ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

তাড়াশে রসুন চাষে স্বপ্ন বুনছেন কৃষক

প্রকাশনার সময়: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:৫৯

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে আমন ধান কাটা শেষে জমি পরিষ্কার করে সাদা সোনা খ্যাত মসলা জাতীয় ফসল রসুন লাগাতে শুরু করেছে কৃষকরা। এ রসুন লাগানোর কাজে ব্যস্ত পার করছেন কৃষক পরিবারের সদস্যরা।

এদিকে কৃষকরা বলছেন, রসুনের ন্যায্য মূল্য না পেলেও চলতি বছরে কৃষি উপকরণের দাম বিগত বছরগুলোর তুলনায় বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে এবার রসুন চাষে প্রতি বিঘায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ব্যয় হচ্ছে।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে তাড়াশ উপজেলায় রসুন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৭৫ হেক্টর জমি। এখন পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ৩০৫ হেক্টর। এ ছাড়া বিনাহালে ২৭০ হেক্টর জমিতে রসুন আবাদ হয়েছে।

তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের চার এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, রসুন চাষকে ঘিরে কর্মমুখর হয়ে উঠেছে কৃষক পরিবারগুলো। কৃষাণী, কিংবা তাদের নিয়োগ করা নারীরা রসুন থেকে কোয়া ছড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাদ যাচ্ছেন না বাড়ির কিশোর-কিশোরীরাও।

অধিকাংশ পরিবার গ্রামের নারীদের রসুন ভাঙার কাজে নিয়োগ করেছেন। এতে প্রতিমণ রসুন ভাঙার মজুরি ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা দিতে হচ্ছে। একমণ রসুন ভাঙতে সময় লাগে দুই দিন। পাশাপাশি চলছে জমি প্রস্তুতসহ রসুন রোপণের কর্মযজ্ঞ।

কৃষক মিঠু আহমেদ জানান, কৃষি উপকরণ বীজ, সার-কীটনাশক, সেচ, নিড়ানি, শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধির কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছরে রসুন চাষে প্রতি বিঘায় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে।

মাগুরা বিনোদ ইউনিয়নের চরহামকুড়িয়া গ্রামের কৃষক ফরিদুল ইসলাম জানান, এ বছর ৫ বিঘা জমিতে রসুন চাষ করেছেন। বিঘা প্রতি বীজ, সার-কীটনাশক ও সেচ বাবদ খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। এরপরে রসুন রোপণ ও নিড়ানিসহ শ্রমিক খরচ হবে ৯ হাজার টাকা। এতে তার বিঘা প্রতি মোট ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হবে।

বিন্নাবাড়ি গ্রামের কৃষক ইমান আলী জানান, তিনি চলতি বছরে ৪ বিঘা জমিতে রসুন আবাদ করেছেন। রসুনে চাষে খরচ বাড়ায় গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে প্রতি বিঘায় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা বেশি খরচ হয়েছে।

জানা যায়, চলনবিল অঞ্চলে বিগত দুই দশক ধরে বিনাহালে রসুনের আবাদ করে কৃষকেরা অধিক লাভবান হন। তার পথ ধরেই বিনাহালে রসুন চাষ পদ্ধতি ছড়িয়ে পড়েছে চলনবিলের তাড়াশ, গুরুদাসপুর, সিংড়া, বড়াইগ্রাম, চাটমোহরসহ আরো অনেক উপজেলায়। বর্তমানে এই পদ্ধতিতে রসুন চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, প্রতিবিঘা জমিতে ৩০-৪০ মণ হারে রসুন উৎপাদন হয়। খরচ বাদ দিয়েও অনেক লাভবান হন কৃষকরা। কারণ এই একই জমিতে আবার তরমুজ ও বাঙ্গি আবাদ করা যায়। তাই চলনবিলের অধিকাংশ কৃষকরা বিনাহালে রসুনের আবাদ করেন।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ