ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিরক্তিকর পেটে সমস্যা, জেনে নিন করণীয়

প্রকাশনার সময়: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:২৭ | আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৩৩

কারণ ছাড়াই মাঝে মাঝে ব্যথা, পেটে গ্যাস এবং পায়খানার সমস্যা খাওয়া ঠিক মতো হজম হয় না। শীত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এ সমস্যা আমাদের আরও প্রকট হয়ে ওঠে। এ সময় আমাদের পাকস্থলীতে প্রাণশক্তি কমতে থাকে, যার ফলে হজমের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।

চিকিৎসকদের কাছে পরিপাকতন্ত্রের এরকম সমস্যা নিয়ে বহু রোগী আসেন। এই রোগকে সহজ বাংলায় দীর্ঘময়োদী আমাশয় বা বিরক্তিকর পেটের সমস্যা বলা যেতে পারে। বিশ্বে শতকরা ১১ জন এই রোগ ভুগে থাকেন। মহিলারা পুরুষদের তুলনায় সামান্য বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন।

চলুন জেনে নেওয়া যাক এ ক্ষেত্রে কী করণীয়:

অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড খাওয়া এবং শরীরে পানির অভাবে পেটে সমস্যা হতে পারে। শীতে তাপমাত্রা কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের পানি পানের প্রবণতা কমে যায়। অপর্যাপ্ত হাইড্রেশন কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ হতে পারে। কারণ অন্ত্র খাদ্য প্রক্রিয়া করতে কাজ করে। দৈনন্দিন রুটিনে চা এবং স্যুপের মতো তরল অন্তর্ভুক্ত করে হাইড্রেটেড থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করুন। রান্না করা শাক-সবজি, গোটা শস্য, ডাল, মসুর ডাল, তাজা ফল এবং বীজ জাতীয় খাবার খেতে পারেন। মসলাদার খাবার থেকে সাবধান থাকুন এবং হজমের অস্বস্তি এড়াতে পরিমিত খাবার খান।

রাতে ভালো ঘুম অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। ঘুমের অভাব হলে তা মানসিক চাপের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, যা অস্বাস্থ্যকর খাবারের আকাঙ্ক্ষা এবং হজমের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। এটি পাচনতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। ফলে ক্র্যাম্পিং, পেট ফাঁপা এবং প্রদাহের মতো সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। সার্বিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য মানসম্পন্ন ঘুম জরুরি।

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ শীতকালীন শাক-সবজি যেমন মিষ্টি আলু, কুমড়া, গাজর এবং বিট যোগ করুন আপনার খাদ্য তালিকায়। অন্ত্রের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে এবং হজমশক্তি বাড়াতে সবুজ শাক-সবজি খান। পরিপাক-বান্ধব ভেষজ এবং মসলা যেমন এলাচ, জায়ফল, হলুদ, আদা, দারুচিনি এবং লবঙ্গ যোগ করুন আপনার রান্নায়। অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার স্বাস্থ্যকর ভারসাম্য বজায় রাখতে আপনার ডায়েটে প্রোবায়োটিক যোগ করুন। গাঁজনযুক্ত খাবার হজমের সুস্থতার জন্যও ভালো।

অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য রক্ষা এবং পেটের সমস্যা প্রতিরোধ করতে চিনি, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং অ্যালকোহল গ্রহণ কমিয়ে দিন। শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন নারীদের ২.৭ লিটার এবং পুরুষদের ৩.৭ লিটার পানি পান করার পরামর্শ দেন।

অলসতা এড়াতে এবং সর্বোত্তম হজম বজায় রাখতে মানসম্পন্ন ঘুমকে অগ্রাধিকার দিন। শীতের মাসগুলোতে প্রাপ্তবয়স্কদের ১.৭৫ থেকে ২.৫ ঘণ্টা বেশি ঘুমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। আপনার পরিপাকতন্ত্রকে আরামদায়ক রাখতে যোগব্যায়াম, মেডিটেশন বা আনন্দদায়ক শখের মতো স্ট্রেস-রিলিভিং অ্যাক্টিভিটি বজায় রাখুন।

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য সক্রিয় থাকা গুরুত্বপূর্ণ। সপ্তাহে দুইদিন ১৫০ মিনিট মাঝারি বা ৭৫ মিনিট জোরালো ব্যায়ামের লক্ষ্য রাখুন। সক্রিয় থাকলে তা পরিপাকতন্ত্রের মাধ্যমে খাদ্যের উত্তরণকে উৎসাহিত করে, যা অন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়। ফলস্বরূপ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এটি এন্ডোরফিন, সেরোটোনিন, ডোপামিন এবং নরড্রেনালাইন বৃদ্ধি করে।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ