা। আর এসব জাতের কমলা দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন হাজারো দর্শনার্থী। আর দর্শনার্থীদের জন্য সকল রকম ব্যবস্থা করেছেন বাগানের মালিক কৃষক আবু জাহিদ ইবনুল ইরাম জুয়েল।

জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার ২নং কোষারাণীগঞ্জ ইউনিয়নের মালঞ্চা গ্রামের জুয়েল নামে এক কৃষক দশ বছর আগে হর্টিকালচার থেকে হাতে গোনা কয়েকটি চারা ক্রয় করে জমিতে রোপণ করেন। দু বছরের মাথায় আশানুরুপ ফল হওয়ায় বাগানের পরিধি বাড়ায়। এখন উনার বাগানে প্রায় ৩শ’ কমলা গাছ রয়েছে।

উৎপাদিত বাগানের এসব ফল স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করে পাঠানো হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। প্রতি বছর বাগানের পরিধি বাড়ায় কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে অনেকের। বাগানের প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে ভারতীয় দার্জিলিং জাতের কমলা। নভেম্বর মাস থেকে বাগানের উৎপাদিত কমলা বিক্রি করতে শুরু করেছে বাগান মালিক।

বর্তমানে তিনশতাধিক গাছের এই বাগানের প্রতিটি গাছে আট থেকে নয়শ’ কমলা ধরেছে। চলছে ফল বিক্রি কার্যক্রম। উৎপাদিত কমলা বাগানেই ক্রয় করছেন দর্শনার্থীরা। সেখান থেকেই প্রতি কেজি কমলা বিক্রি করছেন ৩০০ টাকা দরে। একই প্লটে দর্শনার্থীদের জন্য উৎপাদন করা হয়েছে চারা। বাগান দেখতে আসলে তার পাশে চারাও ক্রয় করতে পারবে।

বাগান দেখতে আসা দর্শনার্থী ওমর ফারুক বলেন, শহর থেকে এসেছি কমলা বাগান দেখতে। দার্জেলিংয়ে এ বাগান দেখেছি। কিন্তু এখানে কমলা বাগান যে সুন্দর তা দার্জেলিং এর বাগানকেও হার মানাবে। আর এই কমলা অনেক মিষ্টি। আমার দেশের মাটি সোনার চেয়েও খাঁটি তা এই বাগান দেখেই বোঝা যায়।

আরেক দর্শনার্থী সফিকুল ইসলাম বলেন, পরিবারসহ কমলা বাগান দেখতে এসেছি। পুরো বাগানে কমলা ঝুলে রয়েছে। দেখতেই অনেক সুন্দর লাগছে। কমলা ক্রয় করে খেলাম অনেক মিষ্টি ও রসালো কমলা। এই কমলা খেয়ে মনে হল না যে আমার দেশের মাটিতে উৎপাদিত কমলা খাচ্ছি। পরিবারের সকলে খুশি এমন কমলা বাগান দেখতে এসে।

শহরের পাশেই কমলা বাগানের মালিক মাহফিজুর রহমান ছুটু বাগান দেখতে এসে বলেন, আমার বাগানেও কমলা গাছ রয়েছে। তবে এই বাগান খুব সুন্দর করে যত্ন করার কারণে ফলন অনেক ভালো হয়েছে। এছাড়াও ফলের সাইজ ও রং একবারে ঠিকঠাক হয়েছে। আমি বাগান মালিক জুয়েল ভাই এর সাথে আমার বাগান নিয়ে আলোচনা করার জন্য এসেছি। এমন বাগান আমাদের দেশের কৃষক করলে একদিকে যেমন লাভবান হবে নিজেরা, অন্যদিকে দেশে ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণে ভূমিকাও পালন করবে।

কমলা বাগানে প্রথম থেকেই কাজ করেন নরেন মোহন জানান, বাগানে প্রথম থেকেই কাজ করছি। এখন প্রতিদিন প্রায় এক হাজারের উপর মানুষ আসে এই বাগান দেখতে। আমরা বাগানে ৮/১০ জন এখন কাজ করতেছি। কমলা গাছ থেকে পারার জন্য ৩/৪ জনকে কাজ করতে হয়। এছাড়াও বাগান পাহাড়া দিতে হয় এখন না হলে ফল চুরির ভয় থাকে।

দার্জিলিং জাতের কমলার বাগানের মালিক আবু জাহিদ ইবনুল ইরাম জুয়েল বলেন, বাগানের বয়স প্রায় ১০ বছর। তিন বছর পর থেকেই ফলন শুরু হয়েছে। তবে কৃষকরা যদি এভাবে কমলার বাগান করতে এগিয়ে আসে তাহলে কৃষিতে একটা বিপ্লব ঘটবে। আর কমলা দেশের বাহির থেকে আনতে হবে না। আমাদের দেশের কমলা দিয়েই ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ হবে।

নয়াশতাব্দী/জেডএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ