ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

১৯ বছর ধরে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন ডা. শিবলী

প্রকাশনার সময়: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৩১ | আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:১৪

বাড়ির ভেতরে বসে দরিদ্র রোগীদের বিনামূল্যে চক্ষু পরীক্ষা করে চিকিৎসা সেবা ও ব্যবস্থাপত্র করে দিচ্ছেন ডা. মাহমুদুল হাসান ছিদ্দিকী শিবলী। আর বারান্দায় রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ দিচ্ছেন চাচা মতিউর রহমান সিদ্দিকী। দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে এ সেবা করে আসছেন ডা. শিবলী।

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার চিকিৎসা সেবার এমন দৃশ্যের দেখা মিলে, ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের ভালুকা মহল্লায় অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছিদ্দিকুর রহমানের বাড়িতে। ডা. মাহমুদুল হাসান ছিদ্দিকী শিবলী অধ্যক্ষ ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে।

ডা. শিবলী কিশোরগঞ্জের রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সহযোগী অধ্যাপক ও চক্ষু বিভাগীয় প্রধান হিসাবে কর্মরত আছেন। বৃহস্পতিবার ছুটির দিনে কর্মস্থল থেকে ডা. শিবলী মেডিকেল টিম নিয়ে গৌরীপুরে নিজ বাড়িতে আসেন। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অসহায় ও দরিদ্র প্রায় সাড়ে চারশ চক্ষু রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা, চশমা ও ওষুধ প্রদান করেন।

চিকিৎসা নিতে আসা শচীন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আমি চোখের অসুখে ভুগছিলাম। বাইরে প্রাইভেট চিকিৎসক দেখালে ফি ও ওষুধ বাবদ টাকা খরচ হতো। এখানে এসে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা, ওষুধ ও চশমা পেয়েছি।

চিকিৎসা নিতে আসা সেলিনা বেগম বলেন, কিছুদিন ধরেই চোখে কম দেখছিলাম। টাকার জন্য ভালো ডাক্তার দেখাতে পারছিলাম না। এখানে এসে বিনামূল্যে চিকিসা নিয়েছি। চোখের চশমাও পেয়েছি।

জানা গেছে, প্রকৃত ও অসহায় রোগীরা যেন বিনামূল্যে চক্ষু সেবা ও ওষুধ পায় সেজন্য বুধবার এলাকায় মাইকিং করা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাড়িতে বসে ডা. শিবলীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের মেডিকেল টিম রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেন। এমন সেবা পেতে সকাল থেকেই রোগীরা বাড়িতে ভিড় করে সিরিয়াল নিতে শুরু করে। পরে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ নিয়ে হাসি মুখে বাড়ি ফিরে তারা।

গৌরীপুর পৌরসভার কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন বাচ্চু বলেন, ডা. শিবলী সাহেব আমার এলাকার বাসিন্দা। চাকরির সুবাদে উনি বাহিরে থাকলেও ছুটির দিনে এলাকায় এসে রোগীদের ফ্রি চিকিৎসা ও ওষুধ দেন। আমি নিজেও চিকিৎসা নিয়েছি। এটা খুব প্রশংসনীয় উদ্যোগ। অন্য চিকিৎসকদের জন্য এটা অনুকরণীয় হতে পারে।

ডা. মাহমুদুল হাসান ছিদ্দিকী শিবলী বলেন, এলাকার অসহায় রোগীদের পাশে দাঁড়াতে পরিবারের অনুপ্রেরণায় ২০০৪ সাল থেকে বিনামূল্যে রোগী দেখা শুরু করি। প্রথম দিকে শুধু রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ব্যবস্থাপত্র দিতাম। পরবর্তীতে চাকরি হওয়ার পর ছিদ্দিকীয়া ফাউন্ডেশন গড়ে ব্যবস্থাপত্রের পাশাপাশি বিনামূল্যে ওষুধ, চশমা দেওয়া শুরু করি।

অধ্যপনার পাশাপাশি ময়মনসিংহ ও ঢাকার দুটি বেসরকারি হাসপাতালে চক্ষু রোগী দেখেন এই চক্ষু বিশেষজ্ঞ। সেখানেও তিনি দরিদ্র ও অসহায় রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি নামমাত্র মূল্যে ছানি অপারেশ করেন। এই চিকিৎসাসেবা পাওয়ার জন্য তিনি অসহায় রোগীদের যোগাযোগ করার আহ্বান জানান।

শিবলী বলেন, চাকরির সুবাদে আমাকে কর্মস্থলে থাকতে হয়। তবে আমি চেষ্টা করি ছুটির দিনটা কাজে লাগাতে। তাই যারা অস্বচ্ছল রোগী আছেন তারা আমার চিকিৎসা পেতে যোগাযোগ করবেন। আমার চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করলে আমি নিজেকে ধন্য মনে করবো।

প্রসঙ্গত, ডা. মাহমুদুল হাসান ছিদ্দিকী ২০০২ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। পরে তিনি চিকিৎসা বিদ্যায় (চক্ষু) উচ্চতর ডিগ্রি নেন।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ