ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রসের মিষ্টি গন্ধে মেতেছেন গাছিরা

প্রকাশনার সময়: ৩১ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:৫৬

শীতের সকালে সবুজের ডগায় শুভ্র শিশির আর কুয়াশায় জড়িয়ে থাকে গ্রামীণ জনপদ। একটানা সুর করে গান গায় পাখি। এমন সকালে এক গ্লাস খেজুরের রস আলাদা তৃপ্তি আনে মন ও শরীরে। রস পানে মনে হয় এ বুঝি সত্যিকারের শীত। এ বুঝি সত্যিকারের ঘনকুয়াশার সকাল কিংবা শিশিরের নাচন।

শীতের মৌসুমে মূলত খেজুরের রস দিয়েই শুরু হয় গ্রামীণ জনপদে আমেজ। আগুনে রস জ্বাল দিয়ে বানানো হয় বাটালি ও লালি গুড়। রস তৈরির মিষ্টি গন্ধেই মোচড় দিয়ে ওঠে ভোজনরসিক উদর।

সরেজমিনে দেখা যায়, সোনারগাঁয়ের পেরাব গ্রামে খেজুরের রস সংগ্রহকারীরা প্রতিদিন বিকালে নলি, কোমরবন্ধ রশি নিয়ে চড়েন গাচে। খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোটবড় কলসি ও হাঁড়ি (মাটির পাত্র) বেঁধে রাখেন রসের জন্য। পরদিন সকালে রস সংগ্রহ করেন।

অনেকে কাঁচা রস বাজারে বিক্রি করেন। কেউ রস দিয়ে গুড় তৈরি করেন। শীতের সকালে অনেকেই এখানে খেজুরের রস কিনতে আসেন। রুপগঞ্জ গাউছিয়া থেকে এসেছেন আসিফ মিয়া। বললেন, খেজুরের রস আমার কাছে খুবই পছন্দের। খেতেও দারুণ। সব বয়সি মানুষ খেজুরের রস ও গুড় পছন্দ করে। আমার বাড়ির পাশে থাকায় সকালে ঘুম থেকে উঠেই খেজুরের রস খেতে আসি। বাড়ির জন্য কিনেও নিয়ে যাই।

ভৈরব থেকে আসা খেজুরের রস সংগ্রহকারী ওয়াহিদ বলেন, আমি এবার ১০০ খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছি। প্রথম দিকে রস কম সংগ্রহ হলেও শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রসের পরিমাণ বেড়েছে। খেজুরের রস সংগ্রহ করে কড়াইতে জ্বাল দিই। জ্বাল দিয়ে তারপর গুড় বানাই। প্রতিদিন ১০-১২ কেজি গুড় বিক্রি করি। প্রতি কেজি গুড়ের দাম ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। সকালে অনেকেই খেজুরের রস খেতে আসে। প্রতি গ্লাস রস ১০ টাকা করে। কাঁচা রস এলাকার বিভিন্ন স্থানে ও হাটে-বাজারে বিক্রি করি।

কিশোরগঞ্জের গাইটাল থেকে এসেছেন গাছি আলী হোসেন। এখানে এবার প্রথম এসেছেন। বললেন, এলাকায় যাদের খেজুর গাছ রয়েছে, তাদের কাছ থেকে গাছ লিজ নিয়েছি। এ বছর ৮৫টি খেজুর গাছ থেকে প্রতিদিন ৭-৮ মণ রস সংগ্রহ করি। তিন দিন পরপর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোটবড় হাঁড়ি বেঁধে রস সংগ্রহ করি। সকালে রস সংগ্রহ করে কড়াইতে জ্বাল দিই। জ্বাল দিতে ২-৩ ঘণ্টা লাগে। আর প্রতিদিন ১০-১৫ কেজি খেজুরের গুড় বিক্রি করি। আবার অনেকেই সকালে খেজুরের রস ও গুড় কিনতে আসে। এক গ্লাস রস বিক্রি করি ১০ টাকা করে। প্রতি মৌসুমে এটা আমার বাড়তি আয়। এ আয়ের টাকা সারা বছরই আমাকে আর্থিক নিরাপত্তা দিয়ে থাকে।

নয়া শতাব্দী/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ