কুষ্টিয়ার বধ্যভূমি- ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনীর ভয়াবহ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সাক্ষি এটি । কিন্তু অযত্ন-অবহেলায় বধ্যভূমিটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে পরবর্তী প্রজন্ম জানবেই না, কত জীবনের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে এদেশের রাজাকার, আলবদর বাহিনীর সহযোগিতায় পাক হানাদার বাহিনী কুষ্টিয়াসহ দেশের নিরীহ মানুষের ওপর ভয়াবহ নিষ্ঠুরতা চালায়। চালায় গণহত্যা। মানুষকে ধরে ধরে নিয়ে এসে গুলি করে অথবা গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করে। লাশ গুম করতেই সেদিন দেয়া হয় গণকবর। কুষ্টিয়ার গড়াই নদীর পাড়ে রয়েছে এমনি একটি গণকবর। মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছরে দেশের অনেক কিছুর পরিবর্তন হলেও এক অজ্ঞাত কারণে কুষ্টিয়ার এই গণকবরটি সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সংরক্ষণের অভাবে অযত্ন-অবহেলায় সেখানে বেড়ে উঠেছে কাশফুলের ঝোপ, জমি দখল করে গড়ে উঠেছে বাড়িঘর। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, গড়াই নদীর পাড়ে গণকবরটি আজও অযত্ন-অবহেলায় অরক্ষিত আছে। গণকবরটি সংরক্ষণের জন্য বছর দুয়েক আগে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। নামফলক লাগানো হয়েছিল। তবে উদ্বোধনের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও গণকবরটি সংরক্ষণে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এতে হারিয়ে যাচ্ছে শহিদের স্মৃতি।
কুষ্টিয়া জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার রফিকুল আলম টুকু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ডিসেম্বর মাস আসলেই মুক্তিযোদ্ধাদের কথা মনে হয়। মাসটি চলে গেলে আবার ভুলে যান। এটি খুবই দুঃখজনক। বহু বছর পেরিয়ে গেলেও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এ স্থানগুলো চিহ্নিত করে নির্মিত হয়নি শহিদদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ। জেলা শহরের গড়াই নদীর পাড়ের সব থেকে বড় গণহত্যা ও বধ্যভূমি সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।
অযত্ন-অবহেলায় এসব গণকবর নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। তবে স্বাধীনতার ৫০বছরেও এই বধ্যভূমিটি সংরক্ষণ করা হয়নি।
নয়া শতাব্দী/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ