ঠাণ্ডা থেকে বাঁচার জন্য সবাই গরম কাপড় পড়ে কেউ বা আগুন পোহায়। আবার যাদের সামর্থ আছে তারা সোয়েটার, জ্যাকেট, শাল কিংবা উলের পোশাক পড়েন। এর বাইরে শীতের সকালের রোদ স্বাভাবিকভাবেই খুব মিষ্টি লাগে।
গ্রামাঞ্চলে এখনো গায়ে রোদ পোহানোর বিষয়টি দেখা যায়। কিন্তু শহরে সেভাবে দেখা না গেলেও গায়ে রোদের তাপ নেয়ার জন্য ঠিকই ঘরে জানালা খোলা রাখা হয় এবং বেলকুনি বা ছাদে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা হয়। কিন্তু শীতে গায়ে রোদ লাগানো কি ভালো, না ক্ষতিকর।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন দেশটির ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. গৌতম মুখোপাধ্যায়, নেচারোপ্যাথি বিশেষজ্ঞ ডা. অমরেন্দ্রনাথ দাস ও রেডিওথেরাপিস্ট ডা. সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়। এবার তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
ডা. গৌতমের পর্যবেক্ষণ, শীতে দীর্ঘক্ষণ রোদে থাকলে ত্বক স্বাভাবিক রং হারিয়ে ফেলে। এতে বলিরেখা পড়তে থাকে, পুরু হয়ে যায়। সামান্য আঘাত পেলেই ত্বকে কালশিটে দাগ পড়ে। আবার অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে স্কিন ক্যানসারও হয়ে থাকে।
হার্ট বা রক্তচাপের রোগীদের কখনোই দীর্ঘক্ষণ রোদে বসে থাকা ঠিক নয়। এতে প্রাণঘাতী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। স্কিন অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে বা জ্বর থাকলে গায়ে রোদ লাগানো যাবে না। গায়ে রোদ লাগানোর আগে মাথায় ভেজা তোয়ালে বা গামছা নেয়া উচিতি। আর হ্যাঁ, অবশ্যই ২০ থেকে ২৫ মিনিটের বেশি থাকা যাবে না।
আবার খাওয়ার পর পরই রোদে যাওয়া ঠিক নয়। অন্তত খাওয়ার ঘণ্টা দুয়েক পর রোদে যেতে হবে বলে জানালেন নেচারোপ্যাথি বিশেষজ্ঞ ডা. অমরেন্দ্রনাথ দাস। তিনি বলেন, গায়ে রোদ লাগানোর অনেক উপকারিতা রয়েছে। তবে সেটি পরিমিত। এতে মন চনমনে হয় ও শরীর সতেজ থাকে। কর্মক্ষমতা বাড়ে এবং রক্তসঞ্চালন ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
রোদের ভালো-মন্দ দুই দিকই রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্কিন ক্যানসারের জন্য ‘সানবাথ’কে দায়ী করা হয়। চামড়া ট্যান করার জন্য বিদেশিরা দীর্ঘক্ষণ শর্ট ড্রেসে রোদে থাকেন। এতেই সমস্যা হয় বলে জানালেন রেডিওথেরাপিস্ট ডা. সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়।
এছাড়া ত্বক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, শীতের সময় বাতাসের আর্দ্রতা কম থাকে বলে অতিবেগুনি রশ্মি সহজেই ত্বকের সংস্পর্শে আসে। এতে ত্বকের ক্ষতি বেশি হয়। এ জন্য শীতের রোদ ভয়ানক। তকের সজীবতা ও হালকা বর্ণ ধরে রাখার জন্য দীর্ঘক্ষণ রোদে না থাকাই ভালো।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ