ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

গোলাপ ফুলে বদলে গেল মোহাম্মদ আলীর জীবন

প্রকাশনার সময়: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:০৫

শেরপুরের বনাঞ্চলে পতিত জমিতে প্রথমবারের মতো নানা রঙের গোলাপ ফুল চাষ করে সফলতা পেয়েছেন মোহাম্মদ আলী। মাত্র ৬ মাসে সেই বাগান থেকে ৪ লাখ টাকা আয় করেছেন এই উদ্যোক্তা। তার বাগানে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শেরপুরের ঝিনাইগাতীর রাংটিয়া এলাকার সন্ধ্যাকুড়া গ্রামে ১৫০ শতাংশ জমিতে গোলাপ ফুলের বাগান গড়ে তুলেছেন মোহাম্মদ আলী। গত ১৫ বছর যাবৎ ঢাকার শাহবাগ, উত্তরা, ধানমন্ডি ও গুলশানে নানা ধরনের ফুলের ব্যবসা করতেন তিনি। এক সময় স্বপ্ন দেখেন নিজ গ্রামের বনাঞ্চলে পড়ে থাকা জমিতে গোলাপ চাষ করবেন।

ওই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে চুক্তি ভিত্তিতে বাৎসরিক সাড়ে ৩ লাখ টাকায় ৮ বছরের জন্য জমি লিজ নেন। গোলাপ বাগানের নাম রাখেন ‘জননী ফ্লাওয়ারস গার্ডেন। মাত্র ৬ মাসে সেই বাগান থেকে ৪ লাখ টাকা আয় করেছেন এই উদ্যোক্তা। তার গোলাপ চাষ শুরুর পর বেকার যুবকরা পেয়েছেন কর্মসংস্থানের পথ। তেমনি পড়ে থাকা জমি চাষের আওতায় আসায় ভূমি মালিকরাও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

উদ্যোক্তা মোহাম্মদ আলী জানান, নিজের পুঁজি এবং বিভিন্ন এনজিও থেকে প্রায় ১৯ লাখ টাকা

ঋণ নিয়ে ভারতের চেন্নাইয়ে এক পরিচিত জনের মাধ্যমে ২ দফা চাইনিজ ও থাই জাতের ১৮ হাজার গোলাপের চারা সংগ্রহ করেন। পরে জমিতে জৈব সার, টিএসপি ও ইউরিয়া ব্যবহার করে চারা রোপণ করেন। আর চারা রোপণের এক মাস পর থেকে ফুল আসা শুরু করে। তবে বিক্রি উপযোগী ফুল পাওয়া যায় ৪ মাস পর থেকে। প্রায় ১ বছর ৭ মাস বয়সী ওই বাগানে এখন শোভা পাচ্ছে লাল, সাদা, হলুদ ও গোলাপী রঙয়ের বাহারি গোলাপ।

বাগানের শ্রমিক ফজলুর রহমান ও কুসুম আলী বলেন, তারা বাগানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করেন। প্রতিটি গাছের পরিচর্যা ছাড়াও বিক্রির জন্য ফুল কাটিং, পরিষ্কার করা এবং পাইকারদের হাতে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেন। এ জন্য তারা মাসিক ১৫-১৬ হাজার টাকা মজুরি পান।

স্থানীয় পাইকার আছর আলী এবং মোকছেদ বলেন, উৎপাদিত গোলাপ স্থানীয় বাজার ছাড়াও ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায় বিক্রি হচ্ছে। দৈনিক গড়ে প্রায় ১৮শ থেকে ২ হাজার পিছ ফুল সংগ্রহ করা হয়। যার ১শ পিসের ফুলের ঝুড়ি ২ থেকে ৪ হাজার টাকায় হাত বদল হয়।

স্থানীয় দোকানদার রশীদ জামান ও গেদা মিয়া বলেন, এলাকায় ফুলের রানী গোলাপের দেখা পেতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই আসছেন। এ কারণে তাদের বিকিকিনিও বেড়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এক ইঞ্চি জমিও যেন পতিত পড়ে না থাকে। আমরা সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এখানে স্থানীয় যুবক মোহাম্মদ আলী গোলাপের বাগান করেছেন। মাত্র ৬ মাসে তিনি ওই বাগান থেকে ৪ লাখ টাকা আয় করেছেন। উচ্চ মূল্যের ফসল গোলাপ আবাদ ছড়িয়ে দিতে কৃষি বিভাগ কাজ করছে।

নয়া শতাব্দী/এসএ/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ