দাঁতের যত্ন নিতে নিয়মিত টুথ ব্রাশ দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করা জরুরি। কিন্তু এই টুথ ব্রাশ যদি হয় জীবাণুর আখরা তাহলে তা দাঁতের যত্নের চেয়ে ক্ষতিই করে বেশি। বর্তমানে বেশিরভাগ বাসাতেই টুথ ব্রাশ ও পেস্ট বাথরুমে রাখা হয়। আর বাথরুমে টুথ ব্রাশ রাখার জন্য যে সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার তা অনেকেরই অজানা।
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাথরুমে রাখা টুথ ব্রাশে মলজনিত জীবাণু থাকার আশঙ্কা ৬০ শতাংশ।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মলের ভেতর থাকা জীবাণু বাতাসে অনেক ক্ষণ ভেসে থাকে এবং বাথরুমের বিভিন্ন জায়গায় আটকে যায়। টুথব্রাশ খোলা থাকলে মলের জীবানু বাতাসে ভাসতে ভাসতে ব্রাশে চলে আসে এবং আটকে যায়।
আবার টুথব্রাশ কভার দিয়ে ঢেকে রাখলে তাতে জীবাণু আরও সহজে বাসা বাঁধতে পারে। কারণ ব্রাশ করার পর সেটি কভার দিয়ে ঢেকে ফেলায় ব্রাশ শুকানোর সুযোগ পায় না। ভেজা অবস্থায় থাকার কারণে জীবানু আরও জাঁকিয়ে বসতে পারে। ঠান্ডা পানি,গরম পানি বা মাউথওয়াশ কোনও কিছুতেই জীবাণু মুক্ত হওয়া যায় না। তাই নিজের টুথব্রাশ বাথরুমের পরিবর্তে ঘরে রাখা । তা না হলে ডায়রিয়া, চামড়ায় ফুঁসকুড়ি, কানে সংক্রমণ-সহ নানা রোগব্যাধী শরীরে বাসা বাঁধতে পারে।
তবে একান্তই বাথরুমে রাখতে হলে বিশেষ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। যেমন-
কমোডের পাশে রাখবেন না কমোডের পাশে কখনো টুথব্রাশ রাখবেন না। এই স্থানে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। ফলে ব্রাশে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধতে পারে।
ঢাকনা লাগিয়ে রাখুন ব্রাশে ঢাকনা লাগিয়ে রাখলেও জীবাণুর বংশবৃদ্ধির আশঙ্কা বাড়ে। তবে ব্রাশের ঢাকনাও মাঝে মধ্যে পরিষ্কার করতে হবে।
একসঙ্গে একাধিক ব্রাশ রাখবেন না আবার একাধিক টুথব্রাশ একসঙ্গে রেখে দিলেও বিপদ হতে পারে। কারণ এক্ষেত্রে এক টুথব্রাশ থেকে অন্য টুথব্রাশে জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে।
ব্যবহারের আগে ভালো করে ধুয়ে নিন ব্যবহার করার আগে প্রথমে টুথব্রাশটি কলের পানিতে ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়া একটি ভালো অভ্যাস। এটি আপনার টুথব্রাশে লেগে থাকা দূষিত পদার্থগুলোকে অপসারণ করতে সাহায্য করতে পারে। ব্যবহার করার পরে আপনার টুথব্রাশটি একটি টুথব্রাশ হোল্ডার বা কাপে খাড়া করে রাখুন যাতে এটি বাতাসে শুকিয়ে যায়।
নিয়মিত টুথব্রাশ পরিবর্তন করুন আপনার টুথব্রাশ প্রতি তিন থেকে চার মাস পরপর বা তারও আগে পরিবর্তন করুন। নিয়মিত পরিবর্তনের পাশাপাশি ধূলিকণা, ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক এড়াতে নিয়মিত টুথব্রাশ রাখার পাত্রটিও পরিষ্কার রাখুন।
টয়লেটের ঢাকনা বন্ধ করে ফ্লাশ করুন ফ্লাশ করার আগে টয়লেটের ঢাকনা বন্ধ করা একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস যা বাথরুমে বায়ুবাহিত মল কণার বিস্তার কমাতে সাহায্য করে। ২০১২ সালে যুক্তরাজ্যের একটি গবেষণায় টয়লেটের ঢাকনা খোলা এবং বন্ধ করে পরীক্ষা করা হয়েছে। যখন টয়লেটের ঢাকনা খোলা রেখে ফ্লাশ করা হয়েছিল, তখন সিটের উপরে ২৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গিয়েছিল। গবেষকরা উল্লেখ করেছেন, ঢাকনা দিয়ে ফ্লাশ করার পরে সিটের উপরে বাতাসে কোনো ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়নি।
নয়া শতাব্দী/এসএম/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ