গত বছরের চেয়ে প্রায় দুইশত হেক্টরেরও বেশি জমিতে সরিষার আবাদ হচ্ছে। ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় নীলফামারীর ডোমারে সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমন না হওয়ায় এবার সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৬৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হচ্ছে। উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে চারিদিকে হলুদের সমারোহ। এবার অনেক পতিত জমিতেও সরিষার চাষাবাদ হয়েছে।
বড় রাউতা গ্রামের কৃষক তাইজুল ইসলাম, বলেন ‘সাধারণত প্রতি বছর আমন ও ইরি এই দুই ফসলই আমরা আবাদ করে থাকি। বাকি বেশিরভাগ সময় জমি পড়ে থাকত। এবারে সেই পতিত জমিতে আমরা সরিষার আবাদ করছি। এতে করে এখন থেকে একই জমিতে তিনবার ফসল আবাদ করা সম্ভব হবে।
কৃষকরা বলেন, সরিষা রোপণ থেকে শুরু করে পরবর্তীতে বাড়তি তেমন কোনো খরচ নেই। শুধু জমিতে সার প্রয়োগ করতে হয়। এতে বাড়তি কোনো সেচ দিতে হয় না। যার ফলে সরিষা চাষে কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
সরিষার গাছগুলো জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয়, ফলে বাড়ির রান্না-বান্নার কাজে জ্বালানির চাহিদা মেটে। এছাড়া মাঠ থেকে সরিষা উঠানোর পরে সেই জমিতেই বোরো ধান রোপণ করা হবে। এতে বোরো ধান চাষাবাদে সারের খরচও খানিকটা কম হয়। এবারের আবহাওয়া সরিষা চাষের অনুকূল থাকায়, সরিষাতে রোগ-বালাইয়ের তেমন আক্রমণ নেই। গত বছরে প্রতি বিঘা জমিতে ৬ /৭ মন করে সরিষার ফলন হলেও এবার বাড়তি ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রফিকুল আলম বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৯৬৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। আমন ধান কাটার পরে সেই জমিতে সরিষার আবাদ করা যায়। পরবর্তীতে একই জমিতেই চাষ করা যায় বোরো ধানের। এতে কৃষকরা একটি বোনাস ফসল হিসেবে সরিষার আবাদ করছেন। সরিষা চাষে খরচ অত্যন্ত কম, আবার ফলন ভালো। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নানারকম পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি আমরা। এবার প্রায় দুই হাজার কৃষককে সরিষার বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। তেলের ঘাটতি পূরণে সরিষা আবাদের কোনো বিকল্প নেই বলেও তিনি জানান।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ