ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

গাঁজা ব্যবহারে নানা বিতর্ক 

প্রকাশনার সময়: ০৮ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:২৪

গাঁজা ব্যবহারের ফলে স্বাস্থ্যগত কী পরিবর্তন হয় তা নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। সম্প্রতি কানাডায় গাঁজার ব্যবহার বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেটি অনুসরণ করে অনেক দেশেই গাঁজাকে বৈধতা দেওয়ার কথা ভাবছে। তবে যুক্তরাজ্য তা মানতে নারাজ। তাদের দাবি, গাঁজা স্বাস্থ্যে জন্য ক্ষতিকর তাঁর বৈজ্ঞানিক প্রমাণ রয়েছে।

যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের মতে, নিয়মিত গাঁজার ব্যবহারে ব্রঙ্কাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তবে চিকিৎসা ক্ষেত্রে গাঁজার সুফলও রয়েছে। গাঁজা নিয়ে গবেষণায়, ভিন্ন ধরনের ফলাফল, ভিন্ন ধরণের সমাধানের ইঙ্গিত করে। তাহলে গাঁজা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী না ক্ষতিকর?

গাঁজার অপকারিতা

গাঁজা ব্যবহারের কারণে মানসিক ভারমুক্তি, প্রসন্নতা এবং ঘুমের অনুভূতি তৈরি হয়। এর কারণে অনেক সময় সন্দেহবাতিকতা, এমনকি দৃষ্টিভ্রমও হতে পারে বলে মনে করেন গবেষকরা।

অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, এর ফলে যে মোহাচ্ছন্ন ভাব তৈরি হয়, সেটিও কম ক্ষতিকর নয়। গাঁজার যেসব জাতে উচ্চ মাত্রায় চিত্ত প্রভাবক উপাদান টিএইচসি থাকে, সেসব জাতের নিয়মিত ব্যবহারে কিশোরদের মধ্যে মানসিক সমস্যা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

রয়েল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিস্টসের মতে, এর ফলে অতিরিক্ত উদ্বেগ ও মস্তিষ্ক বিকৃতির লক্ষ্মণ দেখা যায়। নিয়মিত গাঁজার ব্যবহার ছেড়ে দেয়ার পর তীব্র ইচ্ছা, ঘুমে ব্যাঘাত, আকস্মিক মেজাজ পরিবর্তন, বিরক্তি এবং অস্থিরতার মত উপসর্গ দেখা যেতে পারে ব্যক্তির মধ্যে।

কিংস কলেজ লন্ডনের ডাক্তার মার্তা ডি ফর্টি জানান, গাঁজার নিয়মিত ব্যবহারে কিশোরদের মধ্যে সিজোফ্রেনিয়া সহ নানা ধরণের মানসিক সমস্যা তৈরি হয়।

কিন্তু বর্তমান গবেষণায় প্রমাণিত হয়, গাঁজার ব্যবহার, বিশেষ করে নিয়মিত ব্যবহার, আসক্তি তৈরি করতে পারে। নিয়মিত গাঁজা ব্যবহারকারীদের অন্তত ১০%-এর মধ্যে গাঁজার ওপর নির্ভরতা তৈরি হয়। ব্যবহার ছেড়ে দিলে অনেকের মধ্যেই নানা ধরণের শারীরিক ও মানসিক উপসর্গ দেখা যায়।

প্রফেসর মর্গানের মতে, গাঁজা ব্যবহারের ফলে স্বল্প মেয়াদে স্মৃতিশক্তি এবং বোধশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর প্রভাব সামান্য এবং কম ক্ষতিকর হলেও ২০ দিন পর্যন্ত মানুষের শরীরকে তা প্রভাবিত করার সক্ষমতা রাখে।

সিগারেটকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিসাধক মাদক হিসেবে চিহ্নিত করেন প্রফেসর মর্গান। যারা গাঁজা ব্যবহার করে, তারা ভবিষ্যতে হার্ড ড্রাগ ব্যবহার করবে এমন কোন প্রমাণ নেই। তবে নিয়মিত গাঁজা ব্যবহারের ফলে সিগারেটের মত মাদক ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে উঠতে পারে।

গাঁজার উপকারিতা

বিনোদনমূলকভাবে গাঁজা ব্যবহার করা অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রেই মানসিক সমস্যা তৈরি হয় না। মানসিক সমস্যা তৈরি হওয়ার পেছনে ব্যক্তির জিনগত বৈশিষ্ট্য ভূমিকা পালন করে। বিনোদনমূলকভাবে গাঁজা ব্যবহার করে আসছেন এমন অনেক ব্যক্তিই বলেছেন যে গাঁজা ব্যবহারে তারা উপকৃত হয়েছেন।

কিছু গবেষণায় গাঁজা ব্যবহারের সঙ্গে বিষণ্ণতার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলেও গাঁজার সাথে মানসিক সমস্যার ততটা সরাসরি যোগসূত্র নেই।

নতুন এক গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে, গাঁজার দ্বারা চিকিৎসা দীর্ঘকালের স্থায়ী ব্যথা উপশম, বমি ভাব এবং অতিরিক্ত উদ্বেগ দূর করায় উপকারী। এছাড়া ঘুমের সমস্যা, ক্ষুধামন্দা, পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার এবং পার্কিনসনস রোগের উপশমের ক্ষেত্রে গাঁজার কার্যকারিতার কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে।

নয়াশতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ