প্রত্যেকটা পোষা প্রাণীই ভালো পরিবেশে থাকতে পছন্দ করে। এরমধ্যে বিড়াল অন্যতম। এরা সাধারণত কোলে অথবা গা ঘেঁষে ঘুমাতে পছন্দ করে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে এরা উষ্ণ জায়গা পছন্দ করে। শীতকালে অনেক সময় পোষা বিড়ালকে উষ্ণতার খোঁজে রোদে নিয়ে যেতে দেখা যায়। বয়স্ক এবং মা বিড়ালেরাও তাদের বাচ্চাদের রাখার জন্য ঘরের উষ্ণ স্থানটি খুঁজে থাকে। বিড়ালের শরীরে লোম বেশি থাকলেও তাদের শীত বেশি লাগে। এসময় বিড়ালকে বেশি অসুস্থ হতে দেখা যায়। তাই শীতকালে আপনার পোষা বিড়ালটিকে সুস্থ রাখতে প্রয়োজন কিছু বাড়তি যত্নের।
যে যত্নগুলো নিলে আপনার পোষা প্রাণী ভালো থাকবে-
নরম এবং উষ্ণ বিছানা:
স্বভাবতই বিড়াল ঘুমাতে অনেক পছন্দ করে। আর শীতকালে তাদের ঘুমানোর জন্য চাই একটি নরম ও উষ্ণ বিছানা। আজকাল বিড়ালের জন্য আলাদাভাবে Cat Bed or Cat house কিনতে পাওয়া যায়। ঘরের কোনায় তার জন্য পছন্দের একটি বিছানা তৈরি করে দিন অথবা আপনার সাথে কম্বলের উপর ঘুমাতে দিন। এতে করে সে ঘুমিয়ে আরাম পাবে এবং ঠাণ্ডায় কষ্ট পাবেনা।রৌদ্রউষ্ণতা (Sunbath):
বিড়ালকে রৌদ্রউষ্ণতা নিতে দিন। ঘরের যে পাশে দিনের বেলা রোদ আসে, সেদিকের পর্দা সরিয়ে উন্মুক্ত করে দিন যাতে করে ঘরের ভেতর রোদ আসতে পারে। বিড়াল রোদের আলোর উষ্ণতা খুব পছন্দ করে।বিড়ালের খাওয়া:
স্বভাবত শীতের সময় প্রত্যেকটি পোষা প্রাণীর খাওয়া-দাওয়া কমে যায়। খেয়াল রাখতে হবে আপনার পোষা বিড়াল ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করছে কিনা। বিড়ালকে তার বয়স অনুযায়ী খাওয়ান অথবা Cat Food খাওয়াতে হবে যাতে সে সঠিক পুষ্টি পায়। প্রয়োজনে খাবার বাড়াতে অথবা কমাতে হবে। সরাসরি ঠাণ্ডা খাবার দিলে বিড়ালের ঠাণ্ডা লেগে জ্বর হতে পারে।গোসল অথবা Grooming: বিড়াল স্বভাবতই পরিষ্কার প্রাণী এবং তারা পানি পছন্দ করে না। শীতকালে বিড়ালকে গোসল না করানোই ভালো, এতে জ্বর এসে নিউমনিয়া হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। খুব যদি প্রয়োজন মনে হয় তাহলে হালকা গরম পানিতে গোসল করিয়ে, ভালোভাবে তোয়ালে দিয়ে মুছিয়ে দিতে হবে। প্রয়োজনে Hair Dryer দিয়ে শুকিয়ে উষ্ণস্থানে রেখে দিতে হবে।
Activity ও খেলাধুলা: শীতকালে সব প্রাণীর মধ্যেই একটু অলসতা দেখা দেয়। বিড়াল এ সময় তুলনামুলক ভাবে বেশি ঘুমায়। তাই তার সাথে প্রতিদিন একটু সময় খেলাধুলা করতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে তার Activity ঠিক আছে কিনা।
নিরাপদ জায়গা নির্ধারণ করা: বিড়াল যদি নিয়মিত বাইরে যায় তাহলে এখনি নেট লাগিয়ে দিন যাতে বাইরে যেতে না পারে। শীতকালে বিড়াল উষ্ণ জায়গা খুঁজে আর গ্যারেজ এ গাড়ির ইঞ্জিনের উষ্ণতা পাওয়ার জন্য গাড়ির নিচে অথবা চাকার উপরে ঘুমিয়ে থাকে। এতে করে অসাবধানতাবশত দুর্ঘটনা ঘটতে পারে অথবা বেশি তাপে শরীরের যে কোন অংশ পুড়ে যেতে পারে।
প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও টিকা দিতে হবে: শীতকাল আসার আগেই বিড়ালকে রোগ প্রতিরোধ করার জন্য টিকা দিতে হবে। এছাড়া জ্বর, কাশি হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিকটস্থ ভেটেরিনারি ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যেতে হবে।
লেখক : শিক্ষার্থী, ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদ (৩য় বর্ষ), গণ বিশ্ববিদ্যালয়।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ