চাঁদপুরের কচুয়ার কাদলা ইউনিয়ন পরিষদের পশ্চিম পাশে মনপুর গ্রামে নার্সারি গড়ে তুলেছেন সোহাদ মজুমদার। নিজের জমি না থাকায় বর্গা নিয়ে বড় ভাইয়ের সাথে প্রথমে যৌথভাবে নার্সারি করেন। পরে আলাদাভাবে পাঁচ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে গড়ে তুলেছেন এক বৃহৎ নার্সারি।
উপজেলার কাদলা ইউনিয়নের মনপুরা গ্রামের বাসিন্দা সোহাগ মজুমদার। তার রয়েছে স্ত্রী ও এক মেয়ে। জানা গেছে, উপজেলায় সোহাগের নার্সারিই সবচেয়ে বড়। তার নার্সারিতে কাজ করছেন দুইজন শ্রমিক।
নার্সারিতে রয়েছে ফলের মধ্যে থাই পেয়ারা, বারি ফোর মাল্টা, নাসপাতি, আপেল কুল, বাউ কুল, পেয়ারা, আমের কলমি, লিচুর কলমি, আমলকি, বহরা, হরতকি, জামের কলমিসহ প্রায় ৫০-৬০ রকমের কলমি চারা। এ ছাড়া ফুলের মাঝে বিশেষ করে রয়েছে, গোলাপ, ড্রাগন ফুল, নাইট কুইন, ক্যাকটাস, গাঁদাফুল, রজনীগন্ধা, সূর্যমুখী সহ প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ রকমের ফুল। বাহারী এই ফুল-ফলের সমারোহে গড়ে উঠা নার্সারিতে সোহাগ মজুমদার খুঁজে নিয়েছেন নিজের ভবিষ্যৎ। বর্তমানে তার নার্সারিতে রয়েছেন ৯ লাখ টাকার পুজিঁ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যার কারণে নার্সারিতে তেমন একটা বিক্রি নেই। তবে প্রতিকূলতা কাটিয়ে আবারও বিক্রির ধুম পড়বে আশা প্রকাশ করছেন সোহাদ।
এ নার্সারী থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে কুরিয়ারের মাধ্যমে বিভিন্ন ফলজ, বনজ ও ফুলের চারা সরবরাহ করা হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আমগাছে লিচু, লিচু গাছে জাম এর কলমি ডাল গজিয়েছে। গুলবাহার-মনপুরা সড়কের পাশেই গড়ে ওঠায় সারাদেশের আনাচে-কানাচে মানুষ পাইকারি ও খুচরা দামে ওখান থেকে গাছ কিনে নিয়ে যায়। বর্তমানে তিনি ওই নার্সারিতে ৪০ শতাংশ চারা উৎপাদন করছেন। আশা করছেন ভবিষ্যতে তিনি ৬০ শতাংশ চারা উৎপাদন করবেন।
নার্সারি উদ্যোক্তা সোহাগ মজুমদার জানান, তাদের কাছ অনেকে কলমি চারা কিনে নিয়ে তারাও আজ অনেক লাভবান। কেউবা প্রতিষ্ঠিত ফলের ব্যবসায়ী হয়েছেন। প্রায় ২৫ বছর ধরে হাতে কলমে আর কঠোর পরিশ্রমে গড়ে উঠা মজুমদার নার্সারিটি। জমি কিনে আরো বড় পরিসরে গড়ে তুলবেন নার্সারি। সারাদেশসহ তার কলমি গাছ রপ্তানি হবে, সেজন্য দরকার সরকারি পৃষ্টপোষকতার। দীর্ঘদিনের নার্সারির কাজের অভিজ্ঞতায় সোহাগ আজ অনেকের কাছেই একটি অনুপ্রেরণার নাম।
শ্রমিক মহিন উদ্দিন মিয়াজী বলেন, আমি এ নার্সারিতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। তা দিয়ে আমার পরিবারের জীবিকা নির্বাহ হয়। এখানের চারা স্বল্পমূল্যে বিক্রি করা হয়।
কচুয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. মেজবাহ উদ্দিন বলেন, সোহাগ মজুমদারের মতো কেউ যদি নার্সারি ও আয়বর্ধক উপার্জন করতে চায় তাহলে তাদেরকে কৃষি বিভাগ সার্বিক সহযোগিতা করবে।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ