সিরাজগঞ্জের তাড়াশ চলনবিল অধ্যুষিত বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এখন সরিষা ফুলের মহাসমারহ। চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। মধু সংগ্রহের জন্য এসব সরিষা জমিকে বেছে নিয়েছে মৌচাষিরা। মৌমাছির মাধ্যমে ফুলের পরায়গন বৃদ্ধি পায়, এতে সরিষার ভালো ফলনও পাওয়া যাবে বলে কৃষকের প্রত্যাশা।
চলতি বছর প্রায় দুইশ মৌচাষি উপজেলার ১০০ থেকে ১২০টি সরিষাক্ষেত সংলঘ্ন পয়েন্টে তাবু ফেলে মধু সংগ্রহের কাজ করছেন। পয়েন্টগুলোর মধ্যে ঘরগ্রাম, মাকড়শোন, কামারশোন, কুন্দইল, মান্নান নগর, উলিপুর, পাচান, মাগুরা, হামকুরিয়া, মাধাইনগর, ঝুরঝুরিসহ বিভিন্ন গ্রামের পয়েন্ট।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর তাড়াশ উপজেলায় ১১ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। আর এ সকল ক্ষেতের পাশে ভ্রাম্যমাণ মৌচাষিরা ৭ হাজার ৬'শ ৩৯ টি মৌ-বক্স বসিয়ে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ করছেন।
মাগুড়া গ্রামের সরিষাচাষি শাহিন বলেন, সরিষা ফুলের মধু নিতে মৌমাছির এক ফুল থেকে অন্য ফুলে ব্যাপক বিচরন করতে হয়, এতে পরাগায়নও ভালো হয়। তাই সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
মৌচাষি রবিউল জানান, কাঠের ফ্রেমে একটি রানী মৌমাছিসহ ২'শ থেকে ৩'শ মৌমাছি নিয়ে তৈরি হয় একটি মৌবাক্স। আমরা প্রতিদিন সকালে বাক্সগুলো সরিষা ক্ষেতের পাশে রেখে আসি। বিকেলে এগুলো এনে এক বিশেষ প্রক্রিয়ায় মৌমাছি মুক্ত করে ঘুর্ণয়মান ড্রামের সাহায্যে মধু সংগ্রহ করি। প্রতিটি মৌ বাক্স থেকে একবারে ২ কেজি থেকে ৪ কেজি পর্যন্ত মধু সংগ্রহ করা যায়। বেশিরভাগ মৌচাষি এরুপ ১০০ থেকে ১২০ টি বাক্স ব্যবহার করে থাকেন।
মাকড়শোন মাঠে মধু সংগ্রহকারী মৌচাষি মিনহাজ বলেন, এ বছর সরিষার ফুল ভালো হয়েছে তাই মধুও বেশি পাচ্ছি। প্রতি কেজি মধু ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সাতক্ষীরা, সুন্দরবন, ঝলকাঠি, বরিশালসহ দেশে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মৌচাষিরা এখানে মধু সংগ্রহ করছেন। আশা করা হচ্ছে তারা ১২ থেকে ১৫ কোটি টাকার মধু সংগ্রহ করবেন।
তার মতে, মধুর অপার সম্ভাবনাময় এ উপজেলায় আধুনিক পদ্ধতিতে মধু প্রক্রিয়াজাত করণ যন্ত্র স্থাপন করলে মৌচাষিরা অনেক উপকৃত হবেন।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ