ঢাকা, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তীব্র গরমে কদর বেড়েছে তালের শাঁসের

প্রকাশনার সময়: ১৯ মে ২০২৪, ১৬:৪৬

প্রচণ্ড তাপদাহে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে এ বছর তালের শাঁসের কদর বেড়েছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ার ব্যবসায়ীরা গ্রামগঞ্জ থেকে তাল সংগ্রহ করে সড়কের পাশে ও অলিগলিতে বিক্রি করছেন। এতে শিশু কিশোরসহ সব বয়সী মানুষেরা ফরমালিন মুক্ত এ ফল খেয়ে তাপদাহের মধ্যে খুঁজে পাচ্ছেন প্রশান্তি।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পুমদী, হোসেনপুর, সিদলা, গোবিন্দপুর, জগদল, হাজিপুর, সূরাটি বাজারে ও রাস্তার মোড়ে ভ্যান গাড়িতে করে তালের শাঁস বিক্রি করতে দেখা গেছে বিক্রেতাদের। সেই সঙ্গে দেখা গেছে ক্রেতাদেরও উপচে পড়া ভিড়।

ক্রেতারা বলছেন, গত বছরের থেকে এবারে তালের শাঁসের দাম অনেকটাই বেশি। এরপরও মৌসুমি ও সুস্বাদু ফল হওয়ায় এর প্রতি আগ্রহের কমতি নেই তাদের। প্রচণ্ড তাপদহে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে তালের শাঁসের কদর বেড়েছে। মানুষ শরীরে পুষ্টির চাহিদা মেটাতে তালের শাঁস কিনে খাচ্ছেন। দাম কিছুটা বেশি হলেও সে দিকে তাকাচ্ছেন না ক্লান্ত ও পরিশ্রমী মানুষগুলো। শহরের বেশির ভাগ শ্রমজীবী মানুষের কাছে তালের শাঁসের কদর বেশি।

তালের চাহিদা থাকায় বিচি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। বড় তাল প্রতি বিচি শাঁস ৮টাকা, তিন বিচি তালের শাঁস বিক্রি হচ্ছে ২৪ টাকা। আবার ছোট তালের বিচির শাঁস ৫ টাকা হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা দামের দিকে না তাকিয়ে স্বাছন্দে কিনে নিচ্ছেন।

হোসেনপুর বাজারে এলএসডি গোডাউনের সামনে তাল শাঁস বিক্রেতা রিকসন বলেন, গ্রাম থেকে তাল ক্রয় করে ভ্যানে গ্রামগঞ্জে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করি। প্রতি পিস তাল কিনতে হয় প্রকার ভেদে ৮ থেকে ১০ টাকা। বিক্রি করি ১৫ থেকে ২০ টাকা। গত ১৫ দিন ধরে বিক্রি করছি। এতে দৈনিক ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। আয় যেমন কষ্টও তেমন।

তালের শাঁস বিক্রেতা কালাম বলেন, তাল যখন কাঁচা থাকে, তখন বাজারে এটা পানি তাল বা তালের শাঁস হিসেবে বিক্রি হয়। প্রতিটি তালের শাঁস আকার ভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হয়। প্রতিটি তালের ভেতর দুই থেকে তিনটি শাঁস থাকে।

জগদল বাজারে তালের শাঁস বিক্রেতা নাজমুল বলেন, ভ্যানে করে বিভিন্ন বাজারে এই ব্যবসা করি আমি। দৈনিক ৫০০ টাকা থেকে হাজার টাকাও ব্যবসা হয়।

জগদল বাজারে আল আমিন ভূঁইয়া বলেন, বাজারের অন্য সব ফলে ফরমালিন বা ক্যামিকেল থাকলেও তালের শাঁসে তা মেশানো থাকে না। এতে শরীরের ক্লান্তিও দূর হয়। তাই এই গরমে আমি তালের শাঁস খেয়ে থাকি।

পুমদী এলাকায় সোহেল রানা বলেন, একসময় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অনেক তালগাছ ছিল। প্রতি বছর শত শত তালগাছ কেটে গৃহস্থালি, ইট পোড়ানো এবং জ্বালানিসহ নানা কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়া গাছের অজ্ঞাত রোগ, প্রয়োজনীয় পরিচর্যা এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বহু তালগাছ অকালে মরে যাচ্ছে।

এদিকে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধে এই গাছ সংরক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তানভীর হাসান জিকু বলেন, তালের শাঁসের অনেক উপকারিতা রয়েছে। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ আছে। তালের শাঁস একটি আশযুক্ত খাবার। এ শাঁস খেলে কোলন ক্যান্সারের সম্ভাবনা কম থাকে। পরিস্কার পরিছন্নভাবে না খেলে আবার ডায়েরিয়ারও ঝুঁকি থাকে।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ