মুসলিমদের পবিত্র দুই মসজিদ। মক্কার মসজিদ আল হারাম ও মদিনার মসজিদে নববী পরিচালনা পর্ষদের ঘোষণা অনুযায়ী আজ শনিবার (৩০ জুলাই) মক্কায় কাবার গিলাফ পরিবর্তন করা হচ্ছে।
এতোদিন এটি ঈদ উল আযহার আগে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা অর্থাৎ আরাফাতের ময়দানে সমবেত হওয়ার দিন করা হতো। কিন্তু এবার হজের সময়ে ঐতিহ্য অনুযায়ী অর্থাৎ নয় জিলহজ তারিখে গিলাফ পরিবর্তন করা হয়নি।
ঢাকায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মো. আবু ছালেহ পাটোয়ারি বলছেন, এবার রেওয়াজের ব্যতিক্রম করা হচ্ছে কারণ সেদেশের সরকার হিজরি সনকে গুরুত্ব দিয়ে গিলাফ পরিবর্তন করার কথা বলেছে। হজের মূল আনুষ্ঠানিকতার দিনই হাজিদের উপস্থিতিতে গিলাফ পরিবর্তন করাটাই ছিলো দীর্ঘকালের রেওয়াজ।
তিনি বলেন, হজের সময় নতুন গিলাফ দেওয়ার পর পুরনো গিলাফ সাধারণত মুসলিম দেশের সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান কিংবা বিভিন্ন মুসলিম দেশের মসজিদকে উপহার হিসেবে দিয়ে সম্মানিত করা হতো। এবার কি করা হবে জানিনা। কারণ বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত কোনো কিছু মুসলিম বিশ্বকে জানানো হয়নি।
সৌদি প্রবাসী সাংবাদিক রুমী সাঈদ বলছেন, পহেলা মুহররমে গিলাফ পরিবর্তনের ঘোষণা সরকারি ওয়েবসাইটে বিশেষ করে দুই প্রধান মসজিদের পরিচালনা কর্তৃপক্ষ পহেলা মুহররমে গিলাফ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত চলতি মাসের শুরুতেই জানিয়ে দিয়েছিলো।
সৌদি পত্রিকা আরব নিউজের খবর অনুযায়ী, কাবার গিলাফ এবারের ঈদ উল আযহার প্রথম দিনেই দুই পবিত্র মসজিদের পরিচালনা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এই কর্তৃপক্ষের প্রধান শেষ আব্দুল রহমান আল সুদাইসের নেতৃত্বে দেড়শরও বেশি ব্যক্তি গিলাফ পরিবর্তনের কাজে অংশ নেওয়ার কথা। এই গিলাফ হলো একটি বস্ত্র খণ্ড। দ্য কিং আবদুল আজিজ কমপ্লেক্স ফর ম্যানুফ্যাকচারিং দ্য কাবা কিসওয়া' কাবার গিলাফ প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠান।
১৯২৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এক লাখ বর্গমিটারের এই কমপ্লেক্স একসময় 'কিসওয়া ফ্যাক্টরি' নামে পরিচিত ছিল। পরে ২০১৭ সালে রাজকীয় ডিক্রির মাধ্যমে এই নাম পরিবর্তন করে কমপ্লেক্সটির ব্যাপক পরিবর্তন করা হয়।
৬৫৮ বর্গমিটারের গিলাফটি তৈরিতে ৬৭০ কেজি কালো রেশম ব্যবহার করা হয়। ৪৭টি কাপড়ের টুকরোকে বিশেষ মেশিনে সেলাই করা হয়। এরপর কালো গিলাফের গায়ে মেশিনের ছাপ দিয়ে লেখা হয় আল্লাহর নাম ও গুণাবলি।
আরব নিউজের তথ্য অনুযায়ী, এরপর গিলাফটি গিল্ডিং অ্যান্ড এমব্রয়ডারি বিভাগে যায়। সেখানেই ক্যালিগ্রাফির ও শিল্পীরা গিলাফের চারদিকের সোনালি বেল্ট ও কাবার দরজার পর্দা তৈরি করেন।
তেইশ থেকে ষাট বছর বয়সী পঞ্চাশ জনের বেশি দক্ষ শিল্পী তাতে কোরআনের আয়াত ও অন্যান্য দোয়া এমব্রয়ডারি করেন। এ কাজে একশ কেজি খাঁটি রুপা এবং ১২০ কেজি সোনার প্রলেপযুক্ত রৌপ্য সুতা ব্যবহৃত হয়। গিলাফে আরবি ভাষায় 'মক্কা আল-মুকাররম', চলতি সন এবং সৌদি বাদশাহর নাম যুক্ত করা হয়।-বিবিসি
নয়া শতাব্দী/এফআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ