প্রায় ২৬ বছর আগে সবজির দোকানটা করেছিলেন মলির স্বামী। ১৮ বছর আগে তিনি মারা যান। স্বামী ছিলেন শ্রমিক। স্ত্রী চালাতেন সবজির দোকান। সেই সবজি বেচেই গত ১০ বছরে ১১ টি দেশে ঘুরে বেরিয়েছেন তিনি। চষে বেড়িয়েছেন ইংল্যান্ড, ইতালির মতো ইউরোপের ধনী দেশগুলো। সুদূর আমেরিকা ও কানাডাও ভ্রমণ করেছেন।
বিদেশ ভ্রমণ করতে হলে আগে কাড়ি কাড়ি টাকা উপার্জন করতে হবে। বড় কোম্পানির বড় কর্মকর্তা হতে হবে। নয়তো বড় মাপের ব্যবসায়ী হতে হবে। এমন ধারণাকে মিথ্যা প্রমাণিত করলেন পাড়ার গলির মোড়ের এক সাধারণ সবজির দোকানি।
তিনি ভারতের কেরালা রাজ্যের এর্নাকুলামের বাসিন্দা। বর্তমানে তার বয়স ৬১।
গত ২৬ বছর ধরে এর্নাকুলামে সবজি বেচেন মলি। প্রতিদিন সবজি বিক্রি করে যা উপার্জন করেন তার থেকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বাঁচিয়ে রাখেন। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ জমলেই নতুন কোনো গন্তব্যের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েন।
সকালে তার দোকান বন্ধ দেখলেই ক্রেতারা বুঝে ফেলেন দেশে আর নেই মলি। এভাবে গত ১০ বছরে ভারতের বিভিন্ন জায়গা তো ঘুরেছেন, ১১টি দেশও চষে ফেলেছেন এই সবজি বিক্রেতা।
ভ্রমণপিপাসু হলেন কবে থেকে প্রশ্নে মলি জানান, ১১ বছর আগে এক প্রতিবেশী বেড়াতে যাওয়ার সময় মলিকে জিজ্ঞেস করেন ‘একা মানুষ কোথাও বের হও না? যাবে?’ এক কথায় রাজি হয়ে যান মলি। সেই তার প্রথম বেড়াতে যাওয়া। এরপর নতুন নতুন জায়গায় যাওয়া তার নেশায় পরিণত হয়।
মলি বলেন, ‘দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। তার পর বাবা-মা বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন। শখ বলতে তো কিছুই ছিল না। পরে ভ্রমণটা শখ ও নেশায় পরিণত হয়।’
১৫ দিনের সফরে ব্রিটেন গিয়েছিলেন মলি। লন্ডন শহরটাকে তার খুব ভালো লেগেছে। আমস্টারডাম, রোমও দারুণ। সেখানে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ভুলবেন না কখনও।
তবে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে কোনটি দেখতে? প্যারিসের আইফেল টাওয়ার? লন্ডন ব্রিজ, রোমের কলোসিয়াম?
একবাক্যে মলির উত্তর, ‘দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নায়াগ্রা জলপ্রপাত দেখা। সেটাই সেরা মুহূর্ত আমার কাছে।’ সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ