বাজারে সয়াবিনসহ অন্যান্য ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে গত মৌসুমে সরিষার ব্যাপক চাহিদা ছিলো। এবারও সরিষার ব্যাপক চাহিদা থাকায় এবার গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। সরিষা একটি লাভজনক ঝুঁকিমুক্ত ফসল। সরিষার আবাদ বৃদ্ধিতে সরকার কৃষকদের বীজ, সার ও পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করছে। চাহিদা বাড়ায় ও দাম ভালো পাওয়ায় ভোজ্যতেল হিসেবে সরিষার তেলের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
কৃষকরা বলছেন, দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য সরিষা আবাদে ঝুঁকছেন তারা। পাবনা জেলার ঈশ্বরদীতে বিভিন্ন মাঠে এখন সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠ। হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ সরিষার ফুল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে যেমন মাঠ, তেমনি বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে হাসি। যেন সরিষার হলুদ হাসিতে স্বপ্ন দেখছে কৃষক। উপজেলার মাঠে মাঠে ছেয়ে গেছে সরিষার ক্ষেত। সবুজের আগায় ভরা হলুদে সরিষে ফুলে মৌমাছির ঘুরপাক খাচ্ছে। বাতাসে দুলছে সরিষা ফুল, হাসছে কৃষক। গাছ দেখে বোঝা যাচ্ছে ফলন ভালো হবে। বাম্পার ফলন হওযায় আসায় বেজায় খুশি কৃষকের মন।
উপজেলার দাশুড়িয়া, মুলাডুলি, ছলিমপুর সাড়া, সহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠে এখন সরিষার হলুদ রঙের ফুলের সমারোহ। যেন হলুদ রঙের সুষমা শোভা পাচ্ছে দিকে দিকে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ঈশ্বরদী উপজেলা সরিষা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় সরিষা উৎপন্ন হয়। তবে সবচেয়ে বেশি সরিষা উৎপন্ন হয় উপজেলার মুলাডুলি ও দাশুড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে। গত মৌসুমে ঈশ্বরদীতে ৬৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছিল। উপজেলার চাষিরা টরি-৭, বারি-১৪, বারি-১৬, বারি-১৭, বারি-১৮, বিনা-৪, বিনা-৯ জাতের সরিষা চাষ করেন। বীজ বপন থেকে শুরু করে এ ফসলে সময় লাগে ৮০-৯০ দিন। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। এবার বষা মৌসুমে বৃষ্টি কম হওয়ায় উপজেলার নিচু এলাকা গুলোতে পানি জমেনি। ফলে এসমস্ত নিচু জমিতেও এবার কৃষকরা আগাম জাতের সরিষা চাষ করেছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মাহমুদুল আলম খান বলেন , সম্পূরক রবি শস্য হিসেবে সরিষা চাষে কৃষকদের উৎসাহ করা হয়েছে। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে সরিষা বীজ প্রদান করা হয়েছে। এরই মধ্যে চাষকৃত সরিষার বেশির ভাগেই ফুল এসে গেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
নয়াশতাব্দী/জেডএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ