ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

হারিয়ে যেতে বসেছে বাঁশ-বেত শিল্প, দুর্দিনে শিল্পীরা

প্রকাশনার সময়: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮:০৮ | আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২০:৫৪

বর্তমানের বিভিন্ন ধরনের ধাতব শিল্পের আগ্রাসনের কবলে পড়ে বাঁশ ও বেত শিল্প ক্রমে মুখ থুবড়ে পড়ছে। লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে কর্মরত শত শত বাঁশ ও বেত শিল্পীর জীবনে নেমে এসেছে দুর্দিন।

স্থানীয় বাঁশ-বেত শিল্পীরা জানান, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বাঁশ-বেত দিয়ে তৈরি কুলা, চালুন, মোড়া, বই রাখার তাক, চেয়ারসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী কালের বিবর্তনে হারানোর পথে। এ শিল্প রক্ষায় কাউকে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না। ফলে বাপ-দাদার আমল থেকে চলে আসা এ শিল্পটি ধরে রাখতে শিল্পীরা অনেক ত্যাগ, কষ্ট, দুঃখ সহ্য করে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে বাঁশ ও বেতের ঝাড় উজাড় হওয়ায় আর কত দিন ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পটি টিকে থাকবে।

তারা আরও জানান, বিভিন্ন ধরনের ধাতব পদার্থ দিয়ে বর্তমানে বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্রী তৈরি করা হচ্ছে। এসব দ্রব দীর্ঘ স্থায়িত্ব হওয়ার কারণে বাঁশ ও বেতের তৈরি দ্রব্য সামগ্রীর চাহিদা দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। যার ফলে ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পটি বর্তমানে তোপের মুখে রয়েছে।

উপজেলার কাকিনা বাজার এলাকার শফিকুল ইসলাম নামের এক বাঁশ-বেত শিল্পী জানান, বর্তমানে বিভিন্ন স্থান থেকে বাঁশ আমদানিতে পরিবহন ব্যয় বেড়েছে। এ ছাড়া বাঁশের উৎপাদন হ্রাসের কারণে ছোট একেকটি বাঁশ ২০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। আগে বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের শৌখিন সামগ্রী তৈরি হলেও বর্তমানে খাঁচা ও চাটাই তৈরি করা হচ্ছে। দিনে যে টাকা আয় হচ্ছে তা দিয়ে সংসার চালানোই খুব কষ্ট হচ্ছে।

কালীগঞ্জে বালাপাড়া গ্রামের আবু তালেব জানান, লালমনিরহাট থেকে আমদানি করা প্রতি বাঁশ ২০০ টাকা দরে কিনে বেড়া তৈরি করা হচ্ছে। বাজারে হাত প্রতি প্রায় ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর বাঁশের ভেতরের অংশ দিয়ে তৈরি অপেক্ষাকৃত কম স্থায়িত্বের খাঁচা হাত প্রতি প্রায় ১২০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিটি বাঁশ কিনে আনার পর দিনভর মেহনত করে খলপার বেড়াসহ অন্যান্য বাঁশজাত সামগ্রী প্রস্তুত করা হলেও উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে কিছু মুনাফা যোগ করে বাজারে বিক্রি করতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, কালীগঞ্জে আশপাশের বাঁশঝাড় উজাড় করে বসতভিটা তৈরি করায় বাঁশ-বেতের সংকট দিন দিন বাড়ছে। পাশাপাশি বাজারে উচ্চ দামে বাঁশ ও বেত ক্রয় করে বিভিন্ন ধরনের দ্রব্য সামগ্রী তৈরি করে বাজারে উপযুক্ত দামে বিক্রি করতে না পেরে তারা মহাবিপাকে পড়েছেন ।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ