ঢাকা, শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪, ২২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জিলহজ ১৪৪৫

পাটের সবুজ পাতায় দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন

প্রকাশনার সময়: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯:৩০

ময়মনসিংহের নান্দাইলে ফসলের মাঠে বাতাসে দুলছে পাটের সবুজ কচি ডগা। যেন সমুদ্রের ঢেউ দোল খাচ্ছে। দুচোখ জুড়িয়ে যায় পাটের কচি ডগার ঢেউ দেখে। পাটের সবুজ পাতায় দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন।

অল্প খরচ ও কম সময়ে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকদের মাঝে পাট চাষের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২ বছর ধরে পাটের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা পাট চাষ করে বেশ লাভবান হয়েছে। এবার উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় বিভিন্ন গ্রাম ও প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের জমিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ব্যাপকভাবে সোনালি আঁশের আবাদ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১১৭৬ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে দেশি, মেসতা, কেনাফ, তোষা (বিজেআরআই রবি ৮) জাতীয় পাট আবাদ হয়েছে বেশি।

দেশের হাট-বাজারে পাটের দাম অধিক। কম খরচে পাটের অধিক ফলন হওয়ায় পাটের সুদিন ফিরে আসবে বলে মনে করেন স্থানীয় পাট চাষিরা। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তারা।

সরেজমিনে উপজেলার চরকোমরভাঙ্গা, বীরকামট খালী, লোহিতপুর, চরকামট খালী, হাটশিরা এবং কালিবাড়ির চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষকদের মাঠে মাঠে চোখ জুড়ানো সবুজের সমারোহ। চারদিকে পাটক্ষেত। সামান্য বাতাসে দুলছে পাটের সবুজ কচি ডগা।

উপজেলার বীরকামট খালী গ্রামের কৃষক বাবুল মিয়া জানান, চলতি মৌসুমে ৪০ শতক জমিতে পাট চাষ করেছেন তিনি।

একই গ্রামের কৃষক শরাফ উদ্দিন জানান, এক বিঘা জমিতে পাট চাষে প্রায় ৭-৮ হাজার টাকা খরচ হয়। পাট উৎপাদন হয় প্রায় ৮-১০ মণ। যার বাজারদর সর্বনিম্ন ২০-২৫ হাজার টাকা।

এ ছাড়া বিঘা প্রতি প্রায় ২ হাজার টাকার পাটকাঠি পাওয়া যায়। গত বছর ভরা মৌসুমে প্রতি মণ পাট ২ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও ক্রমশই পাটের দাম বাড়তে থাকে। গত বছর সর্বশেষ ৪ হাজার টাকা মণ পাট বিক্রি হয়েছে। ফলে যারা পাট বিক্রি না করে রেখে দিয়েছিলো তারা বিঘা প্রতি প্রায় ২০-২৫ হাজার টাকা লাভবান হয়েছেন।

পাট চাষি আ. কাদির, রশিদ, মালেক, শহীদ, শামছ উদ্দিন, হাসিম উদ্দিন, জামাল উদ্দিন, মুজিবুর রহমান, আলাল, সমেদ আলী জানান, অন্যান্য কৃষি ফসলের তুলনায় পাটের আবাদে খরচ কম হয়। পাটের বাজার দামও বেশি। তাই আমরা এই বছর অধিক জমিতে পাটের আবাদ করেছি।

নান্দাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন, চলতি মৌসুমে নান্দাইলে ১১৭৬ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। কৃষকদের বিভিন্ন ধরণের পরামর্শ, প্রশিক্ষণ ও মাঠ পর্যায়ে দেখাশোনা করায় ফলন ভালো হয়েছে।

এ ছাড়া সরকারি বিভিন্ন প্রণোদনা ও ভর্তুকি কৃষকদের মাঝে পৌঁছে দেয়ায় তারা আরও বেশি উদ্বুদ্ধ হয়েছে। বাজারে পাটের চাহিদা ও মূল্য বৃদ্ধির থাকার কারণে পাট চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানান তিনি।

নয়া শতাব্দী/এনএইচ/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ