চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে একটি গবেষণাগার রয়েছে, যার নাম উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি (ডব্লিউআইভি)। সেখানে অনিরাপদ পরিবেশে সার্স করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষণা দেখে দুই বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা উদ্বেগ জানিয়েছিল। সেই উহান থেকেই ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে নতুন একটি করোনাভাইরাসের মানবদেহে সংক্রমণ ঘটেছিল বলে এখন অবধি ধারণা করা হচ্ছে, যে জীবাণু বিশ্বে মহামারী বাঁধিয়ে আক্রান্ত করেছে কোটি কোটি মানুষকে, প্রাণ নিয়েছে প্রায় ৩৫ লাখ জনের।
উহানের ওই গবেষণাগারের নিরাপত্তার ফোঁকর গলেই কোনোভাবে নভেল করোনাভাইরাস ছড়ায় বলে শুরুতে অনেকে দাবি তুলেছিলেন। তখন চীনের রাখঢাক নানা সন্দেহের উদ্রেকও ঘটিয়েছিল।
তবে চীনের প্রত্যাখ্যান ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তদন্তের পর তা মিইয়ে এলেও দেড় বছর পর আবার আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে উহান। এখন কেননা অ্যান্থনি ফাউচির মতো খ্যাতিমান সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞরাও উহানের ল্যাবতত্ত্ব একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
উহানে করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্তের আগেই সেখানকার গবেষণাগারের কয়েকজন অসুস্থ হয়েছিলেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর ল্যাবতত্ত্বের পালে আবার হাওয়া লাগে।
আর বিষয়টি কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, তা বোঝা গেল যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এক নির্দেশে।
চীনের উহানের গবেষণাগার থেকেই করোনাভাইরাস ছড়িয়েছিল কি না, তা ৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে গোয়েন্দা সংস্থাকে তিনি বলেছেন বলে রয়টার্স জানিয়েছে। যদিও চীন বরাবরই গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর তত্ত্ব প্রত্যাখ্যান করে আসছে। দেড় বছর আগে উহানের গবেষণাগারের কর্মীদের অসুস্থ হওয়ার খবরও অস্বীকার করেছে দেশটি।
নতুন কী পাওয়া গেল?যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের খবর প্রকাশের এক মাস আগে ২০১৯ সালের নভেম্বরে উহানের গবেষণাগারের কয়েকজন গবেষক অসুস্থ হয়েছিলেন এবং তাদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল।
তারা কি নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন কি না, তা নিশ্চিত হয়নি প্রতিবেদনে। আর চীন তো একে ভিত্তিহীন বলেই উড়িয়ে দিচ্ছে।
করোনাভাইরাস এবং বাদুড়ের মাধ্যমে এর সংক্রমণ নিয়ে গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্র অর্থ সহায়তা দেয়, আর সেই তহবিলের একটি অংশ উহানের এই গবেষণাগারও পায়।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে উহানের ওই গবেষণাগার পরিদর্শন করে আসা যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ওয়াশিংটনে পাঠানো ‘স্পর্শকাতর’ তারবার্তায় সেখানে অনিরাপদ পরিবেশে গবেষণা চলার কথা বলেছিলেন।
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ