কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে পতিত জমিতে পারিবারিক পুষ্টি বাগান গড়ে উঠছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কারিগরি সহযোগিতায় বাগান গড়ে তুলেছেন স্থানীয় গৃহিণীরা। ফলে পরিবারে প্রতিদিনের পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত সবজি বাজারে বিক্রি করে বাড়তি উপার্জন করে লাভবান হচ্ছেন স্থানীয় গৃহিণীরা।
উপজেলার কৃষি দপ্তর বলছে, পতিত জমিতে পুষ্টি বাগান গড়তে পরিবারগুলোকে বিনামূল্যে চারা- বীজসহ অন্যান্য উপকরণ দেওয়া হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পারিবারিক পুষ্টি বাগান প্রকল্পের আওতায় এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। পতিত জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফল ও শাক সবজির চাষ করছেন তারা। সরকারের দেওয়া বিনামূল্যে সবজি চারা-বীজ পেয়ে কৃষকদের পরিবারের সদস্যরা বাড়ির উঠান ও আশপাশের খালি জায়গায় সবজি চাষ করছেন। বাজারে ফল ও সবজি বিক্রি করেও তারা বাড়তি টাকা আয় করছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণের তথ্য অনুযায়ী, হোসেনপুরে ৫৬৩টি পরিবার সরকারের কারিগরি সহযোগিতায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান গড়ে তুলেছেন। তারা প্রত্যেকেই ১ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ পতিত জমিতে পুষ্টি বাগান করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পরিত্যক্ত জমিতে পুষ্টি বাগান গড়ে তোলার জন্য প্রত্যেক পরিবারকে বিনামূল্যে মুলা, লালশাক, পাটশাক, পুঁইশাক, লাউ, পালংশাক, শিম, ডাটা, ধনিয়া ও ঘিমা কলমি শাকসহ নানা প্রজাতির সবজির বীজ-চারা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বাগানের মাটি উর্বর আর ফলনে পোকাদমনে ৫ কেজি ইউরিয়া, জৈব সার ২০ কেজি, ১টি ঝাঁঝর, বীজ সংরক্ষণের পাত্রের পাশাপাশি ঘেরাবেড়ার জন্য একটি নেট এবং এছাড়াও ২০ প্রকার বীজ, ৬টি গাছের চারা দেওয়া হয়।
উপজেলার মাধখলা গ্রামের গৃহিণী মোছা. রেখা, তার বাড়ির পাশের পতিত জমিতে পুষ্টি বাগান গড়ে তুলেছেন। তিনি বলেন, কৃষি অফিস থেকে সার, নেট ও ৭ প্রকারের সবজির বীজ দিয়েছে। এই সবজি বিক্রি করে ১০ হাজার টাকা আয় করেছি। দুটি ছেলে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাচ্ছি।
উপজেলার চরকাটি হারি, বীর হাজিপুর, মাধখলা গ্রামের কমলা খাতুন, সেলিনা আক্তার, পারভিন আক্তারসহ অনেকেই জানান, বাড়ির পাশে কিছু জায়গা দীর্ঘদিন ধরে পতিত ছিল। সেই পতিত জায়গায় কৃষি অফিসের সহযোগিতায় সবজির বাগান করেছি। এতে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি উপার্জন করতে পারছি।
জিনারী ইউনিয়নের বীরকাটি হারী গ্রামের সানজিদা বেগমের বাড়ির পিছনের ডোবা ভরাট করে চলতি বছর জমিতে সবজি চাষ করে ৫ হাজার টাকা আয় করেছেন।
উপসহকারী কৃষি অফিসার মুদাসিল হায়দার আলমগীর বলেন, বসতবাড়িতে পতিত জমিকে ব্যবহার করে পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হয়েছে, যা থেকে গৃহিণী লাভবান হচ্ছে এবং সারা বছর সবজি পাওয়া যাচ্ছে।
উপজেলার কৃষি কৃষি কর্মকর্তা এস এম শাহজাহান কবির বলেন, পতিত জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনতে সরকারি একটি প্রকল্পের মাধ্যমে উপজেলা বিভিন্ন জায়গায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে স্থানীয় কৃষাণ কৃষাণীরা লাভবান হচ্ছেন। কৃষকরা ফল ও সবজি চাষে সমস্যার মুখোমুখি হলে তাদের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছি আমরা।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ