ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬
আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের সতর্কতা

খাদ্যসংকটে পড়বে ৩৫ কোটি মানুষ

প্রকাশনার সময়: ১৫ অক্টোবর ২০২২, ০০:০৪
ছবি - সংগৃহীত

করোনা সংকট, জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বের ৩৫ কোটি মানুষ খাদ্য সংকটে পড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ। বিশ্বে নতুন করে দারিদ্র্যতার কাতারে শামিল হবে সাত কোটির বেশি মানুষ।

বিশ্বে ৪৮টি দেশের প্রায় ৪ কোটি মানুষ এখন আছে চরম খাদ্য সংকটে। আইএমএফ বলছে, এর মধ্যে কোস্টারিকা, বসনিয়া ও রুয়ান্ডার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। অনেক উন্নয়ন দেশও সংকটে পড়বে। এজন্য খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিসহ বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় এক যোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

(১৩ অক্টোবর) বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস ও আইএমএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা পৃথক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বে খাদ্যসংকটের বিষয়ে কথা বলেন।

গত জুন মাস থেকেই জাতিসংঘ বলে আসছে চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকেই বিশ্বে খাদ্যসংকট বাড়তে থাকবে। আর ২০২৩ সালে এ সংকট অনেক দেশে ছড়িয়ে পড়বে। এবার সেই সংকটকে আরও সুনির্দিষ্ট করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংক। সংস্থা দুটি বলছে, জ্বালানির চড়া দাম ও লাগামহীন মূল্যস্ফীতিতে সৃষ্টি হবে খাদ্যঘাটতি। এ সংকট থেকে মানুষকে বাঁচাতে সরকারগুলোকে সতর্ক হওয়ার তাগিদ তাদের।

গত ১০ অক্টোবর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে শুরু হওয়া বিশ্বব্যাংক গ্রুপ ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বার্ষিক সাধারণ সভায় এ খাদ্যসংকটের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। সাতদিনের এ বার্ষিক সভায় বিশ্ব মন্দা এবং খাদ্যসংকট আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু। বিশ্বের ১৯৩টি দেশের অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নররা এতে অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন দেশের নীতিনির্ধারক, বেসরকারি খাত ও সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞরা।

আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বলেন, করোনার পরপরই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, তার ওপর প্রতি মহাদেশে জলবায়ু দুর্যোগ মানুষের জীবনযাত্রাকে অসহনীয় করে তুলেছে। কেননা, এ সময় খাদ্যপণ্যের দাম বাড়লেও, বাড়েনি উপার্জন। আমরা দেখেছি তিন দেশের এরই মধ্যে ৪৫ মিলিয়ন মানুষ খাদ্য সংকটে। এ কারণে শিশু, নারী ও পুরুষরা মারা যেতে পারেন। এখন শক্তিশালী খাদ্য নিরাপত্তার বলয় নিয়ে ভাবতে হবে।

বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফ বলছে, বিশ্ব চরম খাদ্যসংকটের দিকে যাচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বাড়তে থাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে এ সংকট কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা বলা কঠিন। কোটি মানুষকে চরম খাদ্যসংকটের মধ্যে যেতে হবে। তবে এর থেকে উত্তরণের পথ রয়েছে।

বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট মনে করেন, আগামী বছরের বিশ্বে মহামন্দা দেখা দিতে পারে। মহামন্দার ফলে জ্বালানির চড়া দাম ও লাগামহীন মূল্যস্ফীতিতে খাদ্য ঘাটতি সৃষ্টি হবে। এবারের মন্দা উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ভয়াবহ হবে। এজন্য সংকট এড়াতে মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে হবে। বিশেষ করে মহামন্দায় গরিব মানুষকে নিয়ে শঙ্কার কথা বলেছেন বিশ্বব্যাংক প্রধান।

আইএমএফ প্রধান বলেছেন, জ্বালানি সংকট আগামী দিনের অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি ঠিক করবে। সংকট সামাল দিতে তাই মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতির সতর্ক সমন্বয়ের তাগিদ দেয়া হয়েছে।

নয়া শতাব্দী/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ