ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত জবই বিল

প্রকাশনার সময়: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:২৭

নওগাঁর সীমান্তবর্তী উপজেলা সাপাহার। উপজেলা সদর থেকে মাত্র ৯ কিলোমিটার পশ্চিমে গেলে দেখা মিলবে দৃষ্টিননন্দন জবই বিল। জবই বিলে এখন নানান দেশ থেকে আসা অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত। প্রতিনিয়ত খাবারের খোঁজে ও শীত নিবারণের জন্য এই বিলে ঝাঁক বেঁধে আসছে অতিথি পাখি। ঐতিহ্যবাহী এই বিলটি যেন হাজার হাজার অতিথি পাখির নিরাপদ বিচরণ ভূমি। যা অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর এক প্রাকৃতিক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।

স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বিলের পানি কমতে শুরু করার ফলে প্রতি বছর শীতের মৌসুমে বিভিন্ন প্রজাতির হাজারো নতুন পাখির আনাগোনা শুরু হয় জবই বিলে। জবই বিল ও পার্শ্ববতী পুনর্ভবা নদীতে জলকেলীতে মুখরিত পরিবেশ যেন এক অপূর্ব দৃষ্টিনন্দিত স্থানে পরিণত করেছে। এসব স্থানে এই পাখিরা দিনরাত বিচরণ করছে। প্রতিদিন পাখির কিচির-মিচির শব্দে আর কল-কাকলীতে মুগ্ধ হচ্ছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।

জবাইবিল ও পুনর্ভবা নদীতে অতিথি পাখিদের জন্য পর্যাপ্ত খাবার থাকার ফলে প্রতি বছর শীতের মৌসুমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছুটে আসে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে হাজার হাজার পাখি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পাখি হলো- শামুকখোল, সাদা বক, বালিহাঁস, চাহা, রাজহাঁস, পাতি সরালীসহ নানা প্রজাতির নাম না জানা পাখি। পাখির কলতানে সারাক্ষণ মুখরিত থাকে পুরো বিল এলাকা। মূলত এই বিলের ছোট ছোট মাছ আর শামুকই পাখির প্রধান খাবার।

জবইবিল জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সমাজকল্যাণ সংস্থার সভাপতি সোহানুর রহমান সবুজ জানান, বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী এই বিলে পাতি-সরালি, লাল ঝুটি-ভুতিহাস, গিরিয়া হাস, তিলি হাঁস, টিকি হাঁস, পিয়াং হাঁস, ঠেঙ্গি হাঁস, চা পাখি, বেগুনি বক, বাজলা বক, শামুখ খোল, মাছ মুরাল, সাপ পাখি, চখা চখি, হরেক রকম হাঁসের আনাগোনা শুরু হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে বিলটি পাখির সমাহারে সারা বিল ভরে উঠবে।

তাদের জরিপ মতে, গত ২০১৯ সালে এবিলে দেশি-বিদেশি মিলে মোট পাখির সংখ্যা ৫ হাজার ৫৯৩টি, ২০২০ সালে ৭ হাজার ৬৮৩টি, ২০২১ সালে ৯ হাজার ৭১২টি এবং ২০২২ সালে বিলে মৎস্য শিকারীদের ব্যাপক দাপাদাপিতে পাখির সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৬৯২টিতে। ২০২৩ সালের পাখি জরিপ কাজ চলমান প্রক্রিয়ায় রয়েছে বলে জবই বিল জীববৈচিত্র্য সংস্থার সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান জানিয়েছেন।

এলাকাবাসী জানায়, বর্ষার শেষ ভাগে বিলে পানি কমতে শুরু করায় ফসলি জমি পানির নিচ থেকে বের হয়ে আসে আর ওসব জমিতে স্বল্প পরিমাণ পানি থাকায় ছোট মাছ, শামুক, পোকা-মাকড়ের আমদানি বেশি হয়। সেসব খাওয়ার জন্য নানা ধরনের পাখি ঝাঁক বেধে ছুটে আসে এই জবাই বিলে। যার ফলস্বরূপ জবাই বিল এলাকা হয়ে ওঠে মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক লীলার এক অভয়াশ্রম। এসব অতিথি পাখি যাতে কোনো শিকারীর কবলে না পড়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট এমনটাই আশাবাদী এলাকার প্রকৃতিপ্রেমীরা।

খাদ্যমন্ত্রালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত খাদ্য মন্ত্রী বাবু সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি সাপাহার উপজেলার জবই বিলটিকে একটি ঐতিহ্যবাহী পর্যটক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে পদক্ষেপ হাতে নিয়েছেন বলে উপজেলা প্রশাসন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ