শোকে স্তব্ধ ব্রিটেন। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর খবরে যেন ভাষা হারিয়েছেন সবাই। যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি এই রানি স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ৯৬ বছর বয়সে মারা গেলেন।
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ যেন এক স্থায়ী নাম হয়ে গিয়েছিল। একটানা ৭০ বছরের শাসনামলে তো তাই হওয়ার কথা। এই দীর্ঘ সময়ে একমাত্র সিংহাসনে বসে থাকা ব্যক্তিটি তিনি। দীর্ঘ এই বর্ণিল জীবনে ব্রিটেনের সমাজ ও রাজনীতিতে অভাবনীয় পরিবর্তনের সাক্ষী তিনি।
একনজরে এলিজাবেথের বর্ণাঢ্য জীবন_
১৯২৬ সালের ২১ এপ্রিল লন্ডনের ১৭ ব্রুটন সেন্টে জন্মগ্রহণ করেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ। সেই বছরের ২৯ মে বাকিংহাম প্যালেসের ব্যক্তিগত চ্যাপেলে তার নামকরণ করা হয়।
চাচা অষ্টম এডওয়ার্ড ১৯৩৬ সালের ১১ ডিসেম্বর পদত্যাগ করলে এলিজাবেথের বাবা ষষ্ঠ জর্জ ব্রিটিশ সিংহাসনে বসে। ওই সময় এলিজাবেথের বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। সেসময় তার সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়।
১৯৪৭ সালের ২০ নভেম্বর গ্রীক যুবরাজ এবং নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ফিলিপ মাউন্টব্যাটেনের সঙ্গে লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে বিয়ে হয় এলিজাবেথের। এই দম্পতির চার সন্তান ছিল- প্রিন্স চার্লস (জন্ম ১৯৪৮), প্রিন্সেস অ্যান (১৯৫০), প্রিন্স অ্যান্ড্রু (১৯৬০) এবং প্রিন্স এডওয়ার্ড। (১৯৬৪)। ২০২১ সালের এপ্রিলে রানির স্বামী ফিলিপ ৯৯ বছর বয়সে মারা যান।
১৯৫২ সালে বাবার মৃত্যুর পর সিংহাসনে আরোহণ করেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ। ১৯৫৩ সালের ২ জুন ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে তার মাথায় রাজমুকুট পরানো হয়। এটি ছিল টেলিভিশনে প্রচারিত প্রথম রাজ্যাভিষেক। দীর্ঘ এই শাসনকালে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ১৫ জন প্রধানমন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
দ্বিতীয় এলিজাবেথ যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, জ্যামাইকা, অ্যান্টিগুয়া, বারমুডা, বাহামা, বেলিজ, গ্রেনাডা, পাপুয়া নিউ গিনি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্টসহ ১৫টি রাজ্যের রানি ছিলেন।
এদিকে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে ১০ দিনের শোক শোক ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য। এর মধ্যে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা, শ্রদ্ধাজ্ঞাপন, নিরবতা পালনসহ রয়েছে নানা আনুষ্ঠানিকতা। উইন্ডসর ক্যাসেলের সেন্ট জর্জ চ্যাপেলে শেষ বিদায় জানানোর পর নক্ষত্র রানীকে সমাধিস্ত করা হবে।
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ