ঝিনাইদহের শৈলকুপার দোহার গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী ফারুক হোসেনের সংসার চলে বাদাম বিক্রি করে। তিনি উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে ঘুরে বাদাম বিক্রি করে যে টাকা আয় করেন তা দিয়ে পরিবারের ৫ সদস্য নিয়ে কোনোমতে তার সংসার চলে।
উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের দোহার গ্রামের মৃত তাইজাল হোসেনের ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী ফারুক হোসেন। তার বয়স ৪০ বছর। লাঙ্গলবাঁধ বাজারে তার কথা হয়।
বাদাম বিক্রেতা ফারুক হোসেন জানান, আমি জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। আমার ৩ ছেলেসহ সংসারে রয়েছে ৫ জন সদস্য। তাদরে মধ্যে বড় ছেলে সাগর হোসেন ৮ম শ্রেণিতে, রহমত হোসেন ৪র্থ শ্রেণিতে এবং ছোট ছেলে মহব্বত হোসেন প্রথম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে।
তিনি আরও জানান, বাড়িতে পাঁচ শতক জমি ছাড়া আমার আর কিছু নেই। বিভিন্ন হাটবাজারে বাদাম বিক্রি করে প্রতিদিন ২ থেকে ৩শ টাকা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চলে কোনোরকমে কিন্তু ছেলেদের লেখাপড়ার খরচসহ ভালো জামা-কাপড় কিনে দিতে পারি না। তারপরও সন্তানদেরকে অভাব বুঝতে দিতে চাই না। তাদের মুখে হাসি ফুটাতেই আমি বাদাম বিক্রি করি। আর সরকারিভাবে মাসে যে প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়ে থাকি তা দিয়ে সংসার চলে না। কিন্তু বাজারে নিত্যপণ্যে দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে আমার মতো লোকের নুন আনতে পান্তা ফুরিয়ে যাচ্ছে।
তার গ্রামের বাসিন্দা জাহিদ হাসান জানান, প্রতিবন্ধী ফারুক হোসেন হাট-বাজারের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে বাদাম বিক্রি করেন। তিনি অত্যন্ত সহজ-সরল মানুষ। সব সময় হাসি মুখে থাকেন। যা আয় করেন তা দিয়ে কোনোরকমে সংসার চালান। সমাজে কারো কাছে তিনি হাত পাতেন না। তবে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বারের কাছ থেকে কোনো ভাতা পান কিনা সেটা আমার জানা নেই।
হাকিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওহিদুজ্জামান ইকু বলেন, সে যেহেতু সরকারি ভাতা পেয়ে থাকে তাহলে আমি আর কি করব। তবে আমার কাছে আসলে যতটুকু পারি সহযোগিতা করব।
এদিকে, বাদাম বিক্রেতা ফারুক হোসেন ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া ও পারিবারিক খরচ চালাতে সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিদের কাছে সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়েছেন।
নয়া শতাব্দী/এসএ/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ