রাসুলুল্লাহ (সা.) আয়েশাকে (রা.) তার অন্য সকল স্ত্রীর তুলনায় বেশি ভালোবাসতেন। আমর ইবনুল আস (রা.) একবার রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন— হে আল্লাহর রাসুল, আপনার স্ত্রীদের মধ্যে আপনার কাছে সবচেয়ে প্রিয় কে? রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, আয়েশা।
তিনি দ্বিতীয়বার জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, পুরুষের মধ্যে সবচেয়ে আপনার প্রিয় ব্যক্তি কে? রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তার পিতা অর্থাৎ আবু বকর। আমর ইবনুল আস (রা.) তৃতীয়বার জিজ্ঞাসা করলেন, এর পরে (প্রিয় ব্যক্তি) কে? রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, উমর।
আয়েশা (রা.)-এর প্রতি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর এত ভালোবাসা থাকার পরেও অন্য স্ত্রীদের তাদের অধিকার থেকে বিন্দুমাত্র বঞ্চিত করেননি। সকল স্ত্রীর অধিকার যথাযথভাবে আদায় করেছেন, এমনকি স্ত্রীদের সঙ্গে রাত যাপনের ব্যাপারেও সমতা বজায় রেখেছেন।
অবশ্য স্বভাবগত ভালোবাসা মানুষের ইচ্ছাধীন নয়। এ জন্যে আল্লাহ তাআর কাছে রাসুলুল্লাহ (সা.) এই দোয়া করেছিলেন, ‘হে আল্লাহ, আমার ইচ্ছাধীন বিষয়গুলোর মধ্যে এই সুষম বণ্টন, (অর্থাৎ যে বিষয়গুলো আমার ইচ্ছাধীন সেগুলো আমি আমার স্ত্রীদের মধ্যে সমানভাবেই বণ্টন করে থাকি।) সুতরাং যে বিষয়গুলোর নিয়ন্ত্রণ বা কর্তৃত্ব একমাত্র আপনারই, যেগুলো আমার ইচ্ছাধীন নয়, অর্থাৎ সৃষ্টিগত বা স্বভাবগত ভালোবাসা ঐচ্ছিক নয়, এতে সমতা রক্ষা করা আমার ইচ্ছা ও নিয়ন্ত্রণ-বহির্ভূত।’
রাসুল (সা.)-কে আল্লাহ তাআলা শিক্ষক ও পথপ্রদর্শক হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছিলেন। এ জন্য আল্লাহ তাআলা তাঁর দ্বারা এমন সব কাজ করিয়েছেন, যাতে উম্মত সেগুলো পাথেয় হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। শরিয়তে একজন পুরুষের একত্রে চারজন স্ত্রী রাখার অনুমতি রয়েছে। যে উম্মতের ওপর আমল করবে (অর্থাৎ চার স্ত্রী রাখবে) তার জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পবিত্র দাম্পত্যজীবন হবে অনুসরণীয় ও অনুকরণীয়। একজন স্ত্রীর প্রতি স্বভাবগত ভালোবাসা বেশি হতে পারে। এ ব্যাপারে তাকে অভিযুক্ত করা হবে না। কেননা এটা তার ইচ্ছাধীন নয়। কিন্তু স্ত্রীদের হক আদায়ের ব্যাপারে সকলের প্রতি সমান দৃষ্টি রাখা ফরজ। এতে যদি কেউ ত্রুটি করে, তবে সে অবশ্যই অপরাধী বলে সাব্যস্ত হবে। এ জন্য তাকে জবাবদিহি করতে হবে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার দুজন স্ত্রী রয়েছে, সে যদি এ দুজনের মধ্যে সব ব্যাপারে সমতা রক্ষা না করে চলে, কেয়ামতের দিন তার এক পার্শ্ব বাঁকা অবস্থায় উঠানো হবে।’
নয়া শতাব্দী/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ