১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকে ‘বাংলা ভাষা ও বাংলা সংস্কৃতির ওপর পাকিস্তানের যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল তা এখনো বন্ধ হয়নি। ৫২’র ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা পাকিস্তানীদের পরাজিত করে সেই ষড়যন্ত্রের জবাব দিয়েছি। তবে এখনও বাংলা ভাষা ও সাংস্কৃতির প্রতি পাকিস্তান ও তাদের অনুসারীদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। একারণেই ওরা বার বার জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ সৃষ্টি করে বাংলাদেশের অগ্রগতি থামিয়ে দিতে চায়।
সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ‘একুশ থেকে একাত্তর: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তরা।
আলোচনা সভার শুরুতে ভাষা শহীদের প্রতি স্বরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সভার আয়োজন করে মিডিয়া ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ডেভেলপমেন্ট (মেড)। মেড এর উপদেষ্টা ও ইন্ডিয়ান মিডিয়া করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইমক্যাব) সভাপতি বাসুদেব ধর এর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, বাংলাদেশ-ভারত সম্প্রীতি পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. ফজলে আলী, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, গ্রীন ক্লাব অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, বিএফইউজের দপ্তর সম্পাদক সেবিকা রানী, ইন্ডিয়ান মিডিয়া করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইমক্যাব) এর কোষাধ্যক্ষ আমিনুল হক ভূঁইয়া, মেড এর নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম সবুজ।
প্রধান আলোচক ওমর ফারুক বলেন, অর্থনৈতিক ও সামাজিকসহ বিভিন্ন খাতে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের এই অগ্রগতি দেখে পাকিস্তান ঈর্ষান্বিত। পাকিস্তানের টাকার মূল্য আমাদের টাকার প্রায় অর্ধেক। একারণে ওরা বার বার জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ সৃষ্টি করে বাংলাদেশের অগ্রগতি থামিয়ে দিতে চায়।
বক্তারা বলেন, ৫২ তে উর্দুকে আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা হয়েছিল এই বলে যে, উর্দু হচ্ছে মুসলমানদের ভাষা, ইসলাম ধর্মের ভাষা। বিষয়টি অসত্য। তবে পাকিস্তানের কোনো প্রদেশেই কিন্তু প্রাদেশিক ভাষা উর্দু নয়। মুসলিম বিশ্বে আরবী মুসলিমদের ভাষা নয়। তুর্কি, পার্সি মুসলিমদের ভাষা নয়। পাকিস্তানীরা একটি সাম্প্রদায়িক চেতনা থেকে একটি ভাষার চরিত্র নির্ধারণ করেছিল। বলা হয়েছিল, বাংলা ভাষা হচ্ছে হিন্দুদের ভাষা আর উর্দু হচ্ছে মুসলিমদের ভাষা। একটি অসত্য চিন্তা দিয়ে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে এই ভাষাকে চিহিৃত করার চেষ্টা হয়েছিল। সংস্কৃতিগত ও জাতীয়তাবাদী চেতনার জায়গা থেকে তুলে ফেলা এবং সাম্প্রদায়িক চরিত্র দিয়ে একটি ভিনদেশি ভাষা চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে ভাষা আন্দোলন হয়েছে এবং সেই পথ ধরেই আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ