ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শীতের পিঠায় সুদিন ফিরেছে আনেছার

প্রকাশনার সময়: ১০ নভেম্বর ২০২২, ১৫:১৬ | আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২২, ১৫:২৬

তখন ২০১২ সাল। স্বামী আব্দুল কুদ্দুস মারা গেলেন। চার সন্তান বুকে আগলে বেঁচে রইলেন আনেছা বেগম। এর মধ্যে মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেল। তারা সংসার জীবনে বড় ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। একমাত্র ছেলে বিয়ে করে আলাদা সংসার পাতলেন। আনেছা বেগম পড়লেন অথৈ জলে। অভাব-অনটনে জীবনপ্রায় বিপন্ন। পেটের দায়ে শুরু করলেন শীতকালীন পিঠা বিক্রি। শীতের পিঠায় সংসারের অভাব ঘুচেছে আনেছার। সুদিন ফিরেছে জীবনে।

আনেছা বেগমের বয়স ৫৫ ছুঁইছুঁই। নাটোরের গুরুদাসপরের পৌর সদরের চাঁচকৈড় খলিফা পাড়া মহল্লায় বাড়ি।

আনেছা বেগমের ঠিকানা নিয়ে রওনা দিই সেদিকে। আমি যখন আনেছা বেগমের দোকানে পৌঁছাই, তখন সন্ধ্যা ৭ বাজে। চাঁচকৈড়-খলিফা পাড়া প্রধান সড়কের পাশে অস্থায়ী এক চালার নিচে বসানো চৌকি। সামনে বেঞ্চ। চৌকিতে দুটি চুলা জ্বলছে। এক চুলাতে ভাপা ও অন্যটিতে চিতই পিঠার তাওয়া বসানো। আনেছা বেগম তাওয়ায় পিঠা বানাচ্ছেন। প্রতিবেশী একজন লাকড়ি ঠেলে সহযোগিতা করছেন। দাঁড়িয়ে, বসে শীতে গরম পিঠার স্বাদ নিচ্ছেন কয়েকজন ক্রেতা। কয়েকজন পিঠার জন্য অপেক্ষা করছেন।

প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ কেজি চালের গুড়ার পিঠা তৈরি করেন আনেছা বেগম। চালের গুড়া, খেজুর গুড়, জ্বালানি ও অন্যান্য উপকরণ বাবদ খরচ ১ হাজার টাকা। গড়ে দৈনিক বিক্রি হয় দেড় হাজারের মতো। খরচ বাদে ৫০০ টাকার মতো আয় হয়। ভালোই যাচ্ছে আনেছা বেগমের সংসার। সুখে কাটছে দিন।

আনেছা বেগম বললেন, ঢেঁকিছাঁটা চালের গুড়ার সঙ্গে খেজুরের গুড়ের মিশ্রণ দিয়ে গরম পানির ভাঁপে তৈরি হয় ভাপা পিঠা। আর চালের গুড়ার সাথে পানি মিশিয়ে মণ্ড তৈরি করে সেটি মাটির তাওয়ায় ঢাকনা দিয়ে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রেখে নামিয়ে নিলেই তৈরি হয় চিতই পিঠা। চিতই পিঠার সঙ্গে দেয়া হয় ধনে পাতা, কালো জিরা, শরিষা বাটা,কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজ দিয়ে তৈরী ভর্তা।

পিঠা খেতে আসা যুবক মাসুদ খলিফা বলেন, বাড়িতে তো সবসময় পিঠা তৈরি সম্ভব হয় না। মাঝেমধ্যে বন্ধুদের সঙ্গে পিঠা খেতে আসি এখানে। ওনার হাত ভালো।

নয়া শতাব্দী/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ