রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের পথে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ইতিহাসের সাক্ষী সপ্তদশ শতকে নির্মিত ঐতিহাসিক পানাম সেতু। সেতুটি বর্তমানে যানবাহন চলাচলের জন্য বন্ধ রয়েছে। সেতুর জীর্ণদশা দেখে হতাশ হচ্ছেন আগত পর্যটকরা।
ঐতিহাসিক পানাম নগরীর পার্শ্ববর্তী পঙ্খীরাজ খালের ওপর নির্মিত এ সেতুটি চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় প্রায় ৭ বছর আগে সেতুটির পাশে একটি বিকল্প সেতু নির্মাণ করা হয়। ফলে বন্ধ হয়ে যায় মোগল আমলের ঐতিহাসিক পানাম সেতু।
কর্তৃপক্ষ এ প্রত্নস্থাপনাটি সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় সেতুর ওপর ঝোপঝাড় তৈরি হয়েছে। সেতুর নিচে আদমপুর বাজারের আবর্জনা ও মুরগির বিষ্ঠা ফেলে পরিবেশ দূষণ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ পর্যটকদের। পানাম সেতুটি দৈর্ঘ্য ১৭৩ ফুট ও প্রস্থ ১৪ ফুট। তিনটি পিলারবিশিষ্ট এ সেতুর নিচ দিয়ে নৌচলাচলের সুবিধার্থে মধ্যবর্তী পিলারটি অপেক্ষাকৃত প্রশস্ত ও উঁচু করে নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে সেতুটির বিভিন্ন অংশ ভেঙে গেছে। এছাড়া দেখা দিয়েছে ফাটল। ঝুঁকির মুখে পড়েছে ঐতিহাসিক পানাম সেতু। সেতুটি সংস্কার করে সংরক্ষণের আওতায় আনলে পর্যটকদের জন্য এটি আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
এশিয়াটিক সোসাইটি প্রকাশিত বাংলাপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, মোগল সম্রাজ্যের প্রত্যক্ষ শাসনে আসার পর মোগলরা সোনারগাঁয়ে বেশ কিছু সড়ক ও সেতু নির্মাণের ফলে সোনারগাঁ ও পানাম শহর নতুন রূপে আবির্ভূত হয়। সেতুটির প্রকৃত নির্মাণ কাল সংক্রান্ত কোনো প্রামাণ্য শিলালিপি না থাকলেও স্থাপত্য রীতি বিবেচনা করে ঐতিহাসিকরা এটিকে মোঘল আমলে অর্থাৎ সপ্তদশ শতকে নির্মিত স্থাপনা হিসেবে একমত হন।
জানা গেছে, সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন পুরাকীর্তি পরিদর্শনে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটক এ ঐতিহাসিক পানাম সেতু পরিদর্শন করে যান।
কুমিল্লা থেকে আসা মো. আরিফ নামের এক দর্শনার্থী বলেন, মুরগির বিষ্ঠা ফেলে পরিবেশ দূষণ করা হচ্ছে, এটা বন্ধ করতে হবে৷ পানাম সেতু দেশের মূল্যবান প্রত্নসম্পদ, এটি রক্ষা করতে হবে। যারা এ সেতুর সৌন্দর্যহানি করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
নয়াশতাব্দী/জেডএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ