মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির জ্যেষ্ঠ দুই নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের নিন্দা জানিয়ে প্রস্তাব পাস করেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা।
মঙ্গলবার (২১ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম। এর আগে, সোমবার (২০ জুন) রাজ্যটির বিধানসভায় এই প্রস্তাব পেশ করেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা সম্প্রীতি বজায় রাখার লক্ষ্যে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছি। কিন্তু সারা দেশে যেভাবে সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা হয়েছে, তা আসলে মূল বিষয় কর্মসংস্থান ও উন্নয়ন থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা। ধর্মের নামে, বিজেপির এক মুখপাত্রের মন্তব্যের জেরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা চলছে। এ ধরনের মন্তব্য করা এবং তাকে ঘিরে উসকানি দেওয়ার চেষ্টার বিরুদ্ধে অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।’
এরপর মুখ্যমন্ত্রী সকলের কাছে আবেদন করে বলেন, আপনারা সকলে হাত তুলে পার্থদার প্রস্তাব সমর্থন করুন। পরে তা গৃহীত হয়েছে।
বেঙ্গল ইমাম এসোসিয়েশনের প্রধান মুহাম্মদ ইয়াহিয়া বিজেপি থেকে সাসপেন্ড হওয়ায় নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে রাজ্য বিধানসভায় প্রস্তাব পাসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
তিনি এক ভিডিও বার্তায় এ ব্যাপারে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সারা দেশের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী যিনি প্রতিবাদ জানিয়ে টুইটারে টুইট করেছিলেন। এবার বিধানসভায় নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাসের ঘটনাকে ঐতিহাসিক ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন।
সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, বিধানসভার অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমার রাজ্যে সাড়ে তিন কোটি মুসলিম রয়েছেন। হাওড়া, রেজিনগর ও নদিয়ায়, শুধু এই তিনটি জায়গায় গন্ডগোল হয়েছে। তবে এটিও হওয়া উচিত হয়নি। আমি এদের অ্যারেস্ট করেছি। ওখানে এখনও অ্যারেস্ট করা হল না কেন?’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘কিছু নেতাদের বক্তব্যকে একেবারেই সমর্থন করি না। লোকসভা নির্বাচনের আগে কিছু সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘৃণা ছড়ানোর জন্য এগুলো একটি বৃহত্তর নকশার অংশ ছিল।’
এদিন বিরোধী দল বিজেপি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করে।
নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে কোলকাতার নারকেলডাঙা থানায় এফআইআর দায়ের হয়েছে। এফআইআর অনুযায়ী ২০ জুনের মধ্যে তাকে হাজিরা দিতে হতো। কিন্তু হাজিরা দিতে পৌঁছননি নূপুর। কোলকাতায় প্রাণের আশঙ্কা থাকার দাবি করে ৪ সপ্তাহ সময় চেয়েছেন তিনি। ইমেল পাঠিয়ে তিনি জানান, সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত, চার সপ্তাহ সময় দেওয়া হোক।
নয়া শতাব্দী/ এডি
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ