ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আমি একজন হুমায়ূন আহমেদের গর্বিত ভক্ত

প্রকাশনার সময়: ১৩ নভেম্বর ২০২৩, ১৩:৩২

লেখক বা সাংবাদিক হওয়ার ইচ্ছে আদি সমাপ্তি কোনো কালেই ছিল না। না, এখনও আমি লেখক নই, কিংবা একজন ভালো পাঠকও নই। কিন্তু আমি একজন হুমায়ূন আহমেদের ভক্ত। এক পাগল ভক্ত। বলতে পারেন এমন ভক্ত তো অনেকেই আছেন। আপনার বিশেষত্ব কী? আমার বিশেষত্ব কী তা আমি জানি না। কিন্তু আমি একজন পাঠক তা একজন হুমায়ূন আহমেদ স্যারের কারণেই!

স্যারের লেখনীর সাথে আমার যখন পরিচয় হয় তখন আমি শৈশব-কৈশর পার হয়ে টগবগে যুবক। অন্য কোনো বিষয়ে সুযোগ না পেয়েই ভর্তি হয়েছিলাম বাংলা সাহিত্যে। কিন্তু সাহিত্যের ছিটেফোঁটাও আমার মাঝে নেই! রবীন্দ্র কিংবা জীবনানন্দ কোনটিতেই তো মন বসাতে পারছি না। ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে ভাবতে ভাবতে আমি চাকরির আবেদন করতে শুরু করি বিভিন্ন জায়গায়। শিক্ষানবিশ চিত্রনাট্যকার হিসেবে এক প্রোডাকশন হাউসে সুযোগও হয়। সুযোগটা এসেছিল বাংলা সাহিত্যের ছাত্র বলেই। যদিও প্রথম তিনদিনেই বাদ পড়ার উপক্রম হয়। কেননা, সৃষ্টির আগে যে পড়তে হবে। সেই জ্ঞানই তো নেই।

যাই হোক, আমার মেন্টরের পরামর্শেই সেদিন প্রথমবারের মতো মিসির আলীর “অন্যভুবন” বইটি হাতে তুলে নেই এবং পড়তে শুরু করি। মিসির আলী ও তার তীক্ষ্ণ বুদ্ধির সাথে পরিচিত হই। অদ্ভুত এক কল্পনার জগতে ভেসে বেড়াতে শুরু করি। সেই সময়ের মাদকতা এখনও আমায় প্রবলভাবে টানে। এরপর মিসির আলী সিরিজের ২০টি বই একে একে পড়া হয়। সাইকোলজিতে স্নাতকোত্তর করার ইচ্ছেও আমার একসময় হয়, এতোটাই আমি প্রভাবিত স্যারের লেখনীতে। একজন পাঠক লেখকের ভক্ত হবে সেটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু আমি তখন পাগলের মতোই স্যারের একের পর এক বই খুঁজে পড়তে লাগলাম। কখনো শুভ্র’র, কখনো হিমু আবার কখনো আবার হাসানের মতো বিশুদ্ধ চরিত্রের প্রেমে আমি পড়েছি এবং একবার নয়, একাধিকবার। সেটা হয়তো সবসময় চরিত্রের বর্ণনায় নয়, বরং স্যারের জাদুকরী লেখনীতেই।

এরপর ধীরে ধীরে মানিক বন্দোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো লেখকের সাথে পরিচিত হয়েছি এবং ক্রমান্বয়ে বাংলা সাহিত্যের প্রেমে পড়েছি। আমার খুব পছন্দের বইয়ের উদাহরণ দেই “আদর্শ হিন্দু হোটেল এবং পুতুল নাচের ইতিকথা”। কিন্তু তাই বলে হুমায়ূন আহমেদের সেই লেখনীর মাদকতা আমি ছাড়তে পারিনি, বরং আরও জড়িয়ে পড়েছি। “লেখক বা পাঠক জট” বলে একটা কথা চালু আছে। যেখানে লেখক লিখতে ভুলে যান কিংবা পাঠক পড়তে। আমি পাঠক জটে আটকে গেলে এখনও হাতে তুলে নেই হুমায়ূন আহমেদ স্যারের কোনো একটি বই। আমি হয়তো লেখক হতে পারিনি, কিন্তু সাহিত্যের প্রেমে পড়েছি। একজন গর্বিত পাঠক হয়ে উঠেছি তা একজন হুমায়ূন আহমেদ স্যারের কারণেই! শুভ জন্মদিন প্রিয় লেখক!

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ