ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

সুস্বাদু ভাপা পিঠা মানেই ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান

প্রকাশনার সময়: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:১১

গ্রাম বাংলায় শীতের পিঠা এক গ্রামীণ ঐতিহ্য। শীত মানেই পিঠা-পুলির ঘ্রাণ। কুয়াশা মোড়ানো শীতের হিমেল হাওয়ায় ধোঁয়া ওঠা ভাপা পিঠার স্বাদ না নিলে যেন তৃপ্তি মেটে না অনেকের। শীতের মৌসুমে গ্রামেগঞ্জে রকমারি পিঠার দেখা মেলে।

শীতের পিঠার মধ্যে ভাপা পিঠা একটি অন্যতম পিঠা। ভাপা পিঠা আবার হরেক রকম পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়। কখনো মিষ্টি ভাপা, কখনো ঝাল ভাপা। শীত এলেই যেন শুরু হয় হরেক রকম সুস্বাদু পিঠার বাহারি আয়োজন।

শীত এলেই শহর ও গ্রামীণ হাটবাজারে নানারকম পিঠা না পাওয়া গেলেও ভাপা পিঠার দেখা মিলবেই। এর ব্যতিক্রম ঘটেনি ঠিক শেরপুরের নালিতাবাড়ীতেও। নালিতাবাড়ী শহরের আনাচে-কানাচে অনেক পিঠার দোকান দেখা যাচ্ছে। তবে ক্রেতাদের ভিড় যেন শুধু ভ্রাম্যমাণ একটি ভাপা পিঠার দোকানকে ঘিরেই।

ঠিক সন্ধ্যা হতেই নালিতাবাড়ী শহরে দেখা মিলছে গাজীবর রহমান নামের এক পিঠা বিক্রেতার। গাজীবর রহমানের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলাতে কিন্তু প্রত্যেক শীতের মৌসুমে তিনি দেশের একেক জায়গায় গিয়ে পিঠা বিক্রি করে থাকেন। এবার তিনি নালিতাবাড়ীকে পিঠা বিক্রির স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

এক চাকা বিশিষ্ট ব্যতিক্রমী একটি কাঠের ঠেলাগাড়িতে একটি চুলা, তিনটি পাত্রে আলাদা আলাদা করে গুড়, নারকেল ও চালের গুঁড়ো নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন ভাপা পিঠা বিক্রিতে। আর তাকে ঘিরে ভিড় করে রেখেছে ভাপা পিঠা প্রেমীরা। একটি করে পিঠা চুলা থেকে তৈরি করে না রাখতে রাখতেই সেই পিঠা হাতে নিয়ে মনের আনন্দে খাচ্ছেন তারা। এতোই ভিড় জমে তার পিঠার গাড়ির সামনে যেন পিঠা তৈরি করতে করতে অনেকটা ক্লান্ত গাজীবর রহমান।

পিঠা বিক্রেতা গাজীবর বলেন, আমি প্রতিদিন সাত থেকে আট কেজি চালের গুঁড়োর পিঠা বিক্রি করে থাকি। এর জন্য আমাকে নালিতাবাড়ী শহরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে অবস্থান করতে হয়। সন্ধ্যার আগে আমি বের হই পিঠা বিক্রিতে। মাঝে মাঝে এতোই ক্রেতাদের ভিড় জমে যে সাত থেকে আট কেজি চালের গুঁড়ো শেষ হতে বেশি সময় নিতে হয় না আমাকে। প্রায় সব বয়সের লোকেরাই আমার নিকট হতে পিঠা নেয় । তবে তরুণ ক্রেতার পরিমাণটা বেশি। অনেক ক্রেতা আছে নিজ বাসায় পরিবারের সবার জন্য পিঠা নিয়মিত আমার এখান থেকেই নিয়ে যায় এবং বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের ছাত্রছাত্রীরা কোচিং ছুটির শেষে বাড়িতে যাওয়ার আগে আমার এই পিঠার গাড়ির সামনে ভিড় করে। আমি প্রতি কেজি চালের গুঁড়ো দিয়ে চব্বিশ থেকে পঁচিশটি পিঠা বানাতে পারি। প্রতি পিঠা বিক্রি করি মাত্র দশ টাকায়।

পিঠা খেতে এসে রাকিব ও মানিক বলেন, আমরা ভাপা পিঠা অনেক খেয়েছি কিন্তু গাজীবরের পিঠাটা বেশ সুস্বাদু। বিশেষ করে তার ব্যতিক্রমী নারকেল কুড়ানোটা এই পিঠার প্রতি বেশি আকৃষ্ট করে সবাইকে। আর গুড়টা এমনভাবে মেশানো হয় যেন গুড়টা পুরো পিঠায় ছড়িয়ে যায় সুন্দরভাবে। তার ভাপা পিঠা তৈরির চালের গুঁড়োতে হয়তো কোনো বিশেষত্ব রয়েছে। তবে দারুণ মজার হয় তার পিঠাগুলো। প্রত্যেকটা পিঠার স্বাদ একই রকম হয়। প্রত্যেকদিন অনেক ভিড় হয় তার এই ভ্রাম্যমাণ দোকানটিতে। অনেক লম্বা সময় অপেক্ষার পর পিঠা খেতে হয় আমাদের মাঝে মাঝে।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ