ঢাকা, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

পশ্চিমবঙ্গের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি গ্রেফতার

প্রকাশনার সময়: ২৩ জুলাই ২০২২, ১২:৫৭

স্কুল শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা পার্থ চ্যাটার্জিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

শনিবার বেলা ১০ টার দিকে তাকে কলকাতার নাকতলা এলাকার নিজ বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে ভারতের অর্থনৈতিক গোয়েন্দা ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট (ইডি)।

এর আগে, শুক্রবার (২২ জুলাই) আচমকাই নাকতলায় শিল্পমন্ত্রী তথা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জির বাড়িতে হানা দেয় ইডির দল। এর পর সময় যত গড়িয়েছে, ততই নাটকীয় মোড় নিয়েছে ঘটনাপ্রবাহ। রাত পেরিয়ে ভোর হয়েছে। কিন্তু জেরা থামায়নি ইডি।

জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়বস্তু ছিল গত রাজ্য সরকারের আমলে পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি। বিগত সরকারে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের এই জ্যেষ্ঠ নেতা। বর্তমান সরকারে রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সামলাচ্ছেন তিনি।

প্রায় ২৭ ঘণ্টা নাকতলার ওই বাসভাবনে জিজ্ঞাসাবাদের পর শনিবার গ্রেফতার করা হয় পার্থ চ্যাটার্জিকে। মন্ত্রীর বাসভবনের একটি সূত্র জানিয়েছে, টানা জিজ্ঞাসাবাদের মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন পার্থ। এ কারণে দু’বার তার বাড়িতেও গিয়েছেন কয়েকজন চিকিৎসক; কিন্তু তাতেও ইডির প্রশ্ন-পর্ব থামেনি।

অ্যাপার্টমেন্টে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে নগদ ২১ কোটি রুপি, ২০টি মোবাইল ফোন ও ৫০ লাখ রুপির স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করে ইডি। এত অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার কোথা থেকে এল, তার কোনো সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন ইডির এক কর্মকর্তা।

ইডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অর্পিতার অ্যাপার্টমেন্টে তল্লাশি চালিয়ে দু’টি বস্তা উদ্ধার করেছেন তারা। সেই দু’টি বস্তা ভর্তি ছিল ২০০০ এবং ৫০০ টাকার নোটের বান্ডিল। উদ্ধার করা নগদ অর্থ ব্যাংককর্মীদের দিয়ে যন্ত্রের সাহায্যে শনিবার সকাল পর্যন্ত গোনার কাজ চলেছে। ইডি সূত্রের খবর, ওই টাকা স্কুলে বেআইনি নিয়োগে নেওয়া ঘুষের অংশ বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে করছে তারা।

শনিবার পার্থকে গ্রেফতারের পর অর্পিতাকেও গ্রেফতার করা হয়।

ইডির দাবি,পশ্চিমবঙ্গ হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জিত কুমার বাগের নেতৃত্বাধীন কমিটির রিপোর্টে ও সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে রাজ্যের শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন জানিয়েছেন, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশেই রাজ্যের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তিনিই নিয়োগের ক্ষেত্রে মূল নিয়ন্ত্রক ছিলেন।

প্রাথমিক ভাবে নথি সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ করে তা যাচাই করা হয় বলে জানিয়েছে ইডি সূত্র। কোনও রকম তলবি নোটিস ছাড়াই শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটায় পার্থকে ঘুম থেকে তুলে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তদন্তকারীরা। নাকতলার বাড়িতে পৌঁছনোর পরেই মন্ত্রীর নিরাপত্তারক্ষী ও দেহরক্ষীদের মোবাইল বন্ধ করার নির্দেশ দেন তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রের দাবি, একই নির্দেশ দেওয়া হয় পার্থকেও। দুপুরে দু’জন আইনজীবীকে বাড়িতে ডেকে পাঠান পার্থ। তবে সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে তাদের হাজির থাকার অনুমতি দেননি তদন্তকারীরা।

ইডি সূত্র জানাচ্ছে, দুপুরে পুলিশের সঙ্গে এসে পার্থের পারিবারিক চিকিৎসক তদন্তকারীদের সামনেই তার শারীরিক পরীক্ষা করেন। পরে এসএসকেএম থেকে তিন জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও মন্ত্রীকে দেখে যান। তার পরেও চলে জিজ্ঞাসাবাদ।

নয়া শতাব্দী/ এডি

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ