শেরপুর জেলার বিভিন্ন মাঠে এখন সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠ। অগ্রহায়ণের হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ ফুল। মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে যেমন মাঠ, তেমনি বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে হাসি। যেন হলুদ হাসিতে স্বপ্ন দেখছে কৃষক।
সরেজমিনে যতদূর চোখ যায় শুধু হলুদ বর্ণের ফুল। শীতের শুভ্রতায় প্রাণের স্পন্দন নিয়ে এসেছে এই সরিষা ফুল। পড়ন্ত বিকেলে সোনালী রৌদ্দুরে রঙেগন্ধে মোহিত এখন সরিষা ক্ষেত। শীতের মধ্যে গ্রামগুলো সেজেছে হলুদ বর্ণের এক মায়াবি সাজে। চারদিকের অবারিত সরিষা ক্ষেত, শীতের গ্রাম বাংলার প্রকৃত সৌন্দর্য রূপ ফুটে উঠেছে।
চাষিরা জানিয়েছেন, আমন উঠানোর পরপর বোরো লাগানোর মাঝখানের সময়টুকুতে সরিষা লাগিয়ে লাভের স্বপ্ন দেখছেন আবহাওয়া অনুকূল ও কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় চাষিরা সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন।
শেরপুর কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, জেলায় বিগত বছরের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে এই বছরে ১২ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এই বছরে জেলায় সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ হাজার ৯০৭ হেক্টর জমিতে। কৃষি বিভাগের হিসাবের বাইরে আরও বেশি জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে বলে চাষিদের দাবি। ২০২১ সালে ৭ হাজার ৮২ হেক্টর, ২০২০ সালে ৭ হাজার ২১৫ হেক্টর, ২০১৯ সালে ৬ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়। এবার জেলার চরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি সরিষার আবাদ হয়েছে। আর ৫ উপজেলার মধ্যে নকলাতে সর্বাধিক ৫ হাজার হেক্টর জমিতে এই তেল বীজের উৎপাদন হয়েছে বলে জানা গেছে।
জেলার কৃষি বিভাগ বলছে, রোপা আমন ধান কাটার পর বোরো লাগাতে চাষির জমি খালি রাখা সম্ভব হয় ৫০ থেকে ৬০ দিন। সরিষা চাষের জন্য পর্যাপ্ত সময় পেতে কৃষি বিভাগ অনেক কৃষককে স্বপ্ন জাতের আগাম রোপা আমন লাগাতে উদ্বুদ্ধ করে। ফলে অন্তত ২০ দিন আগে আমন কাটতে পেরেছে চাষি। এতে ওই মাঠ থেকে সরিষা উঠিয়েই সাথে সাথে বোরো লাগাতে চাষিরা সঠিক সময় পাবে। তার উপর আবার সরকার উৎপাদন বাড়াতে জেলার অন্তত ৩০ হাজার কৃষককে সরিষা উৎপাদনে উন্নত উচ্চ ফলনশীল বারি-১৪, বারি-১৭,বিনা-৪ ও বিনা-৯ জাতের বীজ-সার প্রণোদনা দিয়েছে। চাষির মাঠে কৃষি বিভাগের লোকজনের সরব উপস্থিতির ফলে চাষিরা ব্যাপক উদ্দীপনা পেয়েছে।
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ