সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বিন্নারফুল দিয়ে ঝাড়ু তৈরির কারিগররা ভালো নেই। নানা সমস্যায় জর্জরিত তারা, নেই পর্যাপ্ত পুঁজি, পৃষ্টপোষকতার অভাব, উপকরণের স্বল্পতা ও কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধির কারণে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত কারিগররা কষ্টে দিনাতিপাত করছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন গ্রামের শতাধিক দরিদ্র পরিবারের নারী-পুরুষরা বিন্নারফুল দিয়ে ঝাড়ু তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ঘরের কাজের পাশাপাশি তারা তৈরি করছেন ফুলঝাড়ু। বিন্নারফুল দিয়ে তৈরি ঝাড়ুর চাহিদাও বেশ এবং প্রতিনিয়ত এই চাহিদা বাড়ছে। তবে স্বল্পপুঁজি ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে দরিদ্র এসব শিল্প উদ্যোক্তারা দীর্ঘদিনের এ ক্ষুদ্র প্রয়াসকে বাণিজ্যিক রূপ দিতে পারছেন না।
মাধাইনগর গ্রামের শিল্পী রানী বলেন, রাস্তার পাশে অযত্নে বেড়ে ওঠা বিন্না যা আগাছা হিসাবেই বিবেচিত হয়। সেই বিন্নারফুলই আমাদের জীবিকার মাধ্যম।
বিষমডাঙ্গা গ্রামের বিবানী বলেন, ‘জন্মের পর থেকে আমি বিন্নারফুলের ঝাড়ু তৈরি করে বিক্রি করছি। এই কাজে সন্তানেরা সহায়তা করছে। তিনি বলেন, তাড়াশ উপজেলার ঘরগ্রাম, মাগুরা বিনোদ, সগুনা, নিমগাছি, কাউরাইলসহ বিভিন্ন রাস্তা ও এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে বিন্নারফুল সংগ্রহ করি। এরপর ২-৩ জন মিলে দিনে গড়ে ১শ পিস এর মতো ঝাড়ু তৈরি করি, সবকিছু বাদ দিয়ে ৪শ থেকে ৫শ টাকা আয় হয়। এই আয় দিয়ে কোনোমতে সংসার চালাই।’
তিনি আরও বলেন, আমাদের ভিটামাটি ছাড়া আর কোনো জমি নেই। এই কাজ করার মতো পুঁজিও নেই। ঋণের জন্য বিভিন্ন যায়গায় ঘুড়েছি কিন্তু ঋণ পাইনি।
বিষমডাঙ্গা গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ এর সিনিয়র সহকারি শিক্ষক সুকুমার বসাক বলেন, অনেক পরিবারই বিন্নারফুল দিয়ে ঝাড়ু তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে। বিন্নার ঝাটি বিক্রি করে সংসারের বাড়তি চাহিদা পূরণ করার চেষ্টা করে। বিন্নার ঝাটি দিয়ে ঘরের ছাউনি ও বেড়া দেয়া হয়। বিন্নার ঝাটি দিয়ে ছাউনি দেয়া ঘর শীত ও গ্রীষ্ম উভয় ঋতুতেই আরাম দায়ক। অনেকে সৌখিন ঘরে বিন্নার ঝাটি দিয়ে ছাউনি দেয়। এমনকি বিভিন্ন রিসোর্টে এই ছাউনি ব্যবহার করা হচ্ছে। তাদেরকে যদি ব্যাংক থেকে কম সুদে ঋণ দেয়া যেত, তাহলে এই শিল্পটা আরও বড় হতো।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ