চলতি বছরে অতি বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পাবনার ঈশ্বরদীর অনেক কৃষক। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবার শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। এসব সবজি বাজারে ওঠার পর সবজির দাম ও সংকট দুটোই কমবে, বলছেন ক্রেতা এবং বিক্রেতা।
উত্তরের জনপদ ঈশ্বরদী। শীতকালকে বলা হয় শাকসবজির ভরা মৌসুম। সবজির ভান্ডার হিসাবে বিখ্যাত উপজেলাও বলা হয়ে থাকে ঈশ্বরদীকে। চলতি মৌসুমে আগাম শীতকালীন শাকসবজি চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এ উপজেলার কৃষকেরা। বর্তমানে তারা সবজির জমি তৈরি, ক্ষেতে চারা রোপণ ও গাছে আসা সবজি পরিচর্যা, আবার কেউ সবজি বাজারে বিক্রি করছেন। ভোর থেকে কৃষকেরা ফসলের ক্ষেতের পরিচর্য়ায় ব্যস্ত থাকেন।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় এখানকার উৎপাদিত শাকসবজি ঢাকাসহ দেশের সর্বত্র চাহিদা রয়েছে ব্যাপক।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৮২ হেক্টর জমিতে। আর সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লক্ষ্য ৫৮ হাজার ৩১৪ মেট্রিক টন।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক পরিবারের সদস্যরা কাকডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে জমিতে চারা রোপণ, পরিচর্যা, আগাছা পরিষ্কার ও পানি দেওয়াসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নিজেদের চাহিদাই নয়, বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এসব সবজি। ভালো দাম পেতে আগাম শাকসবজির চাষে ঝুকছেন কৃষকেরা। তাই এবছর শীত শুরুর আগেই ফুলকপি, মুলা, বাঁধাকপি, পটল, শিম, টমেটো,গাজর, করোলা, বেগুন ও লাউসহ অন্য শীতকালীন সবজি চাষ শুরু করেছেন।
উপজেলার ৭ ইউনিয়ন ও পৌর হাটবাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতকালীন শাকসবজি।
উপজেলার গোপালপুর গ্রামের রফিক উদ্দিন বলেন, মৌসুমের শুরুতে শীতকালীন সবজির ভালো দাম পাওয়া যায়। এ কারণে শীত শুরু হওয়ার আগেই শীতকালীন সবজির আবাদ শুরু করে দিয়েছি। প্রায় ২০-২৫ বছর থেকে আগাম শাকসবজি চাষ করে আসছি। তবে এবার অতিরিক্ত বৃষ্টিতে সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং জমি তৈরি করতে বিলম্ব হয়েছে।
তিনি এবার ৪ বিঘা জমিতে গাজরের আবাদ করেছেন। গাজরের গাছ বেড়ে উঠছে। আজকে তিনি ৬ জন মজুরকে দিয়ে গাজরের ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কার করছেন।
মুলাডুলি ইউনিয়নে গোয়ালবাথান এলাকার কৃষক চাঁন মিয়া বলেন, সবজি চাষ করে আমার সংসারে স্বচ্ছলতা এসেছে। শাকসবজি বিক্রির জন্য হাটবাজারে যেতে হয় না। ক্ষেত থেকেই পাইকাররা কিনে নিয়ে যায়। দামও ভালো পাওয়া যায়। শীতকালীন প্রায় সব ধরনের শাকসবজি চাষ করি।
উপজেলার একই ইউনিয়নের বাঘহাচলা এলাকার কৃষক কাসেম ব্যাপারী বলেন, এবার ১ বিঘা জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করেছি। সব মিলিয়ে ৪০-৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বাজার চড়া এবং দাম ভালো পেলে ৮০-৮৫ হাজার টাকার মতো বিক্রি করা যাবে।
উপজেলা কৃষি কমকর্তা কৃষিবিদ মিতা সরকার বলেন, উপজেলার বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি চাষ কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় সে লক্ষ্যে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কৃষি বিভাগ সব সময় তাদের পাশে আছে।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ