চলনবিলের পানি নামছে, মিলছে ছোট মাছ। আর মাছ খেতে চলনবিলে আসছে ঝাঁকে ঝাঁকে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। পাখির এমন অবাদ বিচরণে মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে শিকারিদের। তারা এসব পাখিদের শিকার করার জন্য পাগল হয়ে পড়েছে। শিকার করতে ব্যবহার করছে বিভিন্ন পদ্ধতি, এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য, বিষটপ, জাল ও পড়শি। এগুলোতে আটকেই শিকারির খাঁচায় বন্দি হচ্ছে এসব পাখি। এতে একদিকে যেমন জীববৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে, অপরদিকে ফসলি জমিতে ক্ষতিকর পোকার আক্রমণও বাড়ছে।
চলনবিল রাজশাহী বিভাগের পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার ৯টি উপজেলার সমন্বয়ে বিস্তৃত।
স্থানীয়রা জানান, চলনবিলে এখন বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখা যাচ্ছে। এরমধ্যে উল্লেখ যোগ্য পাখি হলো, সাদা বক, মাছরাঙা, ভারই, ঘুঘু, বালিহাঁস ও রাতচোঁরা। একশ্রেণির শিকারিরা রাতে এবং ভোরে এসব পাখি শিকার করছে। আইনের তোয়াক্কা না শিকার করা পাখি স্থানীয় হাট-বাজারে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে। এটা দেখার জন্য প্রশাসনের কাউকেও চোখে পড়ছে না।
তাড়াশ উপজেলার ধাপতেতুলিয়া, চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা, সিংড়া উপজেলার ডাহিয়া, গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দাসহ বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে পরিযায়ি এসব পাখি শিকার করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পেশাদার পাখিশিকারি জানান, বাজারে পাখির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তাই কোনোমতে ধরতে পারলেই বিক্রি করতে সমস্যা হয় না। প্রতিজোড়া পাখি সাদা বক ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, চখাচখি ১০০ থেকে ১২০, কাইয়ুম পাখি ৩৫০ থেকে ৪০০ ও বালিহাঁস ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। ফলে বেশি লাভের আসায় অনেকেই মাছ ধরা বাদ দিয়ে পাখি শিকার করছেন। আর এসব দুর্গম এলাকাতে প্রশাসনের কোনো লোকজনও তেমন আসেন না।
তাড়াশ ডিগ্রি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবুল হাসিম জানান, পাখি ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। পাখিরা শুধু প্রকৃতির শোভা বর্ধনের সঙ্গে ভারসাম্যও রক্ষা করে। পাখি শিকার বন্ধে আইন থাকলেও প্রয়োগ না থাকায় চলনবিল থেকে নানা প্রজাতির পাখি বিলুপ্ত হচ্ছে। এভাবে পাখি শিকার বন্ধে শাস্তির পাশাপাশি প্রয়োজন সচেতনতামূলক প্রচারণা।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ