স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় নেওয়ার দাবি জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চাকরি প্রত্যাশির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২১ মার্চ) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্বরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে তারা এ দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘চলতি বছর প্রাথমিকে প্রায় ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাকে ঘিরে আমরা মনে স্বপ্ন গাঁথা শুরু করেছিলাম। কিন্তু বিভাগীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন চাকরি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা আমাদের সেই স্বপ্নকে ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়ার পথে। কারণ বিভিন্ন গণমাধ্যম মারফত জেনেছি প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা-২০২০ এর লিখিত পরীক্ষা আগামী এপ্রিল মাসে দেশের বিভিন্ন জেলায় অনুষ্ঠিত হবে। এটি জানার পর আমরা শিক্ষিত বেকাররা দিশেহারা হওয়ার পথে। অথচ এই নিয়োগ পরীক্ষাটি কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় নেয়া হবে বলে গত সপ্তাহে দেশের শীর্ষ গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত হয়েছিল।’
তিনি আরো বলেন, ‘জেলা পর্যায়ে নিয়োগ পরীক্ষাটি নেওয়ার খবর আমাদের চরমভাবে হতাশ করেছে। জেলা পর্যায়ে পরীক্ষা নেয়ার অতীত রেকর্ড ভালো নয়। বিগত সময়গুলোতে জেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস, প্রক্সিসহ নানা অনিয়ম ঘটেছে, যা আমরা গণমাধ্যমে দেখেছি। আমরা আশঙ্কা করছি, জেলা পর্যায়ে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে সেখানে ভয়াবহ দুর্নীতি হতে পারে। বাংলাদেশের ইতিহাসে ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগ একসঙ্গে অতীতে কখনো হয়নি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের সময় এমন একটি বড় নিয়োগ বেকারদের জন্য বড় একটি পাওয়া। যা বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষিত বেকার সমস্যা দূরকরণে সদূরপ্রসারী পদক্ষেপও বটে।’
তিনি বলেন, ‘একটি কুচক্রী ও স্বার্থান্বেষী মহল নিয়োগ পরীক্ষাটিতে জালিয়াতি করতে, দুর্নীতি করে নিজেদের আখের গোছাতে জেলা পর্যায়ে পরীক্ষাটি নেয়ার জন্য বেশ তৎপর হয়ে পড়েছে। তারা চায়, যেকোনো মূল্যে নিয়োগ পরীক্ষাটি জেলা পর্যায়ে নিতে। এতে করে তারা প্রশ্নপত্র ফাঁস বা কেন্দ্র দখল করে তাদের নির্ধারিত অযোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগের পথ সুগম করতে চায়। সেইসঙ্গে তারা নিয়োগকে বিতর্কিত করে শিক্ষিত বেকার যুবকদের উস্কে দিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে তৎপর। অথচ কেন্দ্রীয়ভাবে শুধু ঢাকায় পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হলে অন্য সকল চাকরি পরীক্ষার মতো প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাটিও কর্তৃপক্ষ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারবে।’
চাকরিপ্রত্যাশীরা প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর কাছে আসন্ন প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাটি কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় এবং দুর্নীতি ও অনিয়মের উর্ধ্বে রেখে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী নাফিসা আলম, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সমাজকর্ম বিভাগের সুবর্ণা রায়, কামাল হোসেন প্রমুখ।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ