ঢাকা, রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

গৌরীপুরে ডিঙি নৌকা তৈরির ধুম

প্রকাশনার সময়: ১৫ জুলাই ২০২৩, ১১:৩০

ময়মনসিংহের গৌরীপুরের সিধলায় ডিঙি নৌকা তৈরির ধুম পড়েছে। সারা বছর নৌকার কারিগররা অন্য কাজে ব্যস্ত থাকলেও বর্ষা মৌসুমে ব্যস্ত হয়ে পড়ে নৌকা তৈরিতে। নৌকাগুলো স্থানীয় ভাবে বিক্রির পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি হয়।

সিধলার ভেতরে প্রবাহমান সিধলং বিল। শুকনো মৌসুমে বিল প্রায় পানিশূন্য থাকে। বর্ষাকালে বিলের দুকূল ছাপিয়ে পানি থই থই করে। শুরু হয় নৌকা দিয়ে মাছ ধরার উৎসব। এই সময়টাতে জেলেরা নতুন নৌকা কেনার পাশাপাশি পুরাতন নৌকা মেরামত করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

এ ছাড়াও বর্ষাকালে সিধলং বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে নৌকায় ভ্রমণ করতে ছুটে আসে দর্শনার্থীরা। জেলেরা মাছ ধরার পাশাপাশি দর্শনার্থীদের নৌকায় ঘুরিয়ে বাড়তি আয় করে থাকে। নৌকার চাহিদাকে কেন্দ্র করেই সিধলং বিল পাড়ে সড়কের পাশেই গড়ে উঠেছে নৌকা তৈরির কারখানা। সারাবছর এসব কারখানায় কাঠের আসবাবপত্র তৈরির কাজ হয়। আর বর্ষা আসার আগেই কারিগররা ব্যস্ত হয়ে পড়েন নৌকা তৈরির কাজে।

নৌকার কারিগরা জানান, সিধলা ইউনিয়নের ডিঙি নৌকার সুনাম বহু আগে থেকেই। তাই ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, সিলেটসহ ভাটি অঞ্চলের অনেকেই সিধলার ডিঙি নৌকা কিনে নিয়ে যান। এছাড়াও মাছ চাষিরা পুকুরে নিজেদের ব্যবহারের জন্য নৌকা সংগ্রহ করেন এখান থেকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, নৌকা তৈরির কারখানায় চলছে ‘ঠুকঠাক’ শব্দ। কারিগরদের কেউ করাত দিয়ে কাঠ কাটায় ব্যস্ত। কেউ ব্যস্ত হাতুড়ি দিয়ে নৌকায় পেরেক লাগাতে। আর কেউবা আলকাতরা দিচ্ছে নৌকার শরীরে। কাঠ ভেদে নৌকার দাম পড়ে ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা। তবে রেইন্ট্রি কাঠের তৈরি নৌকা বেশি বিক্রি হয়।

নৌকার কারিগর রাশিদ মিয়া বলেন, এখানকার তৈরি ডিঙি নৌকা পাইকারদের মাধ্যমে নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, সিলেটসহ ভাটি অঞ্চলে যায়। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে আমার কারখানা থেকে শতাধিক নৌকা বিক্রি হয়। তবে গতবারের তুলনায় নৌকার চাহিদা কম।

নৌকার কারিগর আবুল কালাম বলেন, নৌকার ব্যবসাটা বর্ষার পানির ওপর নির্ভর করে। পানি বেশি হলে নৌকার চাহিদা বেশি। তবে এবার বর্ষায় ৩৫ টির মতো নৌকা বিক্রি করেছি। একটি নৌকা তৈরিতে একদিন সময় লাগে। রেইন্ট্রি কাঠের নৌকা ৪ হাজার ও মেহগনি কাঠ দিয়ে তৈরি নৌকা ৬ হাজারে বিক্রি করি। প্রতিটি নৌকা বিক্রি করে একহাজার টাকার মতো লাভ হয়।

নৌকার ক্রেতা সোহেল বলেন, সিধলার তৈরি ডিঙি নৌকার সুনাম আছে। নৌকার গুণগত মান ভালো। আমার ফিশারিতে ব্যবহারের জন্য ২২ ফুট লম্বা নৌকা তৈরি করেছি এখান থেকে। খরচ পড়েছে ১৬ হাজার টাকা।

উপজেলা খেতমজুর সমিতির সভাপতি হারুন আল বারী বলেন, যান্ত্রিক সভ্যতার দাপটে নৌকার প্রচলন কমে গেছে। তারপরও বর্ষা আসলে সিধলা ইউনিয়নে নৌকা তৈরির ধুম পড়ে যায়। কারিগরারও এই সময়টাতে নৌকা তৈরি করে লাভের মুখ দেখে।

নয়া শতাব্দী/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ