নড়াইল শহরের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে বসেছে ভ্রাম্যমাণ শীতের পিঠার দোকান। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত এসব পিঠার দোকানে ভিড় লেগেই থাকে। এতে পিঠা বিক্রি করে ভালো আয়ও করছেন মৌসুমি পিঠা বিক্রেতারা।
বিকেল থেকেই নড়াইল শহরের মুচিপোল, রুপগঞ্জ, চৌরাস্তা, হাতিরবাগান, বাঁধা ঘাট, পুরাতন বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন মোড়ে পিঠার দোকান মেলতে শুরু করেন দোকানিরা। সূর্য অস্ত যেতে যেতেই মাটির চুলায় কেউ তৈরি করছেন ভাপা পিঠা, আবার কেউ তৈরি করছেন চিতই পিঠা।
চিতই পিঠার সঙ্গে মিলছে সরিষা, ধনেপাতা, কালোজিরা ও শুটকিসহ নানান রকমের ভর্তা। রকমভেদে ৫ থেকে শুরু করে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব পিঠা। সন্ধ্যা থেকে পিঠার স্বাদ নিতে আসা ক্রেতাদের ভিড় থাকে রাত ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত। রীতিমতো সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে পিঠা কিনতে হয় তাদের।
পিঠা খেতে আসা হাসিব বলেন, প্রতিবছরই যখন শীত পড়ে নড়াইলের বিভিন্নস্থানে রাস্তার পাশে বিভিন্ন ধরনের পিঠা বিক্রি হয়। আজ আমরা আসছি পিঠা খেতে। বেশ ভালো লাগছে। সারা দেশের মধ্যে নড়াইলের পিঠা ও মিষ্টির ঐহিত্য আছে। না খেলে আসলে বোঝা যায় না।
তাসিন বলেন, শীতকালে যখনই সময় পাই পিঠা খেতে আসার চেষ্টা করি। এখানের পিঠা আমার কাছে বেস্ট লাগে। পিঠায় মনে হয় স্পেশাল কিছু আছে। সব পিঠার মধ্যে চিতই পিঠাটা একটু বেশি ভালো লাগে। এই পিঠার সঙ্গে যে ভর্তাগুলো দেয় সেগুলা সবসময় খাওয়া হয় না। এখানে এলে সেটা খেতে পারি এজন্য ভালো লাগে।
বর্ষন বলেন, শীত মৌসুমে সারা শহরজুড়ে ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান বসে। দেখে মনেহয় যেন পিঠার উৎসব হচ্ছে। এ সময় আমরা নিয়মিত আসি পিঠা খেতে। পরিবারের জন্য নিয়ে যাই, তারাও অনেক পছন্দ করে।
এদিকে, স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগে পিঠা বিক্রি করে ভালো লাভ হওয়ায় পুরুষদের পাশাপাশি অনেক নারীদেরও শীতের পিঠা বিক্রি করতে দেখা যায়। এই মৌসুমে পিঠা বিক্রির আয় দিয়েই চলে তাদের সংসার।
পুরাতন বাস টার্মিনালের পিঠা বিক্রেতা মো. ফিরোজ শেখ বলেন, তিনি গত ৩ বছর ধরে শীত মৌসুমে পিঠা বিক্রি করছেন। এ বছর তিনি চিতই ও ভাপা পিঠা বিক্রি করছেন। তিনটা চুলায় প্রতিদিন প্রায় ২০-২৫ কেজি চালের পিঠা বিক্রি হয়। তার দোকানে ক্রেতাদের প্রচুর ভিড় হয়।
মুচিপোলের এক নারী পিঠা বিক্রেতা বলেন, চার বছর ধরে পিঠা বিক্রি করছি। আমি শুধু ভাপা পিঠা বিক্রি করি। শীত মৌসুমে পিঠা বিক্রি করেই আমাদের সংসার চলে।
রুপগঞ্জের পিঠা বিক্রেতা মো. বিল্লাল বলেন, আমি সারাবছর শিঙাড়া, চপ, পুরিসহ তেলে ভাজা নানান মুখরোচক খাবার বিক্রি করেন। এ বছর শীতে সেসবের পাশাপাশি শীতের পিঠাও বিক্রি করছি। আল্লাহর রহমতে ভালোই চলছে।
পৌরসভার কাউন্সিলর শরফুল আলম লিটু বলেন, শীত এলেই শহরের মোড়ে মোড়ে ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান বসে। সেখানে ক্রেতাদেরও ব্যাপক ভিড় জমে। এতে পিঠার দোকান ঘিরে মেলার আমেজ তৈরি হয়।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ